চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রামকে গ্রীন ও ক্লীন সিটিতে রূপান্তর করতে নিয়মিত কর পরিশোধ করুন। জনগণকে করের অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দিতে চাই না, বরং করদাতাদের জন্য স্বস্তিদায়ক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চাই। জনগণের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি তারা যাতে সময়মত ট্যাক্সগুলো দিয়ে দেয়। কারণ হোল্ডিং ট্যাক্স যদি আমরা ঠিকমত পেয়ে থাকি তাহলে আমরা শহরকে সুন্দর করতে পারব।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) নগরবাসীর কর প্রদান সহজতর করতে নগরীর ওয়াসা মোড়ে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের নীচ তলায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে আয়োজিত কর মেলা-২০২৫ এ কথা বলেন তিনি।
কর মেলায় হোল্ডিং কর, ই-ট্রেড লাইসেন্স’র শতভাগ সারচার্জ মওকুফ, আপিল শুনানি এবং বিভিন্ন তথ্য প্রদানের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। জনগণ যাতে সহজে কর পরিশোধ করতে পারে, সেজন্য দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
এ সময় মেয়র আরও বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার লক্ষ্যে আমরা বিভিন্নভাবে আমরা কর আদায় বাড়ানোর চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যেই বন্দরকে আমরা চিঠি লিখেছি। আমাদের যে ন্যায্য কর তা যাতে আমাদের দেওয়া হয়। সড়কে বন্দরে পণ্য পরিবহণকারী ৭০-৮০ টনের যান চলাচল করায় রাস্তা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অথচ, শহরের অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত অর্থনৈতিক সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের রাস্তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তার বিপরীতে তাদের কাছ থেকে যথাযথ কর আদায় করা সময়ের দাবি। এছাড়া বিভিন্ন সংস্থা এখনো যারা কর দিচ্ছে না আমরা তাদেরকেও আহ্বান জানাচ্ছি। বিভিন্ন জায়গায় সরকারি অনেক কর বাকি আছে তাদেরকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি সময়মত কর প্রদান করে সহযোগিতা করুন। আমরা আপনাদেরকে ডিসকাউন্ট করার চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা জনগণের সহায়ক হিসেবে কাজ করতে চাই। জনগণের উপর কোন করের বোঝা আমরা চাপিয়ে দিতে চাই না। আমার করদাতা ভাইয়েরা যাতে স্বস্তিদায়ক অবস্থায় করগুলো দিতে পারে সে ব্যবস্থা আমরা করে দিব। ইনশাআল্লাহ। তবে এর মধ্যে যাদেরগুলো নিষ্পত্তি হয়ে গেছে সেগুলো আর কিছু করার থাকবে না। যেহেতু এটা মিউচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। সেগুলো আমাদের কিছু করার নাই। কিন্তু নিষ্পত্তি যেগুলো এখনো হয়নি সেগুলো ইনশাআল্লাহ আমরা আপনাদের স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আপনাদের উপর করের বোঝা না চাপিয়ে আপনারা যাতে এই করগুলো সহজভাবে দিতে পারেন এই ব্যবস্থা করে দিব। আমরা চাই, আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শহরকে আরও সুন্দর ও উন্নত করে তুলতে। বর্তমানে, আমরা শহরের শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়নের জন্য ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছি। আশা করি, আমাদের করগুলো সময়মত প্রদান করলে, ভবিষ্যতে এই খাতগুলোতে আরো বেশি পরিমাণে বাজেট প্রদান সম্ভব হবে। এর পাশাপাশি, শহরের রাস্তাঘাটের উন্নয়ন এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্যও পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ করা হবে, যাতে জনগণের জীবনযাত্রা আরও সুগম এবং উন্নত হয়। কাজেই আমি মনে করি এই কর আপনাদের জন্যই কাজেই আপনারা কর দিন শহরকে সুন্দর করুন। শহরকে আরও সুন্দর ও আধুনিক করতে ট্রেড-লাইসেন্স অটোমেশনের আওতায় অনেকটা এসে গেছে। শীঘ্রই হোল্ডিং ট্যাক্স অনলাইনে পরিশোধের সুবিধা চালু করা হবে, যাতে নাগরিকরা হয়রানিমুক্তভাবে কর প্রদান করতে পারেন।
চসিক মেয়র বলেন, এখনোও যদি কোন কর্মকর্তা আপনাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত কিছু করতে চায় আমাদেরকে জানাবেন। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে কোন ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা একটা সুন্দর সংস্কৃতি চালু করতে চাই। দুর্নীতিবিহীন সুন্দর একটি সমাজ শহর আমরা বিনির্মাণ করতে চাই।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে আয়োজিত এ মেলায় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাব্বির রহমান সানিসহ রাজস্ব বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
মেলায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব সার্কেল-০১ ও রাজস্ব সার্কেল-০৫-এর আওতাধীন এলাকাবাসীর করদাতারা ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন, হোল্ডিং কর পরিশোধসহ বিভিন্ন সেবার সুবিধা গ্রহণ করেন।
সার্কেল-০১ এর আওতাধীন ওয়ার্ডসমূহ ১নং দক্ষিণ পাহাড়তলী, ২নং জালালাবাদ, ৩নং পাঁচলাইশ, ৭নং পশ্চিম ষোলশহর, ৮নং শুলকবহর এবং রাজস্ব সার্কেল-০৫ এর আওতাধীন ওয়ার্ডসমূহ হল ১৪নং লালখান বাজার, ১৫নং বাগমনিরাম, ২১নং জামালখান, ২২নং এনায়েত বাজার, ২৩নং উত্তর পাঠানটুলী, ২৮নং পাঠানটুলী।
আমার বার্তা/এমই