দুপুরের কড়া রোদে দাঁড়ানো দুই যুবক। হাতে সময় কয়েক ঘণ্টা। রাতের মধ্যে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে না পারলে, ভেঙে যাবে প্রবাস যাত্রার স্বপ্ন। বগুড়ায় ঈদুল আজহার ছুটিতে নিজ গ্রামে এসেছিলেন মালয়েশিয়াতে কর্মরত সুরুজ জামান ও জহুরুল ইসলাম।
হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন দুজন। তবে বিপত্তি বাধে ঠনঠনিয়া বাস কাউন্টারে এসে। ফিরতি পথে ঈদযাত্রায় বাড়তি চাপ থাকায়, ঢাকাগামী কোনো বাসেরই টিকিট নেই!
সে-সময়, বাড়তি ভাড়া আদায় বন্ধে অভিযান চালাচ্ছিল সেনাবাহিনীর একটি দল। সাহায্যের আশায় তাদের শরণাপন্ন হন দুই প্রবাসী। ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে আসেন সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট আল ফাহাদ। টিআর ট্রাভেলস পরিবহনের সঙ্গে আলাপ করে দুপুর ১টা ও ২টার বাসে দুই প্রবাসীর ঢাকা যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন।
দ্রুত সময়ে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে প্রবাসযাত্রা নিশ্চিত হওয়ায় আবেগআপ্লুত হয়ে পড়েন প্রবাসী সুরুজ ও জহুরুল। ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সুরুজ রাত ১১ টার ফ্লাইটে ও জহুরুল ভোর ৬ টার ফ্লাইটে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। তারা দুজনই বগুড়ার শাজাহানপুরের বাসিন্দা।
প্রবাসী সুরুজ জামান বলেন, ‘সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ না করলে কোন বিপদে পড়তাম জানি না। উনাদের পদক্ষেপে ঢাকা যাওয়াটা নিশ্চিত করতে পারছি। এখনই রওনা না করলে পারলে বিপদে পড়ে যেতাম।’
আরেক প্রবাসী জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘টিকিটের বাড়তি চাপ থাকায় কোনোভানেই ম্যানেজ করা সম্ভব হচ্ছিল না। সেনাবাহিনী ব্যবস্থা না নিলে হয়তো মালেশিয়ায় ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়তো।’
টিআর ট্রাভেলসের কাউন্টার ব্যবস্থাপক মাহামুদুল করিম তানসেন বলেন, ‘আগামীতেও প্রবাসীদের যাত্রা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করব। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানোর সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিক উনাদের ঢাকা যাওয়া নিশ্চিত করা হয়েছে।’
দূর দেশে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে লাল-সবুজের অর্থনীতি সচল রাখে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এবার তাদের প্রবাস যাত্রা নিশ্চিত করে সাধারণ মানুষদের প্রশংসায় ভাসছেন লাল-সবুজের সার্বভৌমত্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
আমার বার্তা/এল/এমই