ইসরাইল-ইরান সংঘাতে এখন পর্যন্ত জ্বালানি তেল উৎপাদনে কোন ব্যাঘাত ঘটেনি। তবে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে এই সংঘাত ছড়িয়ে পড়া ও জ্বালানি পরিবহন ব্যাহত হওয়ার শঙ্কায় দাম আরও বাড়তে পারে।
শিল্প সংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে বিশ্ব জ্বালানি পরিস্থিতির এমন খবর দিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ইসরাইল ও ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলার পর বিশ্ববাজারে বাড়ছে তেলের দাম। মঙ্গলবারও (১৭ জুন) ছিল ঊর্ধ্বমুখী। এদিন সকালে ২ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। পরে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৭৪ ডলার ২২ সেন্ট ও মার্কিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের দাম ৭২ ডলার ৬১ সেন্ট হয়।
তেল উৎপাদনকারী অঞ্চল মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে সংঘাতের উত্তেজনা ছড়িয়ে পরার শঙ্কা এবং জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকির বিষয়টি সামনে রেখে দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। পাশাপাশি অনিশ্চিয়তা সামনে রেখে দাম আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
শিল্পখাতের এক সূত্রের বরাতে রয়টার্স বলছে, চলমান সংঘর্ষের ফলে তেল উৎপাদনে কোনো ক্ষতি হয়নি। এখনও ওপেকভুক্ত দেশগুলোর অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে। ইরান-ইসরাইল উভয়েই একে অপরের জ্বালানি অবকাঠামোতে বিমান হামলা চালালেও প্রধান তেল রফতানির কেন্দ্রগুলোতে আঘাত হানেনি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইল এখনও ইরানের খার্গ দ্বীপের জ্বালানি তেলের স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেনি। তেল আবিব যদি সেখানে হামলা করে, সেক্ষেত্রে তেলের দাম এক লাফে ব্যারেল প্রতি ৯০ ডলারে উঠতে পারে। তারা আরও জানাচ্ছেন, রাজস্ব আয় হ্রাস পাওয়ার কথা মাথায় রেখে এখনো ইরান হরমুজ প্রণালী দিয়ে জাহাজ চলাচল ব্যাহত করার পদক্ষেপ নেয়নি।
টালমাটাল সময়েই মঙ্গলবার ভোরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের জলসীমায় দুইটি ট্যাঙ্কারের সংঘর্ষে আগুন লেগে যায়। এতে জ্বালানি সরববাহকারী সংস্থাগুলোর ঝুঁকি বেড়ে গেছে। এদিকে, ইরান-ইসরাইল সংঘাতের পর থেকে হরমুজ প্রণালী এবং বৃহত্তর উপসাগরীয় অঞ্চলে চলাচল করা বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর নেভিগেশন সিস্টেমে ইলেকট্রনিক হস্তক্ষেপ বেড়েছে। এতে জলযানগুলোর ওপর প্রভাব পড়তে পারে।
ওপেকভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ইরান তৃতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ। এর উৎপাদন ব্যাহত হলে কিংবা হরমুজ প্রণালীতে জাহাজ চলাচল বন্ধ হলে বৈশ্বিক তেলের বাজারে, আরও বড় ধরনের প্রভাব পড়বে তাতে সন্দেহ নেই। প্রণালিটি দিয়ে দৈনিক গড়ে বিশ্বের ২০ শতাংশ জ্বালানি পরিবহন হয়ে থাকে।
আমার বার্তা/এল/এমই