রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) আইনে ছাত্রসংসদ সংযুক্তকরণ ও দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে আমরণ অনশন করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবির সাথে সংহতি জানিয়েছে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন।
যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. শওকত আলী জানিয়েছেন নভেম্বরে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে।
রোববার (১৭ আগস্ট) বিকেলে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করে একাত্মতা প্রকাশ করেন শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক আল আমিন বলেন, ছাত্রসংসদের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা শুরু থেকেই সংহতি জানিয়ে আসছি। কোনো ছাত্রসংগঠন যদি চাঁদাবাজি, সিট বাণিজ্য কিংবা র্যাগিংয়ে জড়ায়, তা প্রতিরোধের একমাত্র প্ল্যাটফর্ম হলো ছাত্রসংসদ। আমরা চাই অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্রসংসদের বিধান যুক্ত করে পূর্ণাঙ্গ রোডম্যাপ ঘোষণা করা হোক।
সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে শাখা ইসলামি ছাত্রশিবির ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে অনশনে সংহতি জানায়। এসময় তাদের স্লোগান দিতে শোনা যায়— ‘ছাত্রসংসদ ছাড়া ক্যাম্পাস, চলবে না চলবে না’, ‘দিতে হবে দিতে হবে, ছাত্রসংসদ দিতে হবে’।
শাখা ছাত্রশিবির নেতা আহমাদুল হক আলভি বলেন, যারা এখানে অনশনে বসেছেন তাদের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। ছাত্রসংসদ আমাদের অধিকার। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আমরা দেখেছি ছাত্রলীগ কিভাবে ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। আর কোনো শক্তি যেন ফ্যাসিবাদের চর্চা না করতে পারে তার জন্য ছাত্রসংসদ বাস্তবায়নই একমাত্র পথ।
অনশনের সঙ্গে সহমত জানিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাজিম উল হক বলেন, ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা যে বিজয় অর্জন করেছি, তা পূর্ণতা পাবে ছাত্রসংসদ বাস্তবায়নের মাধ্যমে। ছাত্রসংসদ আমাদের প্রাণের দাবি। কিন্তু প্রশাসন এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা আর আশ্বাস চাই না, আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ছাত্রসংসদ নির্বাচনই আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য।
জুলাই আন্দোলনের সংগঠক শাহারিয়ার সোহাগ বলেন, ছাত্রসংসদ গণতন্ত্র চর্চার এক সুগম পথ। এই দাবিতে আমরা দীর্ঘদিন রাজপথে ছিলাম। আজ আমার ভাইয়েরা অনশনে বসেছে, আমি তাদের সঙ্গে পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করছি।
এর আগে রোববার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনশনে বসেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে জুলাই বিপ্লবে শহীদ আবু সাঈদের বড়ভাই আবু হোসাইন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, আমার ছোট ভাই আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল। তার আত্মত্যাগ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছিল জুলাই বিপ্লবে রাজপথে নামতে। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রসংসদ আইনে সংযুক্ত করার দাবিতে আন্দোলন করছে। আশানুরূপ ফল না পেয়ে আজ তারা আমরণ অনশনে বসেছে। তাদের এই যৌক্তিক দাবির প্রতি আমি পূর্ণ সংহতি জানাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ইউজিসির দায়িত্বশীলরা যেন দ্রুত শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির সুষ্ঠু সমাধান করেন।
আমার বার্তা/এল/এমই