ই-পেপার সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১

এল নিনোর প্রভাবে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি

আফ্রিয়া অলিন:
২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:৩৪

চৈত্রের শুরুতেই ক্রমশ বাড়ছে উষ্ণতার পারদ। অতিরিক্ত গরমে হাঁসফাঁস করছে জনজীবন। জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন সাধনের ফলে বিশ্ব ব্যাপী দেখা দিয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

২০২৩ সালেই বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন ২০২৪ সাল হবে পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণতম বছর। যার প্রভাব ইতোমধ্যেই লক্ষণীয়। ২০২৪ সালে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে দেখা দিয়েছে হিট ওয়েভ বা তীব্র তাপদাহ। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্য বা মরুভূমির দেশগুলোতে দেখা দিয়েছে প্রবল বৃষ্টি ও বন্যা। যা মূলত এল নিনো ও লা নিনা কে নির্দেশ করে।

এল নিনো একটি জলবায়ু প্যাটার্ন। যা মধ্য ও পূর্ব নিরক্ষীয় প্রশান্ত মহাসাগরে ঘটে। “এল নিনো” হচ্ছে একটি স্প্যানিশ শব্দ, যার অর্থ “বালক”। এটি মূলত “যীশুর ছেলে” বলে, নির্দেশ করা হতো। পেরুর এক জেলে প্রথম এল নিনো আবিষ্কার করেন। তিনি লক্ষ করেন সমুদ্রের এক অংশের পানি গরম থেকে ঠান্ডা এবং ঠান্ডা থেকে গরম অনুভব হয়।

এল নিনো বন্যা, খরা এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে সম্পর্কযুক্ত। তাপমাত্রা বাড়ার ফলে অসময়ে নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা কয়েকগুণ বেড়ে যায় এর ফলে ২০২৩ সালে বাংলাদেশ - ভারত চারটি ঘূর্ণিঝড় দেখেছে। উন্নয়নশীল যে-সব দেশ কৃষিকাজ এবং মাছ ধরার উপর নির্ভরশীল, তারাই এল নিনো দ্বারা অধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে।

ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস ঘাটলে জানা যায়, ১৮৯৫ - ১৮৯৬ সালে এ উপমহাদেশে দেখা দিয়েছিল খরা। এর প্রভাবে তখন প্রায় ৫০ লাখ মানুষ মারা যায়। তবে এ সময় গবেষকদের এল নিনো সম্পর্কে বিস্তর ধারণা ছিল না। এর পর ১৯৮২ সালে যখন ৫ টি মহাদেশে এল নিনোর প্রভাব পরে, তখন এটি সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা বিস্তর ধারণা লাভ করে। এরপর আরো বেশ কয়েকবার পৃথিবীতে এল নিনো দেখা দিয়েছিল। তবে ২০২৪ সালে এল নিনোর সবচেয়ে ভয়ংকর রূপ দেখা যাবে। বাংলাদেশ, ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ তাপদাহ । অন্যদিকে আরব আমিরাত, ওমান, কাজাকিস্তান ও মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলোতে দেখা দিয়েছে প্রবল বৃষ্টি ও বন্যা।

এল নিনো শুধু প্রকৃতি ও জনজীবনের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে না সেই সাথে অর্থনীতির ওপর ভয়ংকর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এল নিনো এর প্রভাবে ১৯৯৭ - ৯৮ সালে পৃথিবীর অর্থনীতির প্রায় ৫.৭ ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়। ১৯৮২ সালে এলিনার প্রভাবে ক্ষতি হয় ৪.১ ট্রিলিয়ন ডলার। গবেষকগণ ধারণা করেন ২০২৪ সালে এল নিনোর প্রভাবে পৃথিবীর অর্থনীতির ৮৪ ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

অন্যান্য দেশগুলোর ন্যায় বাংলাদেশেও চলছে হিট ওয়েভ বা তাপদাহ। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছরে রেকর্ড তাপমাত্রা পরিলক্ষিত হয়। চলতি বর্ষাপূর্ব মৌসুমে দেশে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। একইসঙ্গে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি হওয়ায় অনুভূত হচ্ছে আরও চার থেকে পাঁচ ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রা।

নাতিশীতোষ্ণ দেশের বাসিন্দা হওয়ার কারণে এই হিট ওয়েভ আমাদের স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এক্ষেত্রে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। হিট ওয়েভের ফলে বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে। যেমন - হিট স্টোক, হিট পিডিমা, হিট ক্র্যাম্প, হিট টিটানি, হিট সিন কোপ, ঘামাচি, ফুসকুড়ি, মাথাব্যথা ইত্যাদি।

এ সকল রোগ প্রতিরোধে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। লেবুর শরবত বা স্যালাইন খাওয়া উপকারী। তবে ঠান্ডা পানি বা বরফ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। যতটুকু সম্ভব রোদ থেকে বিরত থাকতে হবে। ঢিলাঢালা পোশাক পরিধান করা উপযুক্ত। এসি থেকে সরাসরি রোদে বের হওয়া উচিত নয়।

জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে পৃথিবীজুড়ে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সৃষ্টি হচ্ছে। জলবায়ুর এরূপ পরিবর্তনের জন্য দায়ী মানুষ। নির্বিচারে গাছ কাটা, বন উজার করা, নদী ভরাট করা, বায়ু দূষণ, মাটি দূষণ, পানি দূষণ ও পরিবেশ দূষণের ফলে জলবায়ু প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে।

এর ফলেই সৃষ্টি হচ্ছে নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। জলবায়ুর এরূপ নেতিবাচক পরিবর্তন প্রতিরোধে আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে। বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে এবং পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ করতে হবে। সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাই পারে এল নিলো বা লা নিনা এর মত ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে আমাদের রক্ষা করতে।

লেখক : শিক্ষার্থী, সমাজকর্ম বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

আমার বার্তা/আফ্রিয়া অলিন/এমই

চিকিৎসাহীনতায় বাত-ব্যথায় অল্প বয়সেই বৃদ্ধ হচ্ছে মানুষ

দেশে ক্রমেই বাড়ছে বাতের কষ্টে ভোগা মানুষের সংখ্যা। শুরুতে সঠিক চিকিৎসা, নিয়মিত ওষুধ সেবনের পাশাপাশি

স্বাস্থ্যকর ডায়েটের চাবিকাঠি হলো সঠিক পরিমাণে ক্যালোরি খাওয়া

আজ আমি কিছু বলতে চাই, স্বাস্থ্যকর খাওয়ার মূল বিষয়গুলো নিয়ে। আপনি ধরে নিতে পারেন, এখন

হাসপাতালের অনুমোদনহীন ক্যান্টিন-ফার্মেসি বন্ধের নির্দেশ

সরকারি হাসপাতালের ভেতরে অবৈধভাবে তৈরি করা অনুমোদনহীন ক্যান্টিন, মেয়াদোত্তীর্ণ প্রতিষ্ঠানের (ফার্মেসি) কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে

বাংলাদেশে করোনা টিকা চলবে, জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের করোনা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা স্বীকার করলেও বাংলাদেশে কার্যক্রম চলবে বলে
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত প্রত্যাবাসনে অজুহাত হতে পারে না

ছেলের চিকিৎসা করাতে না পেরে মায়ের আত্মহত্যা

অন্তর্বাসে থাকতো ডিভাইস, ১০ মিনিটে শেষ হতো নিয়োগ পরীক্ষা

গণমাধ্যমকর্মী আইন নিয়ে মতামত নেওয়া শুরু

নিখোঁজের পরদিন গর্তে মিলল ২ ভাইয়ের মরদেহ

বিএনপি এখন হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

জলবায়ু মোকাবেলায় দুই সিটিকে এক ঢাকা ঘোষণা সময়োপযোগী

বাইডেনের চিঠির ফলোআপ করতে আসছেন ডোনাল্ড লু: কাদের

শিক্ষার্থী ধরে রাখতে না পারলে সরকারি সুবিধাও মিলবে না: শিক্ষামন্ত্রী

ইতালির ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান

সরকারি চাকরিতে বয়স বাড়ানোর সুপারিশের কার্যকারিতা নেই: শিক্ষামন্ত্রী

ইবির ডি ইউনিটে প্রথম আশিক মিয়া, পাস ৭৯ শতাংশ

এসএসসির ফলাফলে যে ১০ স্কুল সেরা

বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ, ১০ দিনে এলো ৮১ কোটি ডলার

৬৯ হাজার রোহিঙ্গা পাসপোর্ট নবায়নে সৌদির তাগিদ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

রাজশাহীর আম বাজারে আসবে ১৫ মে

মিয়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশি যুবককে গুলি করে হত্যা

আইএলওর সঙ্গে সন্তোষজনক আলোচনা হচ্ছে: আইনমন্ত্রী

ভারতে পাচার হচ্ছে রাজধানীর নিম্নবিত্ত মানুষের কিডনি