স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে এখন সময়োপযোগী, বাস্তবভিত্তিক ও অংশগ্রহণমূলক কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
রোববার (১ জুন) পিপিআরসি, ইউএইচসি ফোরাম ও ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক নীতিগত সংলাপে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে সাংবিধানিক অধিকার করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
আলোচনাটি পরিচালনা করেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ও ইউএইচসি ফোরামের আহ্বায়ক ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। অনুষ্ঠানে অংশ নেন ডিজিএইচএস ও ডিজিএফপির বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য কমিশনের সদস্য, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, একাডেমিক প্রতিনিধি, বেসরকারি ও উন্নয়ন খাতের প্রতিনিধিরা।
বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্য কমিশনের প্রতিবেদন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলেও এখন প্রয়োজন সুস্পষ্ট বাস্তবায়ন রূপরেখা, সময়সীমা ও অগ্রাধিকার নির্ধারণ। তারা বলেন, মাতৃত্বকালীন মর্যাদা, জরুরি সেবা ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় জনগণের প্রত্যাশা ও বাস্তবতার মধ্যে ব্যবধান রয়েছে।
ডিজিটাল উদ্ভাবন যেমন ই-প্রেসক্রিপশন, জিপিএস-ভিত্তিক অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা—এসব প্রস্তাবনা সেবার প্রবেশাধিকার বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। তবে তা বাস্তবায়নে জবাবদিহি, সমন্বিত কাঠামো ও অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গি অপরিহার্য বলেও মনে করেন তারা।
আলোচনায় নারীবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার, রেফারেল ব্যবস্থা জোরদার ও মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়ের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়।
সমাপনী বক্তব্যে ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, আমাদের দেশে কিছুই সরলরৈখিক নয়। রিপোর্ট প্রকাশ শেষ নয়, বরং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার নতুন শুরু। কমিশন ও নাগরিক সমাজকে সম্মিলিতভাবে একটি ‘২০২৫ অগ্রাধিকার কর্মপরিকল্পনা’ তৈরির আহ্বান জানান তিনি। বিশেষত কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে সাংবিধানিক অধিকার করার দিকটিকে অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করার তাগিদ দেন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।
সভা শেষে অংশগ্রহণকারীরা একমত হন যে সাহসী কিন্তু বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ নিতে হবে এখনই। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, বাস্তবসম্মত ও সময়োপযোগী রোডম্যাপই হতে পারে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের মূল চাবিকাঠি।
আমার বার্তা/এল/এমই