বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ফ্রি ওয়াইফাই ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা দেয়। বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, রেস্তোরাঁয় ফ্রি ওয়াইফাই পাওয়া যায়। কোথায় কোথায় ফ্রি ওয়াইফাই হটস্পট আছে তা জানিয়ে দেবে ফেসবুক। এই জন্য আপনাকে সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। তারপরে বিনামূল্যে ব্যবহার করা যাবে ইন্টারনেট পরিষেবা।
কোথায় পাওয়া যায় ফ্রি ওয়াই-ফাই: ফ্রি ওয়াই-ফাই খুঁজে পেতে হলে প্রথমে জানতে হবে কোথায় তা সাধারণত সহজলভ্য। ফ্রি ওয়াই-ফাই পাওয়া যায় এমন কিছু জায়গার মধ্যে রয়েছে কফি শপ, পার্ক, পাবলিক লাইব্রেরি, হোটেল, রেস্তোরাঁ, শপিং মল, জিম এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এছাড়া আপনার ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী কোম্পানি অনেক সময় তাদের নিজস্ব হটস্পটের মাধ্যমে বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ দেয়।
যেভাবে কাজ করে হটস্পট: হটস্পট বলতে বোঝানো হয় এমন একটি স্থান বা ডিভাইস যা ওয়্যারলেস ইন্টারনেট সংযোগ সরবরাহ করে।
হটস্পট সাধারণত দুই ধরনের হয়:
মোবাইল হটস্পট: আপনার স্মার্টফোনের মাধ্যমে অন্য ডিভাইসে ইন্টারনেট শেয়ার করা হয়। অনেক ফোন প্ল্যানেই এই সুবিধা থাকে, যেখানে ফোনটি রাউটারের মতো কাজ করে।
পাবলিক হটস্পট: এটি সাধারণত কফিশপ, শপিং মল, এয়ারপোর্ট, হোটেল, হাসপাতাল, কিংবা পাবলিক অফিসগুলোতে থাকে। ব্যবহারকারীরা ফ্রি ইন্টারনেট পেতে এসব জায়গায় গিয়ে নির্দিষ্ট নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন।
সহায়ক অ্যাপস: ফ্রি ওয়াই-ফাই খুঁজে পাওয়ার জন্য কিছু জনপ্রিয় অ্যাপস রয়েছে, যা আপনার অবস্থান অনুযায়ী নিকটবর্তী ফ্রি হটস্পট খুঁজে দেয়।
এই অ্যাপগুলো ব্যবহার করে আপনি জানতে পারবেন:
কোন স্থানে ফ্রি ওয়াই-ফাই আছে
লগইন দরকার কিনা
ইন্টারনেটের গতি কেমন
অন্যান্য ব্যবহারকারীর রিভিউ
জনপ্রিয় অ্যাপগুলোর মধ্যে রয়েছে:
ইনস্টাব্রিজ (Instabridge)
ওয়াইফাই ম্যাপ (WiFi Map)
ওয়াইফাই অ্যারাউন্ড (WiFi Around)
উইম্যান (Wiman)
উইফাই (WeFi)
এই অ্যাপগুলো অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস উভয় প্ল্যাটফর্মেই পাওয়া যায়।
যেভাবে ফ্রি ওয়াই-ফাই সংযোগ ব্যবহার করবেন: কিছু কৌশল মানলে ফ্রি ওয়াই-ফাই সহজে ব্যবহার করতে পারবেন। এগুলো হলো:
১. আপনার স্মার্টফোন বা ল্যাপটপে ওয়াই-ফাই চালু করুন।
২. ওয়াই-ফাই আইকনে ক্লিক করে বা ডিভাইসের সেটিংসে গিয়ে কাছাকাছি নেটওয়ার্কের তালিকা দেখুন।
৩. যেই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে চান সেটি নির্বাচন করুন।
৪. পাবলিক নেটওয়ার্ক হলে সাধারণত একটি ওয়েবপেজ খুলে শর্তাবলি মেনে নিতে বলা হয় বা ইমেইল ঠিকানা দিতে হতে পারে।
৫. যদি নেটওয়ার্কটি সুরক্ষিত হয় (secured), তাহলে পাসওয়ার্ড দিতে হতে পারে। প্রয়োজনে দোকানে জিজ্ঞেস করে বা কোথাও টানানো পোস্টারে তথ্য দেখে নিতে পারেন।
পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারে সতর্কতা: ফ্রি ওয়াই-ফাই সুবিধাজনক হলেও এটি ব্যবহারে কিছু ঝুঁকি রয়েছে। পাবলিক ওয়াই-ফাই সাধারণত উন্মুক্ত থাকে, যেখানে কারও পক্ষে সহজেই প্রবেশ করা সম্ভব হয়। এই কারণে হ্যাকাররাও সহজে এই নেটওয়ার্কে প্রবেশ করতে পারে।
সমাধানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা দেয়া হলো:
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট চেক করা বা ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ হ্যাকাররা সহজেই এই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে আপনার তথ্য চুরি করতে পারে।
ল্যাপটপ বা ফোন একা ফেলে রাখবেন না। যেকোনো সময় কেউ আপনার ডিভাইস চুরি করতে পারে বা পর্দায় চোখ রেখে তথ্য দেখে নিতে পারে।
অনলাইন কেনাকাটা এড়িয়ে চলুন। কেনাকাটার সময় ব্যক্তিগত তথ্য যেমন পেমেন্ট ডিটেইলস দিতে হয়, যা হ্যাকারদের জন্য সহজলভ্য হয়ে উঠতে পারে।
ভিপিএন (VPN) ব্যবহার করুন। এটি আপনার ডেটা এনক্রিপ্ট করে রাখে, ফলে তৃতীয় পক্ষ তা সহজে চুরি করতে পারে না।
উল্লেখ্য, ফ্রি ওয়াই-ফাই আমাদের জীবনকে সহজ করে তুললেও এর সঠিক ব্যবহার জানা অত্যন্ত জরুরি। একটু সচেতন হলেই আপনি নিরাপদে যেকোনো জায়গা থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। তাই বাইরে কোথাও গেলে ফ্রি ওয়াই-ফাই খুঁজে পাওয়ার জন্য উপযুক্ত অ্যাপ ব্যবহার করুন, ডিভাইসের নিরাপত্তা মাথায় রেখে সুরক্ষিত থাকুন।
আমার বার্তা/এল/এমই