ই-পেপার রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

অ্যাপিলেট ডিভিশনের রায়ের পর ছাত্র আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই

গণপূর্তমন্ত্রী মোকতাদির চৌধুরী
বিশেষ প্রতিনিধি:
২৭ জুলাই ২০২৪, ১৮:১৫
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। ফাইল ছবি

গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন হাইকোর্টের অ্যাপিলেট ডিভিশন ডিভিশন সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্ববিন্যাস করে রায় দিয়েছে। সে অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এরপর কোটা সংস্কার আন্দোলন তথা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আর কোনো যৌক্তিকতা নেই।

শনিবার (২৭ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে পাক্ষিক মত ও পথ এর আয়োজনে ' সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনের সুযোগে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, কোটা সংস্কার নিয়ে যে আন্দোলন হয়েছে তা নিশ্চয় কি ভুল বোঝাবুঝির কারণে হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযোদ্ধা, তাদের সন্তান ও নাতি-নাতনির জন্য সংরক্ষিত ৩০% কোটা কখনোই পূরণ হয়নি। বাস্তবে এটা ৭-৮ পার্সেন্ট এর বেশি হয়নি। এই সাত-আট পার্সেন্ট কোটা পূরণকারী প্রতিযোগিরা প্রিলিমিনারি, লিখিত এবং ভাইভায় নিজস্ব যোগ্যতার বলে উত্তীর্ণ হয়েছে। এরপরে এসেছে কোটার প্রশ্ন। তথাকথিত আন্দোলনকারীরা এসব বিষয়ে না বুঝেই আন্দোলনে মাঠে নেমেছে।

তারা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে বিকৃত করে নিজেদেরকে রাজাকার আখ্যায়িত করেছে। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের চেতনা বিরোধী তাদের এই স্লোগান সাধারণ মানুষ ভালোভাবে নেয়নি। তাদেরকে বুঝতে হবে যে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনার পরিপন্থী কোন কার্যকলাপ দেশের মানুষ সহ্য করবে না।

বিএনপি'র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এবং সুশীল সমাজের কতিপয় সদস্যের নেতিবাচক বিবৃতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা জনগণের জান মালের নিরাপত্তা বিধানে কাজ করেছে, সেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের যারা পিটিয়েছে, তাদের হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে, সরকারি স্থাপনায় আগুন দিয়েছে তাদের সমালোচনা না করে ওনারা বরং নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী, অগ্নি সংযোগকারী আন্দোলনকারীদের প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শন করছেন। এই সহমর্মিতা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ তাদের হীন উদ্দেশ্যকে প্রকাশ করে। তারা যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না, তারা যে স্বাধীনতার আদর্শে অনুপ্রাণিত নয় এতে সেটাই প্রমাণিত হয়।

তিনি আরো বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে তারা ভারত বিরোধী স্লোগান দিয়েছে, যারা বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ করেছে, যারা নিজেদের রাজাকার বলে পরিচয় দিয়েছে তারা প্রকৃত অর্থে আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অপমান করার চেষ্টা করেছে। তাদের বিচার হওয়া উচিত। যারা মেট্রোরেলের স্টেশন, বিটিভি, ত্রাণ অধিদপ্তর, ও সেতু ভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় আগুন দিয়েছে তারা শুধু রাষ্ট্রের ক্ষতি করেনি তারা নিজেদেরও ক্ষতি করেছে। কারণ এসব রাষ্ট্রীয় সম্পদে সবারই অংশীদারত্ব রয়েছে। সরকারি সম্পত্তি বিনষ্ট করে কখনো সরকার উৎখাত করা যায় না, বরং এটা নিজেদেরই ক্ষতি বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এই অযৌক্তিক আন্দোলনকে ইস্যু করে সংগঠিত সকল হত্যাকান্ড, অগ্নিসংযোগ, জ্বালাও পোড়াও সবকিছুর সুস্থ তদন্ত সাপেক্ষে বিচার হওয়া উচিত এবং বর্তমান সরকার তা সঠিকভাবে করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আমরা ৭১ নামক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি এবং স্বাধীনতা পরবর্তী ডাকসুর প্রথম জিএস মাহবুব জামান প্রধান আলোচক হিসেবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরবর্তী বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ সম্পর্কে ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচির স্মৃতিচারণ করেন।

তিনি তার বক্তব্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে হতাহতের ঘটনা ঘটার দুই দিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাথিও ও মিলার কিভাবে দুইজন নিহতের ঘটনা উল্লেখ করলেন সে প্রশ্ন উত্থাপন করেন। এ ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্ত ও গবেষণা হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন। এছাড়া আন্দোলন চলাকালে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ এর হত্যাকান্ড সম্পর্কে অধিকতর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন রাবার বুলেটের আঘাতে কারো মৃত্যু হবার কথা নয়। তাছাড়া আন্দোলন মোকাবেলায় পুলিশ বাহিনী যথেষ্ট প্রশিক্ষিত এবং পেশাদারি বাহিনী। বিনা প্ররোচনায় পুলিশ এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারেনা বলে তিনি মন্তব্য করেন। দেশের মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদেরকে যেন কেউ অপমান করতে না পারে সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি আহ্বান জানান। সরকারি চাকরিতে কোটা ইস্যু সামনে এনে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিকল্পিতভাবে হেয় প্রতিপন্ন এবং মুক্তিযোদ্ধা ও তার সন্তানদের সাধারণ ছাত্রদের মুখোমুখি করা হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ এর মহাপরিচালক প্রবীণ সাংবাদিক জাফর ওয়াজেদ মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী অপশক্তির অতৎপরতার সবিস্তার বর্ণনা প্রদান করেন।

তিনি বলেন স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী চক্র, তৎকালীন রাজাকার, আলবদর, আল সামস বাহিনীর যারা পৃষ্ঠপোষক ছিলেন তারা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণায় লিপ্ত ছিল। সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশকে একটি মুসলিম বিদ্বেষী হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে তারা উপস্থাপন করেছে। তারা পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রচুর অর্থ খরচ করেছে। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ তত্তাবধানে পাকিস্তানের ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসে এবং পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করতে থাকে। স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীচক্রের সে চেষ্টা ধারাবাহিকতা এখনো বিদ্যমান।

তিনি আরো বলেন কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, বুদ্ধিজীবীসহ দেশের শিক্ষিত সমাজের একটা বড় অংশ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ থেকে বিরত ছিল। এদের অনেকে আবার পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। কেউ কেউ আবার মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি করেছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এদেরকে চিহ্নিত করা উচিত ছিল যা করা হয়নি। এর ফলে রাজনৈতিক অঙ্গনে মোশতাকের মত চক্রান্ত কারীর অনুপ্রবেশ ঘটেছে যার ধারাবাহিকতা এখনো বিদ্যমান রয়েছে।

স্বাধীন বাংলাদেশে ছাত্র শিবিরের যে সকল ক্যাডার মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির রগ কেটে দেয়, গ্রেপ্তার হলে তাদের অনেকেই থানায় জামাই আদর পায় বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য জামাত শিবির চক্র দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের পেছনে আজ অব্দি বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে যাচ্ছে। তাদের এহেন কর্মকান্ড বন্ধ করা উচিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বের একমাত্র নেতা যিনি সর্বাধিক অপপ্রচারের শিকার হয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। আগামীতে একটি রাজাকার, আল বদরমুক্ত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চান এবং এজন্য তরুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করার জন্য তিনি উদাত্ত আহ্বান জানান।

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মহসিন হাবিবের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় আয়োজিত এ গোলটেবিল বৈঠকে আরো বক্তব্য রাখেন রবিন সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকার এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি। সৈয়দ শুকুর আলী শুভ। বৈঠকে বিশিষ্ট সাংবাদিক, লেখক, কবি, সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবীসহ তিন শতাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

আমার বার্তা/এমই

অন্তর্বর্তী সরকারের এক মাস : অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ

নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার একমাস পূর্ণ করেছে।

বিদেশে পালানোদের ফেরাতে আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠার পরামর্শ

মানবতাবিরোধী অপরাধ, অর্থনৈতিক অপরাধ ও রাজনৈতিক দুর্নীতির সাথে জড়িত ব্যক্তি- যারা অসদুপায়ে অর্জিত সম্পদ নিয়ে

এখনও উদ্ধার হয়নি লুট হওয়া ১৮৮৫টি অস্ত্র ও ৩ লাখ গোলাবারুদ

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারাদেশে বিক্ষুব্ধ জনতা বিভিন্ন থানায়

সীমান্তে ফেলানীর মতো হত্যাকাণ্ড দেখতে চাই না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সীমান্তে ফেলানীর মতো হত্যাকাণ্ড আর দেখতে চাই না বলে উল্লেখ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মিয়ানমার থেকে আরও ৫০০ রোহিঙ্গা পালিয়ে এলো বাংলাদেশে

অন্তর্বর্তী সরকারের এক মাস : অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ

ফিজিওথেরাপির গুরুত্ব জানুন

৮ সেপ্টেম্বর ঘটে যাওয়া নানান ঘটনা

তারাবো বিএনপির সমাবেশে শত শত নেতাকর্মী নিয়ে যুবদল নেতা আফজাল কবির ও আরিফ

কোনাবাড়ীতে ছাত্রকে গুলি করে হত্যা মামলায় কনস্টেবল গ্রেপ্তার

হাসিনাকে নিয়ে ইউনূসের সাক্ষাৎকার ভালোভাবে নেয়নি ভারত

রূপগঞ্জে সন্ত্রাস চাঁদাবাজি নৈরাজ্য ঠেকাতে বিএনপির সমাবেশ

হোমনায় মা-ছেলেসহ তিন জনকে হত্যা করেন সুমন

নিম্ন আদালত মনিটরিংয়ের দায়িত্বে হাইকোর্টের ১৩ বিচারপতি

গোপালগঞ্জের আ.লীগ নেতা ভারতে গ্রেপ্তার

রূপালী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় ব্যবসায়িক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

এখনো কাজে না ফেরা পুলিশ সদস্যদের বাদ দিয়ে নতুন নিয়োগের দাবি

দেশের প্রকৃত রিজার্ভ ২০.৫০ বিলিয়ন ডলার: গভর্নর

জবির ছাত্রী হলে ৯ ছাত্রলীগ কর্মীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

ডেঙ্গুতে আরো ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৪০৩

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা ও নতুন দৃষ্টিকোণ

একাত্তরের মীমাংসিত বিষয় নিয়ে বিতর্কের সুযোগ নেই: রব

গজারিয়ায় অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন, হুমকির মুখে নয় গ্রাম

আরএমপির দায়িত্ব নিলেন নতুন কমিশনার আবু সুফিয়ান