জাতিসংঘের পরিবেশ অ্যাসেম্বলির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০৩০ সাল পর্যন্ত একবার ব্যবহার্য পলিথিন ও প্লাস্টিক বন্ধে সময় চান ব্যবসায়ীরা।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে ডিআরইউতে বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক এসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ প্লাস্টিক প্যাকেজিং, রোল ম্যানুফ্যাকচারিং ওনার্স এসোসিয়েশনের ডাকা যৌথ প্রেস কনফারেন্সে তারা এ দাবি করেন।
লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক এসোসিয়েশনের সভাপতি সামিম আহমেদ বলেন, গত ২৭ আগস্ট পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপণের মাধ্যমে ১৭টি একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকের একটি তালিকা সম্বলিত গেজেট প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, সে অনুযায়ী একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক বন্ধ করার প্রচেষ্টা চলছে। ফলে প্লাস্টিক সেক্টরের ব্যবসা বাণিজ্য এবং লিংকেজ হিসেবে অন্যান্য সেক্টরের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই আইনের কারণে শিল্প বিকাশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে এবং বাজারে নেগেটিভ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এসময় খাদ্য নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী আয়োডিনযুক্ত লবন প্লাস্টিক ছাড়া মোড়কীকরণ সম্ভব নয় উল্লেখ করে সামিম আহমেদ বলেন, অন্য কোন পণ্য দিয়ে মোড়কীকরণ করা হলে তার গুণগত মান থাকবে না।
এছাড়াও বর্তমান সরকার ভোজ্য তেলের সঙ্গে ভিটামিন-এ যুক্ত করতে চায় যা প্লাস্টিক কন্টেইনার ছাড়া এটা সম্ভব নয়। তরল দুধ প্লাস্টিক প্যাকেজিং ছাড়া বাজারজাত সম্ভব নয় কারণ ইউভি লাইট সুরক্ষা না থাকলে দুধ নষ্ট হয়ে যায়। ঔষধের গুনগত মান রক্ষায়ও প্লাস্টিক প্যাকেজিং ছাড়া কোন বিকল্প নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এই ব্যবসায়ী বলেন, ইউএনইএ রেজ্যুলেশনে প্লাস্টিককে বর্তমান আধুনিক মানব সভ্যতায় তার ভূমিকা এবং অবদান লিপিবদ্ধ করেছেন এবং স্বীকৃতি দিয়েছেন। আইএনসি প্লাস্টিক দুষণ প্রতিরোধে চলমান আলোচনায়ও প্লাস্টিক বন্ধ করার কথা বলা হয়নি।
২০০২ সালের পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধের আইন বাস্তবায়নযোগ্য করার জন্য বিকল্প ব্যাগ সমূহের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়ে সামিম আহমেদ বলেন, সচেতনতা বৃদ্ধি, শিক্ষা কারিকুলামে অন্তর্ভুক্তকরণ, জনগণের অংশগ্রহণ, যথেষ্ট পরিমাণে বিন (ঝুড়ি) এর ব্যবস্থা করা, সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করার জন্য বিনিয়োগ করতে হবে। যথেষ্ট পরিমাণ বিকল্প ব্যাগের ব্যবস্থা/সরবরাহ নিশ্চিত না করে কোন অভিযান পরিচালনা সফল হবে না।
পরে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্লাস্টিকের পুণঃচক্রায়ণ এর মাধ্যমে বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করতে হবে। এর মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণতা কমানো এবং মহাসাগরীয় প্লাস্টিক দূষণ রোধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এসময় তিনি জাতিসংঘের পরিবেশ অ্যাসেম্বলির একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০৩০ সাল পর্যন্ত পণ্যটি বন্ধে সময় নিতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
প্লাস্টিক বন্ধে অর্থনৈতিক প্রভাব কি হবে তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, বিডা, এফবিসিসিআই এবং অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করারও অনুরোধ জানান তিনি।
এছাড়াও একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক ব্যবহারের তালিকায় এমন কিছু পণ্য আছে যার সাথে জড়িত লাখো লোকের কর্মসংস্থান উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ১৩ লক্ষ ক্ষুদ্র বিক্রেতার কর্মসংস্থান এর সঙ্গে জড়িত। যেখান থেকে সরকারের কোষাগারে প্রতিবছর প্রায় ৪০,০০০ কোটি টাকা জমা হয়।
আমার বার্তা/এমই