ই-পেপার শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩২

কী আছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের খসড়ায়

আমার বার্তা অনলাইন:
১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:৩৮

জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সর্বদলীয় বৈঠক করছেন। এদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সর্বদলীয় বৈঠক শুরু হয়।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটি, খেলাফত মজলিস, ইসলামি আন্দোলন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলসহ (বাসদ মার্কসবাদী) বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতন ঘটে। অভ্যুত্থানের সূত্রপাত করা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষণাপত্রের দাবিতে প্রথম সোচ্চার হয়। পরে ছাত্র নেতৃত্বের রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম জাতীয় নাগরিক কমিটিও একই দাবি তোলে। অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা ২৮ ডিসেম্বর একযোগে ঘোষণা দেন, বছরের শেষ দিনে শহীদ মিনারে সমাবেশ থেকে ঘোষণাপত্র প্রকাশের। বিষয়টি রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা তৈরি করে।

আলোচিত জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের খসড়ায় বিদ্যমান সংবিধানকে ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার লালনের দলিল আখ্যা দিয়ে তা সংশোধন কিংবা প্রয়োজনে বাতিলের কথা বলা হয়েছে। যদিও বিএনপি সংবিধান বাতিলের ঘোর বিরোধী। গত ৫ আগস্ট থেকে কার্যকর ধরে খসড়ায় রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতির প্রস্তাব রয়েছে।

অভ্যুত্থানের এক পর্যায়ে জনগণের লড়াইয়ে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সমর্থনের স্বীকৃতি এবং আত্মমর্যাদা, সাম্য ও সামাজিক ন্যায়বিচারের যে আদর্শে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে, তা বাস্তবায়নে সংগঠিত হওয়ার ঘোষণা রয়েছে ঘোষণাপত্রে।

ঘোষণাপত্রের বিষয় কেন সামনে আনা হলো, প্রভাব কী হতে পারে– তা নিয়ে বিএনপিসহ কয়েকটি দল প্রশ্ন তোলে। সেই সময়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছিল, এর সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক নেই।

তবে এক দিন পরই জানায়, সরকার সহযোগিতা করবে। ৩০ ডিসেম্বর ছিল নাটকীয়। সেই রাতে জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় ঐকমত্যে ঘোষণাপত্র তৈরি করবে।

রাজনৈতিক সূত্রের খবর, বিএনপির তীব্র আপত্তির কারণেই সরকারকে এ অবস্থান নিতে হয়। অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া দল ও সংগঠনকে মুখোমুখি অবস্থান থেকে সরিয়ে উত্তেজনা কমাতে ভূমিকা রাখে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। পরে ৩০ ডিসেম্বর মধ্যরাতে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। তা থেকে ঘোষণাপত্র প্রকাশে সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। দাবির পক্ষে জনমত গঠনে প্রচারপত্র বিলি ও গণসংযোগ করছে ছাত্র নেতৃত্ব।

জাতীয় নাগরিক কমিটির ঘোষণাপত্রের খসড়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা থাকলেও সরকারের খসড়ায় তা রাখা হয়নি।

>> কী আছে খসড়ায়

সাতচল্লিশে ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তি, একাত্তরে জনযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা ও পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বাহাত্তরের সংবিধান স্বাধীনতার শহীদ ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যাশার প্রতিফলনে ব্যর্থ হয়েছিল। পরবর্তী শাসনামলেও রাষ্ট্র এবং প্রতিষ্ঠান বিনির্মাণে ব্যর্থতা ছিল। গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও শাসকগোষ্ঠীর জবাবদিহি নিশ্চিত করা যায়নি।

খসড়ায় বলা হয়েছে, ক্ষমতার সুষ্ঠু রদবদলের রাজনৈতিক ব্যর্থতার সুযোগে ষড়যন্ত্রমূলক ১/১১-এর মাধ্যমে শেখ হাসিনার একচ্ছত্র আধিপত্যের পথ সুগম হয়। শেখ হাসিনার শাসনামলের গুম-খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, দলীয় স্বার্থে সংবিধান সংশোধন ও পরিবর্তন রাষ্ট্রীয় এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে। বিগত সরকারের আমলে গণবিরোধী একনায়কতান্ত্রিক, মানবাধিকার হরণকারী শক্তি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খুনি রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে পরিচিত করে। শেখ হাসিনার পরিবারের নেতৃত্বে উন্নয়নের নামে দুর্নীতি, ব্যাংক লুট, অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস ও বিদেশে টাকা পাচার সব সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে।

এর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দল, ছাত্র, শ্রমিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ গত ১৫ বছর নিরন্তর সংগ্রাম করে জেলজুলুম, গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। বিদেশি রাষ্ট্রের তল্পিবাহক আওয়ামী লীগ ন্যায়সংগত আন্দোলনকে নিষ্ঠুরভাবে দমন করেছে।

এর পরই খসড়ায় রয়েছে গত তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনের কথা। বলা হয়েছে, মানুষের ভোটাধিকার এবং প্রতিনিধিত্ব বঞ্চিত করে ছাত্র ও তরুণদের নিষ্ঠুর নির্যাতন করা হয়। সরকারি চাকরিতে একচেটিয়া দলীয় ও কোটাভিত্তিক নিয়োগ চরম বৈষম্য তৈরি করে। এই ধারা বর্ণনার পর জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের কথা রয়েছে খসড়ায়।

বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের দমন এবং গণহত্যার পরও দল-মত নির্বিশেষে ছাত্র-জনতা গণবিক্ষোভকে গণঅভ্যুত্থানে রূপ দেন। অভ্যুত্থান চলাকালে ছাত্রদের ৯ দফা দমনে সরকার নির্মমতা চালায়। ইন্টারনেট বন্ধ, কারফিউ জারি করে ব্লক রেইডের মাধ্যমে আন্দোলন গুঁড়িয়ে দিতে সর্বশক্তি নিয়োগ করে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে অদম্য ছাত্র আন্দোলনে রাজনৈতিক দল, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, শ্রমিক প্রতিষ্ঠানসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেয়। এক পর্যায়ে জনগণের লড়াইয়ে সামরিক বাহিনীর সদস্যরাও সমর্থন দেন। ফ্যাসিবাদ বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে জনগণ ঢাকামুখী লংমার্চ করলে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান।

ঘোষণাপত্রের খসড়ায় বলা হয়েছে, রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকট মোকাবিলায় অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের সার্বভৌম অভিপ্রায় অভিব্যক্তি রাজনৈতিক এবং আইনি দিক থেকে বৈধ, যুক্তিসংগত ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। ছাত্র-জনতার সেই অভিপ্রায় বলে, যে আদর্শে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে, তা বাস্তবায়নে সংগঠিত হলাম।

ভূতাপেক্ষ বাস্তবায়নে সংসদ ভেঙে দিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠা এবং সুশাসন, সুষ্ঠু নির্বাচন ও ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান রোধে প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভিপ্রায় ব্যক্ত করা হয়েছে ঘোষণাপত্রে। জুলাই গণহত্যা, আওয়ামী লীগ আমলের অপকর্মের বিচারের অঙ্গীকারের মাধ্যমে দ্বিতীয় জনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে।

আমার বার্তা/এমই

বইয়ের প্রচ্ছদ থেকে ‘আদিবাসী’ গ্রাফিতি বাদ দেওয়ায় টিআইবির উদ্বেগ

২০২৫ সালের নবম-দশম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয়পত্র বইয়ের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দটি রাখা এবং বাদ দেওয়াকে কেন্দ্র

ফেসবুকে নিজের সম্পদের হিসাব দিলেন প্রেসসচিব শফিকুল আলম

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রাখার লক্ষ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার তাগিদ দেয় অন্তর্বর্তী

আরও আলোচনার ভিত্তিতে ঘোষণাপত্র প্রণয়নে গুরুত্ব দিয়েছেন সবাই

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে রাজনৈতিক শক্তি, ছাত্র জনতা—সবার মধ্যে আরও বেশি আলোচনার ভিত্তিতে ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করার

লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৫৭ বাংলাদেশি

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ লেবানন থেকে স্বেচ্ছায় আরও ৫৭ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ব্রিটেনের রাজনীতিতে ছোট ভুলেও কড়া শাস্তি

বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ ট্রাম্পের

বইয়ের প্রচ্ছদ থেকে ‘আদিবাসী’ গ্রাফিতি বাদ দেওয়ায় টিআইবির উদ্বেগ

পঞ্চগড়ে শৈত্যপ্রবাহ কাটলেও কমছে না শীতের দাপট

বাংলাদেশের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়, জানাল ভারত

টিউলিপের পর এবার নজর সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের দিকে

চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমে হবে ৪.১ শতাংশ

দুপুরে ছাত্রদলের মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচি

অবশেষে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করল ইসরাইল

১৮ জানুয়ারি ঘটে যাওয়া নানান ঘটনা

সাভারের আরন ডেনিম লিমিটেডের সুনাম নষ্ট করার পাঁয়তারা

বেনাপোলে ১২৫ বোতল ফেনসিডিল সহ গ্রেফতার ১

প্রিমিয়াম হোল্ডিংসের পিঠা উৎসব ও আবাসন মেলা

আজই যুদ্ধবিরতি চুক্তির অনুমোদন দেবে ইসরায়েল

পিআর সিস্টেমে নির্বাচন হতে হবে : চরমোনাই পীর

ভবনের ছিল না সেফটি প্ল্যান, নোটিশ দেওয়া হয় কয়েকবার

সংবাদ সংগ্রহের সময় সাংবাদিকের মোবাইল চুরি

‘উত্তর কোরিয়া স্টাইলে’ চুক্তি সই করতে মস্কোয় ইরানের প্রেসিডেন্ট

নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইঙ্গিত দিলেন সারজিস আলম

তিন ঘণ্টা পর হাজারীবাগের আগুন নিয়ন্ত্রণে