বিভিন্ন সময় যারা মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম উঠিয়েছেন তাদের তালিকা থেকে সরে যাওয়ার জন্য সরকার ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) দেওয়ার কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। বলেছেন, যারা মুক্তিযুদ্ধ না করেও মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় আছে তাদের তালিকা থেকে সরে যাওয়ার সুযোগ দিতে একটি ইনডেমনিটি দেওয়ার চিন্তা করছে সরকার।
বুধবার (৪ জুন) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পুনর্গঠন হচ্ছে। যাচাই বাছাইতে যখন যাবো তখন ইনডেমনিটি দেওয়ার ইচ্ছে আছে। যারা অমুক্তিযোদ্ধা হয়েও মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হয়েছেন তারা যেন চলে যান।
উপদেষ্টা বলেন, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা নিয়ে অনেকে সঠিক পরিসংখ্যান না নিয়েই সংবাদ প্রকাশ করছে। কিন্তু আমরা সেভাবে যেতে চাই না। আমরা নিয়মনিষ্ঠ আইন-বিধি অনুসারে যাচাই-বাছাই করে বলবো। সেভাবেই কার্যপদ্ধতি নিরূপণ করছি।
ফারুক ই আজম বলেন, অনেক বয়স কম এমন অনেকেও মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে। আমরা অনেক নমুনা পাচ্ছি। এগুলো যখন এক করা হবে তখন হয়তো প্যাটার্ন বলা যাবে। মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকা আছে সেখানে যারা মুক্তিযুদ্ধ করেনি তাদের থেকে নিষ্কৃতি পেতে চাই।
মঙ্গলবার (৩ জুন) ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ পরিচয়ের নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ করে একটি সংশোধিত অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, এখন থেকে শুধু তারাই ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হবেন, যারা ১৯৭১ সালে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। অর্থাৎ যারা অস্ত্র হাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়েছেন, প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং ফ্রন্ট লাইনে ছিলেন। যারা যুদ্ধ করেননি, তবে মুক্তিযুদ্ধে নানা মাধ্যমে সহযোগিতা করেছেন—তাদের ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।
সরকার বলেছে, এই শ্রেণিবিন্যাসের ফলে কারও সুযোগ-সুবিধায় কোনো পরিবর্তন আসবে না। অর্থাৎ ‘সহযোগী’দের আগের মতোই রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও সম্মান থাকবে।
আমার বার্তা/এমই