জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আগামী ৫ আগস্ট আমাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্ণ হবে। এটি আমরা উদযাপন করতে চাই। ৫ আগস্টের আগেই জুলাই মাসে যেন জুলাই সনদ রচিত হয়। জুলাই সনদের মাধ্যমে দেশের মানুষ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা এবং শাসন কাঠামো দেখতে চান। জুলাই সনদ হওয়ার আগে যেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না করা হয়। এতে সংস্কার প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে।
সোমবার (২ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
নাহিদ বলেন, যেসব রাজনৈতিক দল দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছে আমরা তাদের প্রতি এবং সরকারের প্রতি আহ্বান রেখেছি। ১৬ বছর অপেক্ষা করেছি, ১০ মাস অপেক্ষা করেছি, আরও দুই মাস যেন অপেক্ষা করি। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি এবং সরকারকে সময় দেই। এ দুই মাসের মধ্যে আমরা জুলাই সনদ রচনা করে ফেলি।
তিনি বলেন, জুলাই সনদের পরই সরকার যেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে দেয়। জুলাই ঘোষণাপত্রের জন্য ৩০ কার্য দিবস ছিল, সেটা অনেক কার্য দিবস হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা কোনো ধরনের পদক্ষেপ দেখছি না। আমরা আহ্বান জানিয়েছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যেন জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়িত হয়। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার, নির্বাচন কমিশন আইন সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা উচিত।
অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংস্কার নিয়ে মতবিরোধের বিষয়ে তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থে, দেশের স্বার্থে ছাড় দেওয়া যেতে পারে। তবে দলীয় স্বার্থে সরকার যেন কোনো সিদ্ধান্ত না নেয় সেজন্য আমরা আহ্বান জানিয়েছি। আমরা যদি দেশের স্বার্থ চিন্তা করি তাহলে আমরা অবশ্যই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারবো।
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঐকমত্য কমিশনের সাথে সর্বদলীয় বৈঠকে জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে প্রথম পর্যায়ের বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো নিয়ে জুলাই সনদ তৈরি করা হবে।
বৈঠকে যোগ দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে দলটির তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল। যোগ দেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ। এনসিপির নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকিও।
এ ছাড়া গণ অধিকার পরিষদ, এবি পার্টি, এলডিপি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতারাও যোগ দেন এই বৈঠকে। আজকের এই বৈঠকে অংশ নেয় ২৮টি রাজনৈতিক দল।
আমার বার্তা/এমই