ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে যাকাতের গুরুত্ব এবং এটি সমাজের দরিদ্র ও অসহায় জনগণের কল্যাণে কীভাবে ব্যবহার করা যায় , সেই বিষয়ে *সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে একটি বিশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১০ মার্চ ঢাকার সমাজসেবা অডিটোরিয়াম হলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, নীতি-নির্ধারক, সমাজসেবক, গবেষক ও ধর্মীয় বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারের মূল প্রতিপাদ্য
"যাকাত, দান-অনুদান সংগ্রহ কর্মসূচি এবং ইসলাম, দুস্থ ও অসহায় রোগীদের কল্যাণে যাকাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য" শীর্ষক সেমিনারটি সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণে ইসলামী অর্থনীতির ভূমিকা ও সম্ভাবনা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা উপস্থাপন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. মহিউদ্দিন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব মোঃ সাইদুর রহমান খান।
যাকাত ও দানের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের উদ্যোগ
সেমিনারে *বক্তারা যাকাতের তাৎপর্য ও বাস্তব প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করেন। প্রধান অতিথি ড. আ ফ ম খালিদ মোসেন বলেন, "যাকাত ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। এটি শুধু ধর্মীয় দায়িত্বই নয়, বরং সামাজিক ন্যায়বিচার ও অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার কার্যকর উপায়। যথাযথভাবে যাকাত বিতরণ করা গেলে দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব।
বিশেষ অতিথি ড. মো. মহিউদ্দিন বলেন, "সরকার ইতিমধ্যে যাকাত সংগ্রহ ও বণ্টনের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আমরা চাই সমাজের ধনী শ্রেণির মানুষ আরও বেশি এগিয়ে আসুক এবং দুস্থ ও অসহায় রোগীদের চিকিৎসা ও জীবনমান উন্নয়নে যাকাত ব্যবহৃত হোক। সভাপতি মো. সাইদুর রহমান খান বলেন, "সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়ে যাকাত ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের জন্য নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে।
যাকাতের সঠিক ব্যবহারের আহ্বান
সেমিনারে বক্তারা বলেন, ইসলামের নির্দেশনা অনুসারে যাকাত বিতরণ করা হলে গরিব,এতিম ও অসহায় মানুষদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। বিশেষজ্ঞরা যাকাত ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতা ও দক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করার ওপরও গুরুত্ব দেন। এছাড়াও আলোচকরা যাকাত ব্যবস্থাপনার জন্য একটি কেন্দ্রীয় তহবিল গঠনের প্রস্তাব দেন, যার মাধ্যমে যাকাত প্রদানকারীরা সরাসরি তাদের অনুদান দিতে পারবেন এবং সুবিধাভোগীরা সহজেই সহায়তা পাবেন।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ
সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সরকার ইতিমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় যাকাতের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে কাজ করছে। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক ও দাতব্য সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সরকারের যাকাত ব্যবস্থাপনার প্রতি আস্থা প্রকাশ করেন এবং যাকাত-দান ও অনুদান কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
আমার বার্তা/এমই