# ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়
# সরকারী কর্মকতা পরিচয় দিয়েছেন ফ্লেক্সি লোড ব্যাবসায়ীর
# ঋণ দিয়েছে ইস্টার্ন ব্যাংক ও প্রিমিয়ার ব্যাংক
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব (প্রশাসন-২) মোঃ একরাম হক চৌধুরী। যার পরিচিতি নং ১১৩৭০ (নন ক্যাডার)। এই সরকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারি চাকুরী বিধি বহিভৃত ইস্টার্ন ব্যাংক ও প্রিমিয়র ব্যাংক থেকে নেয়া সাড়ে ৭ কোটি টাকা ঋণ খেলাপির অভিযোগে তদন্ত চলছে।
এদিকে ব্যাংক ঋণ নিয়ে খিলাপি হয়েছেন এমন অভিযোগ ও মন্ত্রণালয়ে জমা পড়েছে। এ নিয়ে গত কয়েকদিন যাবত ডাক ও টেলিযোগ মন্ত্রণালয় চলছে মুখরোচক আলোচনা। ঘুষের বিনিময়ে এসব চিঠিও তদন্ত কাজ তিনি থামিয়ে দেওয়ার জন্য নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়ের সূত্রটি।
অভিযোগে জানা গেছে,সরকারি কর্মচারী হয়ে ঋণ সুবিধা নেয়ার সময় তিনি মুক্তা এন্টারপ্রাইজ এর ট্রেড লাইসেন্স এবং অংশীদারদের দলিল জমা দিয়েছিলেন এবং তার ৪১% শেয়ার উল্লেখ করেন বলে মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর গত বছরের ১১ই সেপ্টেম্বর প্রেরিত এক অভিযোগে প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের মাওনা শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মেহেদী হাসান লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের কর্মরত সহকারী সচিব মো. আকরামুল হক পিতা মৃত আব্দুস সালাম চৌধুরী মাতা বেগম রাজিয়া চৌধুরী হোল্ডিং নং ৮১/২০ আজিমপুর গভর্নমেন্ট অফিসারস কোয়াটার আজিমপুর এস্টেট নর্থ ,ডাকঘর নিউ মার্কেট ১২০৫ থানা লালবাগ ঢাকা। তিনি মুক্তার এন্টারপ্রাইজ এর ম্যানেজিং পার্টনার হিসেবে ২০১৬ সালে প্রিমিয়াম ব্যাংক লিমিটেড মাওনা শাখা গাজীপুর থেকে ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ সুবিধা ভোগ করছেন। যা ২০২৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সুদে-আসলে মোট পাওনা ৪ কোটি ৯৮ লাখ ৮৩ হাজার ২শ ৯০ টাকা ৬০ পয়সা ঋণটি গত ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় বর্তমানে ঋণ টি খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছে।
অভিযোগে আরো বলা হয় সরকারি চাকরিজীবী তথ্য গোপন করে বেআইনিভাবে ব্যবসায়ের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে ব্যাংকের ঋণ গ্রহণ করে নামে বেনামে মাওনা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্পত্তি ক্রয় করে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়েছেন উক্ত সহকারী সচিব।
জানা গেছে জনাব একরামুল হক চৌধুরীর নামে এন আই ন ১৮৮১ মোতাবেক ২৮/৮/২০২৩ এ একটি আইনি নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব আব্দুল আল জাকী স্বাক্ষরিত গত ৬ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা ও তদন্ত অনুবিভাগ শৃঙ্খলা -২ শাখায় প্রেরিত এক অভিযোগে বলা হয়েছে সিনিয়র সহকারী সচিব ( ক্যাডার বহির্ভূত) ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ জনাব চিশতি দিদার হাসান ইস্টার্ন ব্যাংকের টিএলসি এর ইউনিটে বিশেষ ব্যবস্থাপক বিভাগের ১১-১-২০২৪ তারিখের আবেদনের প্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে সরকারি কর্মচারীর পরিচয় গোপনপূর্বক বিধি বহিভূতভাবে ব্যবসায় মালিকানা শেয়ার করে পূর্বক তিন কোটি টাকা ঋণ খেলাপ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
এ অবস্থায় প্রাপ্ত অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক এ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার জন্য অভিযোগের ছায়া লিপি নির্দেশক্রমে একসাথে প্রেরণ করা হয়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের মাওনা শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মেহেদী হাসান ফোনে আরো জানিয়েছেন,গাজীপুর জেলার গ্রামীন ফোনের ফ্লাক্সিলোডের ডিস্টিবিউটার মুক্তার এন্টারপ্রাইজ এর ম্যানেজিং পার্টনার হিসেবে একরাম হক চৌধুরী সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়েছেন ব্যবসার জন্য। পড়ে আমরা জনতে পারি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব (প্রশাসন-২)। বিষয়টি একারনে আমরা বিষয়টি লিখিত ভাবে ডাক ও টেলিযোগ মন্ত্রণালয় সচিব মহদয়কে জানিয়েছি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব জনাব মো.একরামুল হক চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান তিনি মন্ত্রণালয়ের সচিবের সাথে কথা বলে লিখিতভাবে অনুমতি গ্রহণ করে উক্ত ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন এবং এটি ছিল তাদের পারিবারিক ব্যবসা। তিনি স্বীকার করেন ঋণ পরিশোধ করার জন্য ইতিমধ্যে তার ব্যবসায়িক সহযোগীর নামে তিনি মামলা দিয়েছেন।এ সময় তিনি মন্ত্রণালয়ের সচিবের অনুমতির লিখিত কপি দু-একদিনের মধ্যে দেখানোর কথা বলেন।
আমার বার্তা/এমই