রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা এলাকায় ছয় দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এতে সাতরাস্তা ও আশপাশের এলাকার সড়কে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন এসব এলাকার সড়কে চলাচলকারীরা।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১০টার পর শিক্ষার্থীরা সাতরাস্তা মোড়ে অবস্থান নেন। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সড়ক আটকে রাখায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। বিকেল ৩টায়ও তারা সড়ক অবরোধ করে রাখেন।
ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন। শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান করে আছেন। তারা সেখানে জোহরের নামাজ আদায় করেছেন।
সাতরাস্তায় যান চলাচল বন্ধ থাকায় এফডিসি মোড় থেকে হাতিরঝিল এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যানবাহন থমকে আছে এক্সপ্রেসওয়ের ওপরেও।
সাতরাস্তায় সড়ক অবরোধকারীদের মধ্যে সরকারি–বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতাভুক্ত শিক্ষার্থীরা রয়েছেন।
এর আগে এদিন সকাল ১০টার দিকে সাতরাস্তা মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় আশপাশের সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। স্লোগানে স্লোগানে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে তাদের ছয় দফা দাবি মেনে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। দ্রুত দাবি না মানা হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী বলেন , আমরা আগের ছয় দফা দাবির সঙ্গে আরও একটি নতুন দাবি যুক্ত করে আন্দোলনে নেমেছি। আমাদের সর্বশেষ দাবি হলো—ল্যাব এসিস্টেন্টদের ১৬তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। আমরা চাই না, কেউ পিয়ন হিসেবে যোগ দিয়ে পরে আমাদের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
সাড়ে ৪ ঘণ্টা পরও সড়ক ছাড়েননি শিক্ষার্থীরা, যানজটে ভোগান্তি চরমে তিনি আরও বলেন, আমাদের এ ন্যায্য আন্দোলনের সঙ্গে আমাদের অনেক শিক্ষকও একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
সম্প্রতি কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে দেওয়া স্মারকলিপিতে আন্দোলনকারীরা উল্লেখ করেন, দেশের বিভিন্ন বেসরকারি পলিটেকনিকে যথেষ্ট ল্যাব সুবিধা নেই, যার ফলে বেসরকারি পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা দক্ষতা অর্জনে ব্যর্থ হন। এ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বেসরকারি পলিটেকনিকসমূহের ল্যাব সুবিধা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করতে হবে এবং যেসব বেসরকারি পলিটেকনিক ল্যাব সুবিধা প্রদানে ব্যর্থ হবে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা করতে হবে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন বেসরকারি পলিটেকনিক মাত্রাতিরিক্ত অর্থ আদায় করে এবং কোনো শিক্ষার্থী অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হলে নানা রকম হয়রানির শিকার হন। তাই এসব অতিরিক্ত অর্থ আদায় নিয়ন্ত্রণসহ বেসরকারি পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের নানা হয়রানির বিষয়ে বোর্ড কর্তৃক যৌক্তিক পদক্ষেপ নিতে হবে।
বাংলাদেশের সরকারি পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাটাচমেন্ট বাবদ যেসব অর্থ পেয়ে থাকেন তা বেসরকারি পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা পাচ্ছেন না। বেসরকারি পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এই বৈষম্য দূর করতে হবে।
আমার বার্তা/এল/এমই