চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার জাফরপুরে নিজ মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে তারই বাবা এনামুল হক জনির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি ধর্ষণ চেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরপর পুলিশ সোমবার রাতে ঝিনাইদহের কালিগঞ্জে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে।
সোমবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় ঘটনা জানাজানির পর থেকেই ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয় পুরো এলাকাজুড়ে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বাড়ি ঘোরাও করে এলাকাবাসী।
এসময় চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের একাধিক টিম সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে ভুক্তভোগীসহ ঐ পরিবারের সকল সদস্যকে পুলিশ হেফাজতে আনে। তবে ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরপরই এলাকা থেকে সটকে পরে অভিযুক্ত বাবা এনামুল হক জনি।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়,অভিযুক্ত এনামুল হক জনির প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বিবাহ করেন। এরপর আবারো তৃতীয় বিবাহ করেন এনামুল। ভুক্তভোগী কিশোরী প্রথম স্ত্রীর সন্তান।
তবে, পুলিশের একটি সুত্র নিশ্চিত করেছে, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিজ মেয়েকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন তিনি। যেহেতু ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের হয়েছে এ কারণে সরাসরি ধর্ষণ বলতে নারাজ সদর থানার ওসি খালেদুর রহমান।
তবে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভুক্তভোগী ও তার সৎ মামার (দ্বিতীয় মায়ের ভাই) ফোনালাপের মধ্যেও ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করে ভুক্তভোগী। এরপর জেলাব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়।
ভুক্তভোগী কিশোরীর সৎ মামা আরিফুল ইসলাম বলেন, গত ১ ডিসেম্বর ভোর রাতে তার বাবা জোরপূর্বক মেয়েকে ধর্ষণ করেছে বলে সে নিজেই আমাদের নিকট স্বীকার করেছে৷ ঘটনার পর তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেয় যেন কাউকে না বলে৷ পরে গত ১৫ মার্চ বিষয়টি তার এক বান্ধুবির নিকট জানায় ভুক্তভোগী কিশোরী। এরপরই গতকাল সোমবার সকাল থেকে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
তবে এরপরই কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি কাউকে না বলতে চাপ প্রয়োগ করে। সকালে স্থানীয়দের নিকট ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও পরিবারের চাপে অস্বীকার করতে শুরু করে ভুক্তভোগী কিশোরী। সন্ধার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে আসেন৷ এরপরই সদর থানায় একটি ধর্ষণ চেষ্টা মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে, চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলার নির্দেশে রাতেই অভিযান চালায় জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও সদর থানা পুলিশের দুটি দল। রাত ২ টায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানাধীন কাশিপুর গ্রামে আসামিকে তার মামার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আমার বার্তা/এমই