সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনের হত্যাকাণ্ডের কিছু আগে পারুল আক্তার ওরফে গোলাপী নামে এক নারীর মাধ্যমে হ্যানিট্র্যাপের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন (জিএমপি)পুলিশ কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান।
শনিবার (০৯ আগস্ট) দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এই তথ্য জানান।
পুলিশ কমিশনারের বর্ণনা অনুযায়ী, বাদশা নামে এক ব্যক্তি একটি ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে ২৫ হাজার টাকা তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় পারুল আক্তার ওরফে গোলাপী তাকে হ্যানিট্র্যাপ করার চেষ্টা করেন। বাদশাকে বিরক্ত করার এক পর্যায়ে বাদশা ওই নারীকেও ঘুষি মারে। তখন গোলাপীর সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাদশাকে কোপ দেন। বাদশা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা তাকে ধাওয়া করে। এই সময় সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে সন্ত্রাসীদের এ কোপানো এবং ধাওয়া দেওয়ার ভিডিও ধারণ করেন।
ভিডিও ধারণের ঘটনা সন্ত্রাসীরা টের পেয়ে তুহিনকে ভিডিও মুছে ফেলার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। তুহিন ভিডিও মুছে না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। তুহিন দ্রুত দৌড়ে একটি মুদি দোকানে আশ্রয় নেন, কিন্তু সন্ত্রাসীরা সেখানে তাকে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।
এই ঘটনায় জড়িত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ এবং একজনকে র্যাব-১ গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ কিছুটা হলেও এই ঘটনার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা স্বীকার করেছেন পুলিশ কমিশনার।
তিনি জানান, ভিডিও ক্লিপের সাহায্যে মোট আটজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে সাতজন গ্রেপ্তার হয়েছেন, বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। বিশেষ করে গ্রেপ্তার সন্ত্রাসী কেটু মিজানের বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা দায়ের রয়েছে।
পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, গাজীপুর মহানগরীতে জনবল প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এই কম জনবল নিয়েই এত বিশাল সিটি করপোরেশনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে হচ্ছে। তাই পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য সকলের প্রতি তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান, উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জাহিদ হোসেন ভূইয়া, মো. রবিউল হাসান, এস এম আশরাফুল আলম ও এস এম শফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
আমার বার্তা/এমই