ভারতে গানের রিয়েলিটি শো ‘ইন্ডিয়ান আইডলের’ সেরার মুকুট উঠলো মানসী ঘোষের মাথায়। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রোববার (৬ এপ্রিল) মুম্বাইয়ে এ শোয়ের ১৫তম সিজনের চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে শিরোপা জিতে পশ্চিমবঙ্গের নিমতার একটি সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা ২৫ বছর বয়সী মানসী ঘোষ পেয়েছেন ২৫ লাখ রুপি এবং গাড়ি।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মানসী বলেছেন, এই জয়ের আনন্দ কেমন সেটি বলার মত ভাষা তিনি পাচ্ছেন না।গানের এই রিলিয়েলিটি শোয়ের বিচারক ছিলেন শ্রোয়া ঘোষাল, বিশাল দাদলানি ও বাদশা। সঞ্চালনায় ছিলেন আদিত্য নারায়ণ। অতিথি ছিলেন মিকা সিং, শিল্পা শেঠি এবং রাভিনা ট্যান্ডন। এবারের ইন্ডিয়ান আইডলে দ্বিতীয় হয়েছেন শুভজিৎ ঘোষ এবং স্নেহা শঙ্কর নিজের নামটি নিয়েছেন তৃতীয় স্থানে।
গেল বছরের জুলাই মাস থেকে শুরু হওয়া এবারের সিজনে সেরা ১৫তে জায়গা করে নেয় ৭ জন বাঙালি। তারা হলেন শুভজিৎ চক্রবর্তী, বিশ্বরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়, মানসী ঘোষ, প্রিয়াংশু দত্ত, সৃজন পোরেল, রঞ্জিনী সেনগুপ্ত, ময়ূরী সাহা।
প্রতিযোগিতার নানা ধাপ পেরিয়ে সেরা ৫ এ পৌঁছান তিন বাঙালিই মানসী, শুভজিৎ ও প্রিয়াংশু। শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত পর্বের ফলাফলেও বাঙালিরা আধিপত্য ধরে রাখতে পেরেছে। প্রথম ও দ্বিতীয় পুরুস্কার উঠেছে দুই বাঙালি তরুণ তরুণীর হাতে।
কিংবদন্তী শিল্পী লতা মঙ্গেশকর ও ভীমসেন জোশীর গান শুনতে পছন্দ করা মানসী বলেন,‘অনেক চেষ্টা করেছি, পরিশ্রম করেছি। আমার পরিবার এখানে আছেন, বাবা মা এবং মাসি সবসময় আমার পাশে থেকেছেন। এটা এমন একটা জাতীয় প্ল্যাটফর্ম, যেখান থেবে জীবনটা বেশ ভালোভাবে বদলে গিয়েছে। এখান সবার থেকে ভালোবাসা এবং আশীর্বাদ পেয়েছি।’
বিচারকদের প্রতি ‘শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা’ জানিয়ে মানসী বলেন ‘আমি সবসময় বাদশা স্যার এবং বিশাল স্যারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলাম। শ্রেয়া ম্যামও খুব মিষ্টি এবং তিনি বিস্তারিত মন্তব্য করতেন যা আমার খুব পছন্দ হয়েছিল, কিন্তু বিশাল স্যার ভুলগুলো সরাসরি বলতেন আর যখনই তিনি আমার পরিবেশনা পছন্দ করেছেন, তিনিই প্রথম আমাকে দাঁড়িয়ে করতালি দিতেন।’
মানসীর কথায় এই অনুষ্ঠানটি তাকে কেবল গানের বিভিন্ন দিন নয়, বহু কিছু শিখিয়েছে।‘বিচারকদের কাছ থেকে কড়া মন্তব্য পেলেও, পরবর্তী পরিবেশনায় যেন সেটি ইতিবাচক ছাপ রাখে তা শিখেছি। আমি শিখেছি, যা কিছু ঘটে তা ভুলে গিয়ে কাজের উপর মনোযোগ দিতে হবে।’
পুরস্কারের টাকা নিজের পরিবার ও সংগীত চর্চাকে এগিয়ে নেওয়ার কাজে ব্যয় করতে চান মানসী। এরইমধ্যে সংগীত পরিচালক ললিত পণ্ডিতের সুরে ‘মন্নু কেয়া করেগা’ নামের বলিউডি সিনেমায় গায়ক শানের সঙ্গে প্লেব্যাক করেছেন মানসী। এছাড়া শিগগিরই তার গাওয়া একটি বাংলা গান প্রকাশ হতে চলেছে, যার সুরও করেছেন এই গায়িকা।
নিমতার পাইকপাড়ার বাসিন্দা মানসীর সংগীতে হাতেখড়ি চার বছর বয়স থেকে। এই তরুণী তার ১৩ বছর বয়সে স্টেজ শো করেছিলেন। পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ধীরে ধীরে স্টেজ শোয়ের সংখ্যা বাড়িয়েছেন মানসী। পাশাপাশি চলেছে পড়াশোনাও।
দমদমের ক্রাইস্ট চার্চ হাই স্কুল থেকে পাস করে শিয়ালদহ সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে ইংরেজিতে তিনি স্নাতক ডিগ্রি নিয়েছেন ২০২১ সালে। ওই বছরই সুপার সিঙ্গারে অংশ নিয়ে দ্বিতীয় হন মানসী। এখানেই তিনি থেমে যায়নি। গেল বছর জুলাইয়ে ইন্ডিয়ান আইডলের জন্য অডিশন দেন মানসী।
আমার বার্তা/এল/এমই