অত্যাবশ্যকীয় ৩৩ প্রকার ওষুধের দাম কমানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আ. সামাদ মৃধা। এ ছাড়া ইডিসিএল তৃতীয় প্রজন্মের জন্মনিরোধক পিল উৎপাদন ও আইভি ফ্লুইড প্ল্যান্ট চালু করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে ইডিসিএল কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির এমডি মো. আ. সামাদ মৃধা এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইডিসিএল দেশের একমাত্র ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, যারা সাধারণত সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করে। সংবাদ সম্মেলনে ইডিসিএলের এমডি মো. আ. সামাদ মৃধা বলেন, আগে এপিআই (ওষুধের মূল উপাদান) প্রকিউরমেন্ট নীতি অস্বচ্ছ ছিল। বর্তমানে সেগুলোকে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ন্যায়সংগত মূল্যে কেনা হচ্ছে। পাশাপাশি কোম্পানির অদক্ষ ও অপ্রয়োজনীয় জনবল কমিয়ে উৎপাদনক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে উৎপাদন খরচ কমে এসেছে এবং ৩৩টি ওষুধের দাম আগের তুলনায় শতকরা ৫০ ভাগ পর্যন্ত কমানো হয়েছে। দিকনির্দেশনাগুলো অটুট থাকলে আগামী ছয় মাসের মধ্যে অধিকাংশ ওষুধের দাম কমিয়ে ফেলা সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।
ইডিসিএলের এমডি বলেন, তাঁরা তৃতীয় প্রজন্মের জন্মনিরোধক পিল উৎপাদন শুরু করেছেন। প্রশাসনিক আনুষ্ঠানিকতা পূরণ করা হলে, তা সরকারকে সরবরাহ করা শুরু হবে। আইভি ফ্লুইড প্ল্যান্ট চালু করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ট্রায়াল রান করা হয়েছে। ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে সাধারণ স্যালাইন, কলেরা স্যালাইন উৎপাদন করে সরকারের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।
এমডি বলেন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা ও সরকারি চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের ধরন (প্রোডাক্ট লাইন) সাজানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে সত্যিকারের অতিপ্রয়োজনীয় ওষুধগুলো দ্রুত উৎপাদন করে পর্যায়ক্রমে সরকারের সম্পূর্ণ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। ইডিসিএলের নতুন দুটি প্ল্যান্ট হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্ল্যান্ট দুটি শুধু ওষুধ নয়, টিকা সরবরাহ এবং জীব-প্রযুক্তিনির্ভর পণ্য উৎপাদন করতেও সক্ষম হবে। ইডিসিএল শুধু সনাতনি ওষুধ নয়, ভবিষ্যতে সব ধরনের ওষুধ তৈরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
>> ছয় মাসে অর্জন
গত ছয় মাসে ইডিসিএলের উল্লেখযোগ্য অর্জন নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির এমডি বলেন, ৩৩টি ওষুধের দাম কমানো হয়েছে। বাকি ওষুধের দাম কমানোর কাজ চলছে। টোল ম্যানুফ্যাকচারিং (চুক্তিভিত্তিক উৎপাদন) অনেকাংশে কমিয়ে আনা হয়েছে এবং শিগগির কিছু মেশিন সংযোজনের মাধ্যমে সম্পূর্ণরূপে টোল বন্ধ করা হবে।
মো. আ. সামাদ মৃধা আরও বলেন, আইভি ফ্লুইডের প্ল্যান্ট চালু করা হয়েছে। সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তুলনামূলকভাবে কম দামে ওষুধের মূল উপাদান নেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত অযোগ্য ও অদক্ষ জনবল কমানো হয়েছে। ল্যাগ টাইম কমিয়ে কর্মঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। এতে উৎপাদনশীলতা বেড়েছে। ওভারটাইম কমিয়ে আনা হয়েছে, এতে কোম্পানির সাশ্রয় হচ্ছে। জনবলকে মোটিভেশনের মাধ্যমে কর্মমুখী করা হয়েছে। শ্রমিক কর্মচারী ও ইউনিয়নের সঙ্গে সুসম্পর্ক করে কাজের পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। ওষুধের গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সরকারি সাপ্লাই চেইনে উন্নতি হয়েছে।
আমার বার্তা/এমই