ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু বলে জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এক বিশ্লেষণে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
জাতিসংঘ জানায়, যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর এমন হামলার সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১৮ মার্চ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত অন্তত ৩৬টি পৃথক হামলায় নিহতদের সবাই নারী কিংবা শিশু।
গতকাল শুক্রবার ভোর থেকেই চালানো একাধিক বিমান হামলায় আরও অন্তত ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। অধিকাংশ হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল শরণার্থী শিবির, যেখানে সুরক্ষার আশায় আশ্রয় নিয়েছিলেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা।
আল-মাওয়াসি অঞ্চলের মতো জায়গাগুলোকে তথাকথিত ‘নিরাপদ অঞ্চল’ ঘোষণা করলেও, ইসরায়েল সেখানে মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে অন্তত ২৩টি হামলা চালিয়েছে। এসব হামলার বেশিরভাগই ঘরবাড়ি ও বাস্তুচ্যুত মানুষের তাবু লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে।
এই পরিস্থিতিকে ‘অমানবিক’ আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
তিনি বলেন, ‘এটা যদি বর্বরতা না হয়, তাহলে বর্বরতা আসলে কাকে বলে?’
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৮ মার্চ থেকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১ হাজার ৫৪২ জন।
অন্যদিকে গাজার সরকারের মিডিয়া অফিসের হিসাব বলছে, চলমান আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১৫ হাজার ৯৮১ জন। অনেক মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে থাকায় প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।
জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল। কিন্তু বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ।
আমার বার্তা/জেএইচ