ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদ এবং পাঞ্জাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মসজিদে আঘাত হেনেছে বলে অভিযোগ করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা। তাঁদের মধ্যে মুজাফফরাবাদের বাসিন্দা মুহাম্মদ ওয়াহিদ ও পাঞ্জাব প্রদেশের বাসিন্দা মুহাম্মদ ইউনিস শাহের সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সময়ের বর্ণনা দিয়েছেন তাঁরা।
মুজাফফরাবাদে ওয়াহিদের বাড়ি যেখানে, তার পাশেই বিলাল মসজিদ। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘প্রথমবারের বিস্ফোরণে আমার বাড়ি যখন কেঁপে ওঠে, তখন আমি গভীর ঘুমে। আমি দৌড়ে রাস্তায় বের হই, সেখানে আগেই অনেক মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। কী ঘটছে, আমরা সেটা বুঝে ওঠার আগেই আরও তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে, যার ফলে ওই এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।’
ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সেখানে নারীসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ওয়াহিদ বলেছেন, আহত ব্যক্তিদের কাছের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ওয়াহিদ আরও বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না, কেন আমাদের স্থানীয় মসজিদে হামলা চালানো হয়েছে। এটি বাড়ির কাছের খুবই সাধারণ একটি মসজিদ ছিল, যেখানে আমরা দিনে পাঁচবার নামাজ পড়তাম। আমি কখনো এটি ঘিরে কোনো ধরনের সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড দেখিনি।’
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুরিদকে শহরে একটি সরকারি স্বাস্থ্য ও শিক্ষা কমপ্লেক্সে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর সেখানে উদ্ধারকাজ চলছে। শহরটি লাহোর থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে। ছবি: এএফপি
স্থানীয় লোকজন এখন তাঁদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান ওয়াহিদ। তিনি বলেন, চরম অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
পাঞ্জাব প্রদেশের মুরিদকে শহরের বাসিন্দা ইউনিস শাহ বিবিসিকে বলেছেন, ভারতের ছোড়া চারটি ক্ষেপণাস্ত্র একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে আঘাত হেনেছে। এর মধ্যে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র পরপর এবং চতুর্থ ক্ষেপণাস্ত্রটি পাঁচ থেকে সাত মিনিট পর আঘাত হানে।
ইউনিস শাহ বলেন, হামলায় সেখানে একটি স্কুল, একটি কলেজ, একটি ছাত্রাবাস, একটি চিকিৎসাকেন্দ্র এবং পাশাপাশি একটি মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে একটি আবাসিক এলাকাও আছে, যেখানে কয়েকটি পরিবার বসবাস করত।
ইউনিস শাহ বলেন, উদ্ধারকর্মী, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। এলাকাজুড়ে ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ভারতের হামলার বিষয়ে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্রের বরাত দিয়ে দেশটির দৈনিক ডন বলেছে, পাঞ্জাবের মুরিদকেতে উম্মুলকুরা মসজিদে হামলায় তিনজন নিহত এবং একজন আহত হয়েছেন। আর মুজাফফরাবাদের বিলাল মসজিদে হামলায় তিনজন নিহত এবং দুই শিশু আহত হয়েছেন। কোটলির আব্বাস মসজিদও হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র ভারতের হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন। সূত্র : বিবিসি
আমার বার্তা/এমই