ই-পেপার সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

চীনা যুদ্ধবিমানে রাফাল কুপোকাত, প্রযুক্তি ও মিসাইলে নজর কাড়ছে চীন

আমার বার্তা অনলাইন
১১ মে ২০২৫, ১২:৪৮

গত ৬ মে রাত থেকে ৭ মে ভোর পর্যন্ত ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ বিমানযুদ্ধ সংঘটিত হয়। আকাশে উঠেছিল প্রায় ১২৫টি যুদ্ধবিমান — সংখ্যার দিক থেকে ভারত ছিল পরিষ্কারভাবে এগিয়ে।

কিন্তু যুদ্ধ শেষে, পাকিস্তান যখন দাবি করে যে তারা ভারতীয় বিমান বাহিনীর পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছে — যার মধ্যে ছিল তিনটি অত্যাধুনিক ফরাসি ‘রাফাল’ ফাইটার জেট — তখন পুরো বিশ্বজুড়ে সামরিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।

কারণ এই প্রথম, বাস্তব যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কোনও রাফাল ফাইটার গুলি করে ভূপাতিত করার ঘটনা ঘটল।

তবে পাকিস্তান কেবল শত্রুপক্ষের যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেই নজর কাড়েনি। দেশটির পক্ষ থেকে বড় চমক ছিল, তারা যে প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে — তা পুরোপুরি চীনা: যুদ্ধবিমান, মিসাইল, রাডার ও ইলেকট্রনিক ওয়্যারফেয়ার সিস্টেম সবই চীন-নির্মিত।

চীনা প্রযুক্তির বাস্তব যুদ্ধ পরীক্ষা

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এই লড়াইয়ের পর চীন ও পশ্চিমা দেশের সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভবিষ্যতের বৃহৎ শক্তির সংঘর্ষে যেসব অস্ত্র ব্যবহৃত হতে পারে, তার একটি বাস্তব নমুনা দেখা গেল এই যুদ্ধে।

এই সংঘাতের নানা ঘটনাও সামরিক বিশ্লেষকদের মাধ্যমে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করা হবে।

‘রাফাল বনাম চীনা যুদ্ধবিমান’: একটি যুগান্তকারী সংঘর্ষ

রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের (আরইউএসআই) ওল্টার ল্যাডউইগ বলেন, “অনেক বছর পর আমরা সত্যিকারের রাষ্ট্র-ভিত্তিক তথা এক রাষ্ট্রের সঙ্গে আরেক রাষ্ট্রের বিমানযুদ্ধ দেখলাম। এটি শুধু অস্ত্রের পরীক্ষা নয়, একটি যুদ্ধনীতিরও দৃষ্টান্ত।”

আকাশযুদ্ধে পাকিস্তানের জে-১০সিই যুদ্ধবিমান ভারতের বিমান বাহিনীর রাফাল ফাইটার জেট ভূপাতিত করেছে — এমন প্রমাণ সামনে আসার পর, চীনের যুদ্ধবিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান চেংদুর শেয়ারদর মাত্র দুইদিনে ৪০ শতাংশ বেড়ে যায়।

ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের সামরিক মহাকাশ বিভাগের সিনিয়র ফেলো ডগলাস ব্যারি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, “চীন, যুক্তরাষ্ট্র এবং বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের বিমান যুদ্ধ সংক্রান্ত সম্প্রদায়গুলো যতটা সম্ভব আসল সত্য — কৌশল, পাল্টা কৌশল, পদ্ধতি, কোন সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়েছিল, কোনটা কাজ করেছিল এবং কোনটা করেনি — তা বের করতে অত্যন্ত আগ্রহী হবে।”

চীনের জন্য সেরা বিজ্ঞাপন

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক স্টিমসন সেন্টারের চীনা সামরিক বিশ্লেষক ইয়ুন সান বলেন, “বাস্তব যুদ্ধে চীনা প্রযুক্তির এমন সাফল্য বেইজিংয়ের জন্য আনন্দের চেয়ে কম কিছু নয়।”

চীনা সামরিক উপকরণ এই প্রথমবার পশ্চিমা অস্ত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত হলো — এবং সেখানেও সফল হলো। ফলে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলো দ্রুত ভারত থেকে যুদ্ধের তথ্য চাইছে — বিশেষ করে জে-১০সিই’র রাডার ও ইলেকট্রনিক সিগন্যালের ডেটা — যাতে তারা নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আপডেট করতে পারে।

ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ: তাইওয়ান সংকটের পূর্বাভাস?

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়া প্রোগ্রামের অধ্যাপক সুশান্ত সিং বলেন, “এই যুদ্ধ ভবিষ্যতে তাইওয়ান বা অন্য কোনও সংঘাতে কী হতে পারে — তার প্রাথমিক ইঙ্গিতও বটে।”

চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের সাবেক সম্পাদক হু শিজিন দাবি করেন, “এই লড়াই দেখিয়েছে, চীনের সামরিক সরঞ্জামের উৎপাদন এখন রাশিয়া ও ফ্রান্সকেও ছাড়িয়ে গেছে। তাইওয়ানের এখন আরও আতঙ্কিত হওয়া উচিত।”

চীনা পিএল-১৫ মিসাইল: প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত

পাকিস্তানের উপপ্রধান বিমান কর্মকর্তা আওরঙ্গজেব আহমেদ নিশ্চিত করেছেন, এই যুদ্ধে পিএল-১৫ ধরনের বিভিআর (বিয়ন্ড ভিজ্যুয়াল রেঞ্জ) মিসাইল ব্যবহার করা হয়েছে।

এই মিসাইল, চীনের তৈরি এইএসএ (AESA) রাডারের সাহায্যে মাঝপথে পরিচালিত হয় এবং টার্গেটের কাছাকাছি এলে নিজস্ব রাডার দিয়ে অতি নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।

একটি “নো-এসকেপ জোন” তৈরি করে এই মিসাইল, যার কারণে শত্রুপক্ষ পালাতে পারে না। চীনা গবেষক ফ্যাবিয়ান হফম্যান বলেন, “এই প্রযুক্তি এমন যে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে দেওয়ার পর বিমানটি নিজে পালাতে পারে, কিন্তু মিসাইল টার্গেটে আঘাত হানবেই।”

পাকিস্তান এখন চীনা অস্ত্রের প্রদর্শন মঞ্চ

চীনা সামরিক গবেষক রিক জো বলেন, পাকিস্তান-ভারত এই সংঘর্ষ চীনের জে-১০সি এবং পিএল-১৫ মিসাইলের বিশ্বে গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে দিয়েছে।

স্টকহোম আন্তর্জাতিক শান্তি গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং আন্তর্জাতিক কৌশলগত গবেষণা ইনস্টিটিউটের মতে, পাকিস্তানের প্রায় ৮১ শতাংশ সামরিক সরঞ্জাম এখন চীনা এবং তাদের ৪০০টিরও বেশি বিমান বাহিনীর অর্ধেকই চীনা প্রযুক্তি নির্ভর।

এক সময় যেখানে চীন পাকিস্তানকে শুধু সাধারণ অস্ত্র দিত, এখন তারা জে-১০সি যুদ্ধবিমান ও অত্যাধুনিক মিসাইল সরবরাহ করছে।

ভারতের বিপরীতে চীনা জোগান দ্রুত ও কার্যকর

ভারত যদিও বিশ্বের সবচেয়ে বড় অস্ত্র আমদানিকারক দেশ, কিন্তু তারপরও তাদের প্রধান সরবরাহকারী রাশিয়া ও ফ্রান্স সময়মতো দিল্লিকে অস্ত্র সরবরাহ দিতে পারছে না। ফলাফল: ভারত এখনো পুরোনো মিগ-২১ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করছে। অথচ চীন পাকিস্তানকে স্বল্প সময়েই আধুনিক জে-১০সি ও মিসাইল দিয়েছে।

বর্তমানে পাকিস্তানই একমাত্র দেশ — চীন ছাড়া — যারা জে-১০সি যুদ্ধবিমান চালাচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর এই দেশটি ২০২০ সালে ৩৬টি জে-১০সিই ও ২৫০টি পিএল-১৫ই মিসাইল অর্ডার দেয়। ২০২২ সালে প্রথম ৬টি ডেলিভারি হয়, এখন পর্যন্ত ২০টি সক্রিয় সার্ভিসে আছে।

চীনের জে-১০সি যুদ্ধবিমানের প্রতি আগ্রহ প্রকাশকারী দেশগুলোর মধ্যে উত্তর আফ্রিকার দেশ মিসরও রয়েছে, অন্যদিকে মধ্য এশিয়ার দেশ উজবেকিস্তান তার বিমান বাহিনীর আধুনিকীকরণের জন্য রাফাল ফাইটার জেটের সাথে এর তুলনা করছে বলে জানা গেছে।

প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের সতর্কবার্তা

তবে সব বিশ্লেষকই একমত নন। কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ড. জেমস প্যাটন রজার্স বলেন, “চীনা গণমাধ্যম পড়লে মনে হবে তারা এখন বিশ্বসেরা — কিন্তু একটি সংঘর্ষ দিয়ে এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছানো ঠিক নয়।”

তিনি আরও বলেন, “চীনের সবচেয়ে বিপজ্জনক দিক হচ্ছে ইলেকট্রনিক ওয়্যারফেয়ার। জে-১০ যুদ্ধবিমান সম্ভবত রাফাল ফাইটার জেটের রাডার নষ্ট করে এবং তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়, যার ফলে পাইলটরা বাধ্য হয় নামতে বা ক্র্যাশ করে।”

এই বিষয়টাই পশ্চিমা দেশগুলোকে বেশি ভাবিয়ে তুলবে — কারণ এর অর্থ চীনের প্রযুক্তি রাশিয়ার মতো সীমাবদ্ধ নয়।

বিশ্ববাজারে চীনা অস্ত্রের নতুন সম্ভাবনা

রজার্স বলেন, “যেসব দেশ আগে থেকেই চীনা অস্ত্রের দিকে ঝুঁকছিল, তাদের জন্য এই যুদ্ধ একটি চূড়ান্ত প্রমাণ — এখন তারা রাজনৈতিকভাবে আরও সহজে এই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।”

তবে তিনি আরও বলেন, “অস্ত্র কেনা শুধু প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে না — বরং এটি রাজনৈতিক সম্পর্ক, খরচ, প্রযুক্তি স্থানান্তর, এসবের মিশ্রণও থাকে।”

তবুও ভারত ও পাকিস্তানের এই সংঘর্ষে চীনা অস্ত্রের বাস্তব পরীক্ষার ফলাফল সেসব অস্ত্রের ভাবমূর্তি নিঃসন্দেহে উজ্জ্বল করেছে।

আমার বার্তা/জেএইচ

ক্ষয়ক্ষতি যুদ্ধেরই অংশ: ভারতীয় বিমান বাহিনী

ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে কয়েকদিনের সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

ভারত চেয়েছিল শক্তি দেখাতে, কিন্তু প্রকাশ পেল দুর্বলতা

টানা কয়েকদিনের সংঘাতের পর গত ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন— ভারত ও

মধ্যপ্রাচ্য সফরে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

আগামী সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যে সফরে যাবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মধ্যপ্রাচ্যের তিন ধনী দেশ সৌদি আরব,

তুরস্কে পু‌তি‌নের স‌ঙ্গে বৈঠক কর‌তে যা‌চ্ছেন জে‌লেন‌স্কি

রাশিয়ার সঙ্গে চলা দীর্ঘ যুদ্ধের অবসান ঘটাতে আগামী বৃহস্পতিবার (১৫ মে) প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বাহরাইনের স্বাস্থ্য মন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশি দূতের বৈঠক

রপ্তানী খাতে দ্বিতীয় বছরের মতো নগদ প্রণোদনা কমানো হচ্ছে

স্বাস্থ্যখাতে শৃঙ্খলা ও জবাবদিহির প্রকট অভাব: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের সম্ভাবনা, সতর্কতা জারি

ক্ষয়ক্ষতি যুদ্ধেরই অংশ: ভারতীয় বিমান বাহিনী

কাঁঠাল খাওয়ার এই উপকারিতাগুলো জানেন কি

ফেসবুক-ইউটিউবে আ.লীগের পক্ষে কথা বললেই গ্রেপ্তার

চ্যাটজিপিটির কথায় বিবাহবিচ্ছেদের মামলা স্ত্রীর

হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল

দুর্নীতি-অনিয়ম সবচেয়ে বেশি উপদেষ্টা আসিফের মন্ত্রণালয়ে

ভারত চেয়েছিল শক্তি দেখাতে, কিন্তু প্রকাশ পেল দুর্বলতা

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে আন্তর্জাতিক নার্সেস দিবস-২০২৫ পালিত

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিতর্কে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল এনসিপি

নাটোরে বিএনপি অফিসে সেনাবাহিনীর অভিযান, অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ১

শুভাঢ্যা খাল খনন নিয়ে সুখবর দিলেন পরিবেশ উপদেষ্টা

‘বাটারফ্লাই স্কিন’ রোগে আক্রান্ত শিশুরা, লক্ষণগুলো কী কী?

৭ গোলের থ্রিলারে রিয়ালকে হারিয়ে শিরোপায় এক হাত বার্সার

মধ্যপ্রাচ্য সফরে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

তুরস্কে পু‌তি‌নের স‌ঙ্গে বৈঠক কর‌তে যা‌চ্ছেন জে‌লেন‌স্কি

সংবিধানেই স্বৈরতন্ত্রের শেকড়, সংস্কারে ঐকমত্য চান সব পক্ষ