গাজামুখী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার জাহাজ থেকে আটক কর্মীদের ইসরায়েলে নিয়ে যাচ্ছে দেশটির কমান্ডোরা। আটক কর্মীদের মধ্যে সুইডিশ পরিবেশবাদী আন্দোলনকারী গ্রেটা থুনবার্গও রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) এ তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সংস্থাটির দাবি, আটক সবাই ‘নিরাপদ ও সুস্থ আছেন’। তাদের ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, আটক ব্যক্তিদের ইউরোপে পাঠাতে ‘ডিপোর্টেশন প্রক্রিয়া’ শুরু করা হবে।
খবরে বলা হয়েছে, গত রাত থেকে ইসরায়েলি নৌ কমান্ডোরা ফ্লোটিলার অন্তত ৪৪টির মধ্যে ২১টি নৌযান আটক করেছে। এসব নৌযানে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর চেষ্টা চলছিল, যা অবরোধ ভাঙার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার অংশ।
>> গাজার জলসীমায় ফ্লোটিলার জাহাজ
জানা গেছে, ইসরায়েলের বাধা পেরিয়ে গাজার জলসীমায় ঢুকে পড়েছে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার একটি জাহাজ। পথে রয়েছে আরও ২৩টি। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা লাইভ ট্র্যাকার অনুযায়ী, মিকেনো নামে ওই জাহাজ বর্তমানে গাজার জলসীমায় অবস্থান করছে। তবে সেটি ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে পড়েছে কি না তা স্পষ্ট নয়।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে এ পর্যন্ত দুই শতাধিক কর্মী-সামাজিক আন্দোলনকারীকে বন্দি করেছে ইসরায়েল। গাজার অবরোধ ভেঙে মানবিক সাহায্য পৌঁছাতে যাওয়া এই বহরে ৪০টিরও বেশি জাহাজ ছিল।
এর আগে, ইসরায়েলি নৌবাহিনী ফ্লোটিলার জাহাজগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়, জলকামান ছুড়ে আক্রমণ চালায় এবং আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে কর্মীদের আটক করে।
তবে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা বলছে, এই বাধা তাদের মিশন থামাতে পারবে না। ইসরায়েলকে ফাঁকি দিয়ে গাজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সুমুদ ফ্লোটিলার অন্তত ৩০ জাহাজ। গাজা উপকূল থেকে আর মাত্র ৮৫ কিমি দূরে রয়েছে তারা।
সংগঠনটির ভাষ্যমতে, অবৈধভাবে চালানো ইসরায়েলি বাধা সত্ত্বেও তারা গাজার অবরোধ ভাঙতে এবং একটি মানবিক করিডর খুলতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তাদের দাবি, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় অনাহারে থাকা ফিলিস্তিনিদের জন্য এই নৌবহর খাদ্য ও মানবিক সহায়তা বহন করছে।
সুমুদ ফ্লোটিলার মুখপাত্র সাইফ আবুকেশেক ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক বার্তায় জানিয়েছেন, গাজামুখী সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে ৩৭ দেশের দুই শতাধিক কর্মীকে বন্দি করেছে ইসরায়েল।
তিনি বলেন, আটক হওয়া নৌযানগুলোতে ৩৭ দেশের ২০১ জন কর্মী ছিলেন। এর মধ্যে স্পেন থেকে ৩০ জন, ইতালি থেকে ২২ জন, তুরস্ক থেকে ২১ জন এবং মালয়েশিয়া থেকে ১২ জন অংশ নেন।
বাংলাদেশের শহিদুল আলম ছাড়াও সুমুদ ফ্লোটিলায় রয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক রুহি আক্তার রুহিও। শহিদুল আলম ‘কনশায়েন্স’ নামে একটি বড় জাহাজে রয়েছেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেটি আটক হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
ফ্লোটিলার অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে আন্তর্জাতিক পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী গ্রেটা থানবার্গকেও গ্রেফতার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ইসরায়েল বলছে, গাজাগামী এই নৌযানগুলো ‘আইনসম্মত নৌ অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করছে।’ তবে আন্তর্জাতিক আইনে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর অধিকার রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। নিরাপত্তার জন্য ফ্লোটিলার পক্ষ থেকে যাত্রাপথ সরাসরি ভিডিও সম্প্রচারও করা হচ্ছে। - সূত্র: আল-জাজিরা
আমার বার্তা/এমই