হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে সদ্য নিয়োগ পাওয়া বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারকে চেয়ারম্যান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
তিনি জানান, আমরা সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শক্রমে হাইকোর্টের দুজন বিচারপতি এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজকে নিয়ে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের কাজ সম্পন্ন করেছি। এ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন হাইকোর্টের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। এছাড়া সদস্য হিসেবে আছেন হাইকোর্টের আরেকজন বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
উপদেষ্টা বলেন, এর মাধ্যমে আমাদের আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যা করার ছিল এই বিচার কাজ শুরু করার ব্যাপারে, এটার একটা বড় ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। আমরা আশা করবো খুব শিগগির, অচিরেই বিচার কাজ শুরু হয়ে যাবে।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে সরকার নতুন যে ২৩ জন বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছে, এর একজন হলেন বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। তার জন্ম ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুর ইউনিয়নের হাসানপুরে ১৯৬০ সালের ১৫ জানুয়ারি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলএম পাস করেন।
গোলাম মর্তুজা মজুমদার ১৯৮২ সালে বিসিএস পাস করে ১৯৯৩ সালের ২০ এপ্রিল চাকরিতে যোগদান করেন। জেলা ও দায়রা জজের চাকরি থেকে ২০১৯ সালের ১৪ জানুয়ারি অবসর গ্রহণ করেন। দীর্ঘ চাকরি জীবনে ১৯ বছর জেলা ও দায়রা জজ ছিলেন।
এদিকে সন্ধ্যায় সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই বিপ্লবের গণহত্যার বিচার আগে করা হবে। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে, বাকি বিচারপতিরাও এই মাসের মধ্যেই বসতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করতে ২০১০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সেই ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ অনেক দিন ধরে বন্ধ ছিল। এর মধ্যেই গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকার। এই অভ্যুত্থান ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে হত্যা চালায়। সেই গণহত্যার বিচার ট্রাইব্যুনালে করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেই সরকারের প্রধান শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে ট্রাইব্যুনালে।
আমার বার্তা/এমই