বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক শহীদ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন আহমেদ বলেছেন, পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বকে নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছিল। আর এই ঘটনার বিচার চাওয়ায় গত ১৫ বছর ধরে শহীদ পরিবারের সদস্যদের নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কাছে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে অভিযোগ দাখিলের পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
রাকিন আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, পিলখানায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা হত্যা করা হয়েছিল শুধুমাত্র বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কিংবা বাংলাদেশ রাইফেলসকে ধ্বংস করা জন্য নয়। দেশের সার্বভৌমত্ব ধ্বংস করার জন্য এই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। সেদিন পিলখানার ভেতরে সেনা কর্মকর্তাদের যেভাবে মারা হয়েছে তা বলতে গেলে বুক কেঁপে উঠে। এই হত্যাকাণ্ডে কী ধরনের নির্মমতা আর বর্বরতা ছিল তা কল্পনাও করা যায় না।
তিনি বলেন, সেনা কর্মকর্তাদের মাত্র একটি অপরাধ ছিল। আর সেটি হলো- তারা বাংলাদেশকে ভালোবাসতো। তারা বাইরের ষড়যন্ত্র থেকে দেশকে রক্ষা করতো। আর আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সেই তারাই বাইরের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। গত ১৫ বছর আমাদের কি পরিমাণ নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তা আপনাদের ধারণার মধ্যেই পড়ে না।
রাকিন আহমেদ বলেন, আমরা চাই বিচারটা হোক। আমার বিশ্বাস আমাদের এবার বিজয় আসবেই। আর কোনো ষড়যন্ত্রকারী আমাদের থামিয়ে রাখতে পারবে না।
এসময় পিলখানা গণহত্যায় শহীদ সেনা অফিসারদের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বলেন, শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জাতীয় এবং রাষ্ট্রীয় স্বার্থবিরোধী রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে। পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুই শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) ধ্বংসের নীলনকশা প্রণয়ন করে। সেই লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সর্বপ্রথম শিকারে পরিণত হয় বাংলাদেশ রাইফেলসে তৎকালীন কর্মরত পেশাদার, সৎ-দক্ষ, মেধাবী ও দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর অফিসারদের একটি অংশ।
তারা বলেন, শেখ হাসিনা সেনাবাহিনীর এসব দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের নিজের স্বৈরশাসন পাকাপোক্ত করার লক্ষ্যে প্রথম ও প্রধানতম অন্তরায়-বিপত্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। তাই সেনা অফিসার এবং তাদের পরিবারের ওপর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সংঘটন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করার মাধ্যমে নিজের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছেন।
অপরদিকে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিলের পর শহীদ পরিবারের সদস্যরা আইন মন্ত্রণালয়ে আইন উপদেষ্টার কাছেও পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচারে কমিশন গঠনে দাবি জানাতে গিয়েছেন।
আমার বার্তা/এমই