বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় তৈরির বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ প্রস্তুতের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
শনিবার (১২ এপ্রিল) খুলনার একটি হোটেল ‘জুডিসিয়াল ইন্ডিপেন্ডেন্স অ্যান্ড এফিসিএন্সি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (ইউএনডিপি) যৌথ উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়।
প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন এবং তার ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ বাস্তবায়নের অগ্রগতির বিবরণ তুলে ধরেন।
তিনি উল্লেখ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সক্রিয়তার কারণেই দ্রুততম সময়ে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের জন্য অধ্যাদেশ প্রণয়ন সম্ভব হয়েছে। রোডম্যাপ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও অন্তর্বর্তী সরকার নিবিড়ভাবে কাজ করছে।
ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের সহযোগিতায় দেশের আদালতগুলোতে বিরাজমান মামলাজট নিরসনে বিভিন্ন স্তরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিচারকের পদ তৈরি হয়েছে, যা অদূর ভবিষ্যতে মামলাজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত তৈরির জন্য প্রাথমিক কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলে তিনি জানান। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কক্সবাজারে সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট দ্রুত চালু করার বিষয়ে দুটি বিশেষ কমিটি নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
জুলাই বিল্পবের পর বাংলাদেশের বিচার বিভাগ নতুন যাত্রা শুরু করেছে উল্লেখ করে ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘দেশের বিভাগীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারগুলো থেকে রোডম্যাপ বাস্তবায়নের বিষয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে এবং ওই মতামতগুলো অন্তর্ভুক্ত করে শিগগিরই বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দেশের বিচার বিভাগের সার্বিক আধুনিকায়নে একটি স্ট্রাটেজিক প্লান তৈরির কাজ শুরু করবে। ওই স্ট্রাটেজিক প্লানের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে জুলাই বিল্পবোত্তর বাংলাদেশের বিচার বিভাগ যে নতুন যাত্রা শুরু করেছে তা পূর্ণতা পাবে এবং জনগণ বিচার বিভাগের ওপর হারানো আস্থা ফিরে পাবে।’
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণসহ বিচারসেবা দিতে দক্ষতা বৃদ্ধিতে করণীয় সম্পর্কে আয়োজিত এই সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ আলী। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফান লিলার। এছাড়া বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার ও সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
আমার বার্তা/জেএইচ