
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান আপিল বিভাগকে জানিয়েছেন, এই সংশোধনীতে কিছু কিছু বিষয় থাকা দরকার, আর কিছু বিষয় পরবর্তী সংসদের হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শুরু হলে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এই মতামত তুলে ধরেন।
শুনানির এক পর্যায়ে ধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ অ্যাটর্নি জেনারেলকে জিজ্ঞেস করেন, জামায়াতের আইনজীবীর মতো রাষ্ট্রপক্ষও মনে করে কি না যে এখন শুনানি শেষ না করে তা মুলতবি রেখে পরবর্তী সংসদের হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত?
প্রধান বিচারপতি এ সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমরা আগের আপিল বিভাগের মতো কোনো রায় দিতে চাই না, যা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তিনি পরামর্শ দেন, কিছুদিন পরে নতুন আপিল বিভাগ গঠিত হবে, সেখানে শুনানি হলে কেমন হয়? অথবা শুনানিতে একটি দীর্ঘ মুলতবি করা হলে সব পক্ষই সুবিধা পেতে পারে।
উত্তরে অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, রাষ্ট্রপক্ষ চায় এই শুনানি শেষ হোক এবং আপিল বিভাগ থেকে একটি রায় আসুক। তবে প্রধান বিচারপতির মন্তব্যের পর ফের শুনানি শুরু করে অ্যাটর্নি জেনারেল পরে বলেন, তারা আজই এর শুনানি শেষ করতে চান।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পঞ্চদশ সংশোধনীর পুরো আইন ও এর কয়েকটি ধারার বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে দুটি রিট করা হয়েছিল। গত বছর ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি–সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনীর ২০ ও ২১ ধারাকে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করেন।
এছাড়াও হাইকোর্ট রায়ে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ, ৪৪(২) অনুচ্ছেদকে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করে বাতিল করে। তবে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন সম্পূর্ণ বাতিল না করে অন্য বিধানগুলোর বিষয়ে পরবর্তী সংসদ আইন অনুসারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুজন সম্পাদকসহ চারজন, নওগাঁর বাসিন্দা মো. মোফাজ্জল হোসেন এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল— মোট তিনটি আপিল করেছেন।
গতকাল শুনানিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শিশির মনির বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পুরো বাতিল হলে সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম বাদ পড়ে যেতে পারে এবং দেশে আবার বাকশাল ফিরে আসতে পারে।
আমার বার্তা/জেএইচ

