প্রায় ৮০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ৬১৫ কোটি টাকার টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও তার স্ত্রী আফরিন তাপসের বিরুদ্ধে পৃথক দুই মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (৫ জানুয়ারি) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে দুদকের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন। দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, শেখ ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে প্রায় ৭৩ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ, ২৭ ব্যাংক হিসাবে ৫৩৮ কোটি টাকা ও ৫ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তার স্ত্রী আফরিন তাপসের বিরুদ্ধে ৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকার বেশি অবৈধ সম্পদ, ৯টি ব্যাংক হিসাবে ৭০ কোটি ৮৯ লাখ ও ৩ লাখ ৯৫ হাজার মার্কিন ডলারের অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযোগ অনুসন্ধানে গত ৩ নভেম্বর হাজির হয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য সাবেক মেয়র তাপসকে তলব করেছিল দুদক। অভিযোগ ছিল টেন্ডার, ইজারা, নিয়োগ, দোকান বরাদ্দসহ অসংখ্য কাজ করেন তিনি আত্মীয়-স্বজন ও তার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
অভিযোগ, পুরো সংস্থায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দুর্নীতির রাজত্ব করেন তাপস। গত চার বছরে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দুর্নীতির দায়ে চাকরিচ্যুত করেন তিনি। তাদের চাকরিচ্যুত করেই নিজের আধিপত্য বিস্তার করছেন। ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে নিজেকে রীতিমতো ‘রাজা’ ভাবতে থাকেন শেখ ফজলে নূর তাপস। গত চার বছরে ভারী গাড়ির ১৪৩ জন চালক, ৬৬ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলী, ৭৭ জন হিসাব সহকারী, ২৭ জন রেভিনিউ সুপারভাইজার, ৩১ জন পরিচ্ছন্ন পরিদর্শক, ২০ জন স্প্রে-ম্যান সুপারভাইজারসহ বিভিন্ন বিভাগে সর্বমোট ৮৭৯ জন জনবল নিয়োগ দেন। যার মাধ্যমে কয়েকশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এর আগে গত ৮ অক্টোবর সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, তার স্ত্রী আফরিন তাপস শিউলি, ছেলে শেখ ফজলে নাশওয়ান এবং তাদের ব্যক্তিমালিকানাধীন স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
আমার বার্তা/এমই