অপ্রয়োজনীয় বড় প্রকল্প অনুমোদনের মাধ্যমে যাতে টেকসই ঋণ ব্যবস্থাপনা বাধাগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, যে কোনো বড় প্রকল্প অনুমোদনের আগে আমাদের দেখতে হবে যে, প্রকল্পটির চাহিদা যৌক্তিক কি-না, সেটি বাস্তবায়নযোগ্য কি-না ও দীর্ঘমেয়াদে তা কতটা উপকার বয়ে আনবে।
শুক্রবার গাজীপুরের একটি স্থানীয় হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘নেভিগেটিং পাবলিক ডেট ইন বাংলাদেশ’-শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। শনিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, এখন আমাদের কৌশলগুলোকে বাস্তবায়নে রূপ দিতে হবে। ঋণ ব্যবস্থাপনা শুধু সরকারের একক দায়িত্ব নয়, এটি সম্মিলিত দায়িত্ব। সেখানে কর্পোরেট খাত, বাংলাদেশ ব্যাংক, বন্ড মার্কেট ও বেসরকারি খাতেরও সম্পৃক্ততা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে রাজস্ব স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে। সব অংশীজনের নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন উপদেষ্টা।
এছাড়া তাৎক্ষণিক ও সমন্বিত ডেটা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘রিয়েল টাইম ডাটা ও প্রাতিষ্ঠানিক আন্তঃসংযোগ নিশ্চিত করা আমাদের ঋণ ব্যবস্থাপনার অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার।
অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছে অর্থ বিভাগের ‘স্ট্রেংথেনিং পাবলিক ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম টু এনাবল সার্ভিস ডেলিভারি (এসপিএফএমএস)’ প্রকল্প।
অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন-অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বিলকিস জাহান রিমি ও বিশ্ব ব্যাংকের লিড গভর্ন্যান্স স্পেশালিস্ট সুরাইয়া জান্নাত।
ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, সরকারি ঋণ ব্যবস্থাপনায় সফলতা আনতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের মধ্যে সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এই বিষয়ে কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে দ্রুত একত্রিত হতে হবে বলেও মত দেন তিনি।
অর্থ সচিব ড. খায়রুজ্জামান মজুমদার বলেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আমাদের ঋণ কৌশলে নতুন চিন্তাধারার সমন্বয় ঘটাতে হবে।
তিনি জানান, বৈদেশিক ঋণ প্রাপ্তির সুযোগ ক্রমশ কমে আসছে আর তাই এখন দেশের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। তিনি ঋণ ব্যবস্থাপনায় দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে অধিক সংখ্যক বিশেষজ্ঞ তৈরির ওপর জোর দেন।
কর্মশালায় প্রজেন্টেশন তুলে ধরেন-অর্থ বিভাগের ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব হাসান খালেদ ফয়সাল, যুগ্ম-সচিব মোহাম্মদ রাশেদুল আমিন, উপ-সচিব ফরিদ আহমেদ এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) অর্থনীতিবিদ অরিন্দম রায়।
অনুষ্ঠানে মডারেটর হিসেবে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, বাজেট ও সামষ্টিক অর্থনীতি সিরাজুন নূর চৌধুরী এবং অতিরিক্ত সচিব, সামষ্টিক অর্থনীতি-১ ড. জিয়াউল আবেদীন।
কর্মশালায় অর্থ বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিশ্বব্যাংকের প্রায় ৭৫ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।
আমার বার্তা/এমই