ফেলনা প্লাস্টিক জমা দিয়ে চিকিৎসা আর নিত্যপণ্য পাচ্ছে জনগণ। নগরীকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে এমনই এক অভিনব কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) মাদারবাড়ি ওয়ার্ড এ অবস্থিত সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন ও চট্রগ্রাম সিটি করপোরেশনের যৌথ উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে ২ লক্ষ কেজি পরিত্যক্ত প্লাস্টিক রিসাইকেল কর্মসূচি চালু হয়। এতে ফেলনা প্লাস্টিক জমা দিয়ে মেয়র ডা. শাহাদাতসহ উপস্থিত চিকিৎসকদের কাছ থেকে চিকিৎসা নেন প্লাস্টিক সংগ্রহকারীরা। অনেকে আবার প্লাস্টিকের বিনিময়ে পান সংসারের নিত্যপণ্য।
প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা স্থায়ীভাবে নিরসনে নাগরিকদের পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জন করার আহ্বান জানিয়েছেন মেয়র। ২ লাখ কেজি পরিত্যক্ত প্লাস্টিক রিসাইকেল করার লক্ষ্য নিয়ে যৌথভাবে কাজ করা সংস্থা দুটি গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এ পযন্ত ১ লাখ কেজি প্লাস্টিক রিসাইকেল করেছে। পরবর্তী ধাপে আরও ১ লাখ কেজি প্লাস্টিক রিসাইকেল করার উদ্দেশে এদিন উদ্বোধন করা হয় নতুন ধারণা- প্লাস্টিক রিটার্ন শপ এর। এতদিন শুধু প্লাস্টিক বোতল ও অন্যান্য হার্ড আইটেম সংগ্রহ করলেও নতুন এই প্রজেক্টে পলিথিনসহ সব ধরনের প্লাস্টিক নেওয়া হবে।
শুক্রবার সারাদিন এই সুপারশপে ১০০০ পরিবার প্লাস্টিকের বিনিময়ে নিত্যপণ্য বাজার করেছেন। পাশাপাশি ৫০০ মানুষ প্লাস্টিক জমা দিয়ে ডাক্তার দেখাতে পেরেছেন। জনসচেতনতা তৈরিতে সংগৃহীত প্লাস্টিক দিয়ে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে একটি ভাস্কর্য প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে, যার মাধ্যমে ১০ লাখ পর্যটককে সচেতন করা হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র বলেন, প্লাস্টিক আমাদের নগরীর পরিবেশের এক নম্বর শত্রু। এই শত্রুকে মোকাবিলার জন্য আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করা উচিত। তাই নগরবাসীকে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে, জনগণকে প্লাস্টিক দূষণ সম্মন্ধে সচেতন করতে এবং তাদের মধ্যে প্লাস্টিক রিসাইকেলকে জনপ্রিয় করতে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনকে সঙ্গে নিয়ে আমরা এ বছর ৬ মাসব্যাপী প্লাস্টিক রিটার্ন শপ কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। যেটি স্বেচ্ছাশ্রমে পরিচালিত হবে।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড ডিরেক্টর মো. জামাল উদ্দিন বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে আমাদের অস্তিত্বের হুমকি হচ্ছে প্লাস্টিক। নদীমাতৃক এই দেশের প্রাণপ্রবাহ বাঁচিয়ে রাখার পাশাপাশি প্লাস্টিক দূষণে বিপন্ন প্রাণীকূলকে রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি। এই পৃথিবীকে সম্পূর্ণ দূষণমুক্ত ও বাসযোগ্য রাখতে হলে সচেতনতা ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার বিকল্প নেই। এই প্রজেক্ট থেকে সংগৃহীত প্লাস্টিকসমূহ শতভাগ রিসাইকেল করার জন্য দেশের স্বনামধন্য রিসাইকেল কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সই করা হয়েছে। সংগৃহীত প্লাস্টিকের একটি অংশ দিয়ে জনসচেতনতা তৈরিতে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে নির্মাণ করা হবে প্লাস্টিকের ভাস্কর্য।
অনুষ্ঠানে চসিক কর্মকর্তা, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
আমার বার্তা/এল/এমই