ই-পেপার রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

আলোচনায় যুক্তরাজ্যের আগাম নির্বাচন

অলোক আচার্য :
২৫ মে ২০২৪, ১২:৫০

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ঘটনাটা যেন হঠাৎ করেই। এবার হঠাৎ করেই আগাম দেশটিতে আগাম নির্বাচনের ঘোষণাটাও যেন বিশ্ব রাজনীতিবিদদের একটু অবাকই করেছে। কারণ পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। দেশটিতে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও সুনাক এ বছরের ৪ জুলাই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট থেকে এই ঘোষণা আসে। ঋষি সুনাকের দল কনজারভেটিভ পার্টি গত ১৪ বছর ধরে দেশটির ক্ষমতায় রয়েছে। কিন্তু তাঁর দলের জনসমর্থনের অবস্থা এই মুহূর্তে তথবৈচ। সুনাক আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে নিজের সরকারের বিভিন্ন অর্জনের কথা তুলে ধরেন। এ ছাড়া ভোটারদের আশ্বস্ত করেন তাকে যদি ভোট দিয়ে প্রধামন্ত্রী বানানো হয় তাহলে তিনি ব্রিটেনের উন্নয়নে কাজ করবেন। তাঁর কিছু সিদ্ধান্তের কারণে তিনি সমালোচিত হয়েছেন। তবে প্রশ্ন উঠেছে এত আগেই নির্বাচনের যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে। এর মধ্য দিয়ে লেবার পার্টির দীর্ঘ সময় পর ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলেও অনেকে ধারণা করছেন। জনমত জরিপে এগিয়ে আছে লেবার পার্টি। ধারণা করা হচ্ছে, এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা লেবার পার্টিই হয়তো সরকার গঠন করবে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ব্যাপক জয় পেয়েছে সংসদে বিরোধী দলে থাকা লেবার পার্টি। দলটির নেতা স্যার কিয়ার স্টারমারও আগাম জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। ঋষি সুনাকের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে কিয়ার স্টারমার বলেন, নির্বাচন ভালোর জন্য পরিবর্তনের সুযোগ। এই নির্বাচনের জন্য দেশ অপেক্ষা করছে। এতেই বোঝা যায় ঋষি সুনাক বেশ চাপে ছিলেন।

এখন তাঁর প্রধান কাজইহবে নিজের ঘর গোছানো। অন্তত বিরোধী দলের আক্রমণে জায়গাগুলো মেরামত করা। এতে অবশ্য দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন। আচমকা এই সিদ্ধান্তে যে কিছুটা ধাক্কা তাঁর নিজ দলেও লেগেছে সেটাও স্বাভাবিক। আর্থিক নীতি বিষয়ক তীব্র সমালোচনার মুখে ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র ছয় সপ্তাহ পরই লিজ ট্রাস সরে দাঁড়ালে ক্ষমতায় আসেন ঋষি সুনাক। সে সময় ব্রিটেনের অর্থনীতি ব্যাপক চাপের মুখে ছিল। ঋষি সুনাক ব্রিটেনের একজন অভিজ্ঞ রাজনৈতিক। তিনি ২০১৫ সালে প্রথম উত্তর ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ার কাউন্টির রিচমন্ড এলাকার এমপি হন। থেরেসা মে’র সরকারের সময় তিনি স্থানীয় সরকার বিভাগে জুনিয়র মন্ত্রী হন। বরিস জনসনের সময় তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিফ সেক্রেটারি নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর বরিস জনসনের সরে দাড়ানোর পর লিজ ট্রাসের সাথে তিনিও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে থাকেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত লিজ ট্রাসকেই দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এবং ট্রাসের ক্ষমতা গ্রহণে স্বল্প সময়ের পরই ক্ষমতায় আসেন এই অভিজ্ঞ রাজনৈতিক। ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তিনি বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেন ব্রিটেনের অর্থনীতি ফেরানোর জন্য কারণ সেই সময় এটাই ছিল সবচেয়ে বড় দায়িত্ব এবং তিনি সফলও হয়েছিলেন। কারণ ব্রিটেনে মুদ্রাস্ফীতি দ্রুত গতিতে নামতে থাকে। গত বছরের অক্টোবরে দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি নেমে যায়। সুতরাং মুদ্রাস্ফীতি কমানোর বিষয়টি একটি বড় সাফল্য হিসেবে তিনি দেখাতে পারেন। এমনকি গত তিন বছরের মধ্যে দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌছেছে। অর্থাৎ জনগণের উপর থেকে বাড়তি ব্যয়ের বোঝা হালকা হয়েছে। গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম কমে যাওয়ায় এপ্রিল মাসে দেশটির মূল্যস্ফীতির হার ২ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে এসেছে; আগের মাস অর্থাৎ মার্চে যা ছিল ৩ দশমিক ২ শতাংশ।

বিবিসির সংবাদে বলা হয়, এপ্রিল মাসে যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি এক ধাক্কায় প্রায় ১ শতাংশীয় পয়েন্ট কমলেও তা এখনো ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের লক্ষ্যমাত্রা ২ শতাংশের বেশি, যদিও খুব একটা বেশি নয়। এই সুবিধাটুকু জনগণের কাছে প্রচার হিসেবে ব্যবহার করার সময় তিনি পাবেন আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো মূল্যস্ফীতির রাশ টানতে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড গত কয়েক বছরে নীতি সুদহার বাড়িয়েছে। বর্তমানে তাদের নীতি সুদহার ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ; গত ১৬ বছরের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। তবে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড ইঙ্গিত দিয়েছে, চলতি গ্রীষ্মকালে নীতি সুদহার কমানো হতে পারে। সেই সময় ঋষি সুনাক বলেছিলেন, ‘মূল্যস্ফীতির এই পরিসংখ্যান অর্থনীতির জন্য বড় সংবাদ। এখন যদি আমরা সব মানুষের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সুযোগ বৃদ্ধির পরিকল্পনায় অটুট থাকি, তাহলে সামনে উজ্জ্বল দিন।’ এই ভালো পরিস্থিতিতেও তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এটাও এক ধরনের আগাম সুদৃঢ় পরিকল্পনা বলেই অনেকে মনে করছেন। এবার ফিরে যাওয়া যাক যখন ঋষি সুনাক তার ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন সেই সময়ে। বিশ^ অর্থনীতি তখন বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পরে। যদিও সেই সংকট এখনও কাটেনি। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই সংকট বেশি হয়েছিল। গত ৪১ বছরের মধ্যে সেখানে বাড়িঘরের বিদ্যুৎ বিল এবং খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে যুক্তরাজ্যের মুদ্রাস্ফীতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। বৈশি^ক অর্থনৈতিক দুর্দশার মধ্যেই ১৯৮০ সালের পর দেশটিতে খাদ্যের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছেছে। দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। বেকারত্ব বাড়তে থাকে এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পায় কয়েকগুণ। ঋষি সুনাক ছিলেন যুক্তরাজ্যের প্রথম এশীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রী। তাকে মূলত দুটি বিষয় দেখেছেন। এক. ব্রিটেনের রাজনৈতিক টানাপোড়েন যা তার নিজ দলের মধ্যেই গেঁথে আছে এবং দুই. দেশের অর্থনীতি মোটামুটি জনগণের জীবনের সহনীয় মাত্রায় নিয়ে যাওয়া। বলা হচ্ছিল এই দুটি বিষয়ের ওপর তার রাজনৈতিক ভবিষ্যতও নির্ভর করছে। এখন দল থেকে মনোনয়ন পেতে এবং দলকে শক্তিশালী করতে তাকে কাজ করতে হবে।

যদি অর্থনীতির এই বিষয়টি একটি বড় সফলতা হিসেবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হন তাহলে তিনি যে পুনরায় প্রধানমন্ত্রীত্বের দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন তা অনুমেয়। যদিও তাঁর অভিবাসী নিয়ে কিছু সিদ্ধান্ত বা কর্মকান্ড সমালোচিত হয়েছে। ঋষি সুনাক সম্প্রতি অবৈধ অভিবাসন রুখতে হাউস অফ কমন্সে একটি ফাইভ পয়েন্ট প্ল্যান বা পাঁচ দফা কর্মসূচি প্রকাশ করেন। এই কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে একটি নতুন স্থায়ী সমন্বিত ছোট নৌকার উপর কার্যকর আদেশের সূচনা করা, অভিবাসন আধিকারিকদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে প্রয়োগের উপর মনোনিবেশ করা, আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য হোটেল ব্যবহার বন্ধ করে খরচ কমানো, অ্যাসাইলাম কেসওয়ার্কারের সংখ্যা বৃদ্ধি করা এবং ইংল্যান্ডে আগত অভিবাসীদের আলবেনিয়াতে ফেরত পাঠানোর ঘটনাকে ত্বরান্বিত করার জন্য দেশটির সঙ্গে একটি নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করা। যদিও নিজের সিদ্ধান্ত কি ফল বয়ে আনতে পারে তাঁর উপর অথবা তাঁর দলের উপর সেটি তিনি জানতেন। ২০২৩ সালের শুরুতে ছোট নৌকার মোকাবিলাকে তাঁর অগ্রাধিকারের অন্যতম হিসাবে ঘোষণা করে। ২০২২ সালে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ৪৫,০০০ এরও বেশি লোক যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করে। যা ২০১৮ সালে মাত্র ৩০০ ছিল। তিনি অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ারও ঘোষণা করেছিলেন। অনেক নাটকীয় পরিবর্তনের পর একটু দীর্ঘস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক যুক্তরাজ্যের ক্ষমতায় এসেছিলেন। এখন আগাম নির্বাচনের ঘোষণায় নির্বাচনে নতুন কেউ আসতে পারেন অথবা জনগণ ঋষি সুনাকেও উপর ভরসা রাখতেও পারেন।

লেখক : শিক্ষক ও কলামিস্ট

আমার বার্তা/জেএইচ

প্রবাসী আয়ের উপর বহুলাংশে নির্ভরশীল বাংলাদেশ

বাংলাদেশ সরকার প্রবাসী আয়ের উপর প্রত্যক্ষভাবে বহুলাংশে নির্ভরশীল।তবে সদ্য শেষ হওয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রায়

দাবিদাওয়া থাকতেই পারে কিন্ত এসব এখনই নয়

চলতি বছরের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয়েছিল সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে।

বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে বন্যার ভয়াবহতা

বাংলাদেশের অবস্থান গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ এলাকায় হওয়ায় এবং বাংলাদেশের উপর দিয়ে বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত বিভিন্ন উপনদীর কারণে

গুণী শিক্ষার্থীদের মুখে গুণী শিক্ষকের মূল্যায়ন

# প্রধান উপদেষ্টার ক্লাসমেট শিক্ষক বিমল বড়ুয়াকে নিয়ে গুণী শিক্ষার্থীদের অব্যক্ত কথামালা মানুষ মাত্রেই কোন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

তারাবো বিএনপির সমাবেশে শত শত নেতাকর্মী নিয়ে যুবদল নেতা আফজাল কবির ও আরিফ

কোনাবাড়ীতে ছাত্রকে গুলি করে হত্যা মামলায় কনস্টেবল গ্রেপ্তার

হাসিনাকে নিয়ে ইউনূসের সাক্ষাৎকার ভালোভাবে নেয়নি ভারত

রূপগঞ্জে সন্ত্রাস চাঁদাবাজি নৈরাজ্য ঠেকাতে বিএনপির সমাবেশ

হোমনায় মা-ছেলেসহ তিন জনকে হত্যা করেন সুমন

নিম্ন আদালত মনিটরিংয়ের দায়িত্বে হাইকোর্টের ১৩ বিচারপতি

গোপালগঞ্জের আ.লীগ নেতা ভারতে গ্রেপ্তার

রূপালী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় ব্যবসায়িক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

এখনো কাজে না ফেরা পুলিশ সদস্যদের বাদ দিয়ে নতুন নিয়োগের দাবি

দেশের প্রকৃত রিজার্ভ ২০.৫০ বিলিয়ন ডলার: গভর্নর

জবির ছাত্রী হলে ৯ ছাত্রলীগ কর্মীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

ডেঙ্গুতে আরো ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৪০৩

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা ও নতুন দৃষ্টিকোণ

একাত্তরের মীমাংসিত বিষয় নিয়ে বিতর্কের সুযোগ নেই: রব

গজারিয়ায় অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন, হুমকির মুখে নয় গ্রাম

আরএমপির দায়িত্ব নিলেন নতুন কমিশনার আবু সুফিয়ান

বিদেশে পালানোদের ফেরাতে আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠার পরামর্শ

এখনও উদ্ধার হয়নি লুট হওয়া ১৮৮৫টি অস্ত্র ও ৩ লাখ গোলাবারুদ

স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, শিশুকন্যাকেও ছাড়ল না বাবা!

পৃথিবীতে নির্মিত প্রথম মসজিদ নিয়ে যা বলেছেন প্রিয়নবী সা.