বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জাতীয় সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতিতে স্থির আছেন বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বহুল আলোচিত পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন প্রশ্নে তিনি বলেন, জনগণের সমর্থন নিয়ে নির্বাচিত হয়ে সংসদে এসে আইন পাস করার মাধ্যমেই এই পদ্ধতি নির্বাচন প্রক্রিয়ার অংশ হতে পারে।
একটি জাতীয় দৈনিককে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে শঙ্কা আছে কিনা, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে শঙ্কার কোনো কারণ দেখছি না। বৈঠকে যে কথা হয়েছে, সেখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার মতো কোনো সন্দেহও নেই। বিশ্বাস থাকতে হবে। বিশ্বাসহীন একটা জাতি চলতে পারে না। কেউ যদি বিশ্বাসভঙ্গ করে, সেটা তার সমস্যা, বিএনপির সমস্যা না।
আগামী নির্বাচনে জোট গঠন নিয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, ‘জোট থেকে সরে আসার কোনো প্রশ্নই আসে না। বিএনপির সঙ্গে প্রথমে ৪২টি দল যোগ দেয়, পরে আরও ১০টি দল আসে। সব মিলিয়ে ৫২-৫৩ দলের নেতারা আমাদের সঙ্গে রাজপথে কষ্ট করেছেন, কারাগারে গেছেন। তাদের অনেক ত্যাগ রয়েছে। আমরা বড় দল বলে সবকিছু নিয়ে নেব, এটা হতে পারে না। তাদের আমরা মূল্যায়ন করব।’
‘শুরু থেকেই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের কথা বলে আসছেন। এখনো তিনি ওই প্রতিশ্রুতিতে স্থির আছেন। রাজনীতিতে সততা থাকা জরুরি’
এক সময়ের নির্বাচনী জোটের সঙ্গী জামায়াতে ইসলামী প্রসঙ্গে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামী ছিল না। আমরা বলেছি, ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে যারা ছিল, তাদের নিয়ে জাতীয় সরকার গঠিত হবে।
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে ইসলামী দলগুলোর দাবির বিষয়ে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, প্রত্যেক দলের কথা বলার অধিকার আছে। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ। সব দল যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তাহলে আগামী নির্বাচনে এটা (পিআর পদ্ধতি) জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হবে। জনগণ সমর্থন দিলে সংসদে এসে আলোচনা করে আইন পাস করাতে হবে। ৫-১০ জন বিজ্ঞ মানুষ একসঙ্গে বসে দেশের মানুষের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার অধিকার নেই।
আমীর খসরু বলেন, ৫ আগস্টের পর এখন মানুষ অনেক বেশি সচেতন। তাদের মনোজগতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। যেসব রাজনীতিবিদ এটা বুঝতে পারবেন না, তাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। কারণ মানুষ এখন রাজনীতিবিদদের বডি ল্যাংগুয়েজ, কথা-বার্তা এবং চোখের ভাষাও খেয়াল করছে। অগ্রহণযোগ্য কিছু করলে স্মার্ট-ইয়াং ছেলেমেয়েরা তা মেনে নেবে না।
সংসদে উচ্চকক্ষ নিয়ে বিএনপির অবস্থান ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, উচ্চকক্ষে যোগ্যতা অনুযায়ী নবীন-প্রবীণের সমন্বয় থাকবে। যাদের টাকাপয়সা নেই, পেশিশক্তি নেই, কোনো না কোনো সেক্টরে বিস্তর অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং স্বীকৃতি পেয়েছেন তাদের উচ্চকক্ষে জায়গা দেওয়া হবে। দেশ ও রাজনীতিতে তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো হবে। নিম্নকক্ষের মতো উচ্চকক্ষের বিতর্কটা আরও একটু উন্নত হবে।
আমার বার্তা/এমই