পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় দানায় পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে দেশের সব সমুদ্রবন্দরে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। ঘূর্ণিঝড়ের ফলে দেশের উপকূলে কোথাও কোথাও এরই কালো মেঘ জমে বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এটি অতিপ্রবল না হলেও প্রবল ঘূর্ণিঝড় হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় দানার অগ্রভাগ ভারতের উপকূল দিয়ে অতিক্রম করার আশঙ্কা থাকায় বাংলাদেশে এর প্রভাব কিছুটা কম থাকতে পারে। তবে আঘাত হানলে বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চলের ওপর দিয়ে সেটা যেতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম বলেন, এটি আসলে নির্ভর করে ঘূর্ণিঝড়টি কোনদিকে যাবে। এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ের সেন্টার উড়িষ্যা আর পশ্চিমবঙ্গের মাঝামাঝি জায়গা দিয়ে যাবে। ঘূর্ণিঝড় মূলত তার চারপাশেই শক্তি ছড়ায়। এটির ডানপাশে ৫০০ কিলোমিটার প্রভাব ফেললে আমাদের খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। আবার ঘূর্ণিঝড়টির সেন্টার যদি উড়িষ্যার দিকে যায় তাহলে শুধু খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলে প্রভাব ফেলবে।
ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি নরমাল থাকবে আশা করি। ঘূর্ণিঝড়টির বেশিরভাগ অংশ যদি উড়িষ্যার দিকে থাকে তাহলে আমাদের দেশে কম প্রভাব পড়বে। আবার পশ্চিমবঙ্গের দিকে হলে একটু বেশি পড়বে। সেটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে বোঝা যাবে। ধারণা করা যাচ্ছে কিছুটা আম্ফানের মতো হতে পারে।
আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উপকূলে আঘাত করলেও এর প্রভাব ভালোভাবে পড়বে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোর ওপরে।
আবহাওয়াবিদ জেবুন্নেছা বলেন, এবারের ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বা উড়িষ্যা দিয়ে স্থলভাগ অতিক্রম করবে। তবে কাছাকাছি এসেও অনেক সময় গতিপথ পরিবর্তন হতে পারে। তবে খুলনা ও বরিশালে বেশি প্রভাব ফেলতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত আমাদের এদিকে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা কম দেখছি। বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার সকালে এর শক্তি সম্পর্কে বোঝা যাবে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত সারাদেশে কম-বেশি বৃষ্টি হতে পারে।
আমার বার্তা/জেএইচ