বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) একমাত্র অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দীনকে উপাচার্যের একক স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তে বেআইনিভাবে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল থেকে বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে বরিশাল টাউন হলের সম্মুখে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ছাত্র-শিক্ষক ও সুধীজনেরা।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) বেলা ১১টায় বরিশাল শহরের প্রাণকেন্দ্র অশ্বিনীকুমার টাউন হলের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সমাবেশে বরিশালের বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থী এবং সুধীজনেরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরাও উপস্থিত হয়ে সংহতি প্রকাশ করেন।
মনববন্ধনে বরিশাল ব্রজমোহন কলেজের (বিএম) সহযোগী অধ্যাপক মহিউদ্দিন চৌধুরী, কবি আসমা চৌধুরী, কথা সাহিত্যিক ও গবেষক সাইফুল আহসান বুলবুল ও অধ্যাপিকা কামরুল আহসান বুলবুল উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে উপাচার্যের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলমান রয়েছে। স্বৈরাচারের দোসর রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে অপসারণসহ চার দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা ।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে উপস্থিত ছিলেন রাকিবুল ইসলমা রকি, রাকিন খান ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রেজা শরীফ।
সহযোগী অধ্যাপক মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, একজন অধ্যাপককে এমনভাবে উপাচার্য একক সিদ্ধান্তে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল থেকে বাদ দিতে পারেন না। তাছাড়া অধ্যাপক মুহসিনকে অব্যাহতি দিয়ে যে হীন চিঠি দেওয়া হয়েছে সেটি সত্যি অপমানজনক। কোনো শিক্ষককে অফিসিয়ালভাবে এমন চিঠি কেউ দিতে পারে? আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হলো যে মানুষটি জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন তাকে স্বৈরাচারের দোসর অ্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়টির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি, সাথে অতিদ্রুত অধ্যাপক মুহসিন উদ্দীনকে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলে স্বপদে বহাল করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাকিন খান বলেন, আমাদের শিক্ষককে অপমাণিত করে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল থেকে বাদ দিয়েছেন উপাচার্য। উপাচার্য স্বৈরাচারের দোসরদের নিয়ে বিভিন্ন অন্যায় অপরাধ করছেন তারই প্রতিবাদ করায় মুহসিন স্যারকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে সিন্ডিকেট থেকে।
কবি সাইফুল ইসলাম বুল বুল বলেন, একজন শিক্ষাবিদকে অন্যায়ভাবে যে অপমাণিত করা হয়েছে আমরা এটাকে কোনোভাবেই মেনে নেব না। তাকে দ্রুত সম্মানের সাথে স্বপদে বহাল করার দাবি জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিন নির্দেশিত রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক নোটিশে অধ্যাপক অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীনকে স্বৈরাচারের দোসরসহ নানা অভিযোগ তুলে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং চার দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন আরও জোরালো হচ্ছে দিনে দিনে। শিক্ষার্থীরা বলছেন তাদের দাবি মানা না হলে আরও তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
আমার বার্তা/এমই