সরাসরি বুড়িমারী থেকে ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস’ চালুর দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে লালমনিরহাট। সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকাল থেকে স্থানীয়রা হাতীবান্ধা মেডিকেল মোড়ে মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করেছেন। এর ফলে দূরপাল্লার বাস ও ট্রাকসহ সব ধরনের ভারী যান চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। তবে ছোট আকারের যান চলাচল এখনো অব্যাহত রয়েছে।
অবরোধকারীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য এই অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের স্পষ্ট দাবি, বুড়িমারী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকা রুটে সরাসরি বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনের চলাচল শুরু না হওয়া পর্যন্ত তারা সড়ক অবরোধ করে রাখবেন।
উল্লেখ্য, গত ২১ এপ্রিল থেকে একই দাবিতে হাতীবান্ধা-পাটগ্রামের সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে রেখেছেন স্থানীয়রা। এর ফলে লালমনিরহাট-বুড়িমারী রুটের চারটি উপজেলায় গত আট দিন ধরে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১২ মার্চ বুড়িমারী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস’ আন্তঃনগর ট্রেনটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। তবে উদ্বোধনের প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ট্রেনটি সরাসরি বুড়িমারী স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়নি। এই পরিস্থিতিতে পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলার সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
আন্দোলনকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ট্রেনটির নামকরণ ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস’ হলেও এটি বুড়িমারী স্টেশন থেকে চলাচল না করায় স্থানীয় জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। তারা অবিলম্বে বুড়িমারী রেলওয়ে স্টেশন থেকে সরাসরি ঢাকা রুটে ট্রেনটির চলাচল শুরুর জোর দাবি জানান। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
আজকের অবরোধে স্থানীয় বিএনপি নেতা সায়েদুজ্জামান কোয়েল, আব্দুর রাজ্জাক সবুজ, সাংবাদিক ফারুক হোসেন নিশাত, ফিরোজ হোসেন, শামসুল আলম বুলেট এবং হাতীবান্ধা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বক্তব্য রাখেন এবং অবরোধের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন জানান। তাদের বক্তব্যে অবিলম্বে জনগণের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
এই অবরোধের ফলে মহাসড়কের উভয় পাশে বহু দূরপাল্লার বাস ও ট্রাক আটকা পড়েছে এবং যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে, তবে অবরোধকারীরা তাদের অবস্থানে অনড় রয়েছেন। এখন দেখার বিষয়, স্থানীয়দের এই আন্দোলন কত দূর গড়ায় এবং কবে নাগাদ তাদের দাবি পূরণ হয়।
আমার বার্তা/জেএইচ