পঞ্চগড় সীমান্তে রাজু ইসলাম (২৯) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি রাজু ইসলামের মৃত্যু হয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে। তবে বিএসএফের গুলিতে কারো নিহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
রোববার (১৫ জুন) দুপুরে পুলিশ নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
এর আগে, শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঝুলিপাড়া সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রাজু ইসলাম ওই এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শনিবার দিবাগত রাতে সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঝুলিপাড়া সীমান্ত দিয়ে কয়েকজনের সঙ্গে গরু আনতে যান রাজু। এ সময় বিএসএফ তাদের ধাওয়া করে। পরে পালিয়ে আসার সময় বিএসএফ গুলি করলে রাজুর দুই পায়ের হাঁটুতে গুলি লাগে। পরে রাজুর সহযোগীরা তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়ির বাইরে রেখে পালিয়ে যান। এ সময় রাজুর চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা বাইরে আসেন। তারা আহত অবস্থায় রাজুকে অ্যাম্বুলেন্সে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য হাসিবুল ইসলাম বলেন, সকাল ৬টার দিকে স্থানীয় বাসিন্দারা আমাকে ফোন করে বলেন রাজু ভারতে গরু আনতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে মারা গেছেন। রাত ৩টার দিকে রংপুরে নিয়ে যাওয়ার সময় দেবীগঞ্জের কাছাকাছি গেলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। পরে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। তার এক ছেলে, দুই মেয়ে এবং অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আছে।
হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ইউপি) সাইয়েদ নুর-ই-আলম বলেন, রাজুর বাবা-মা আমাকে বলেছেন, রাজু রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়িতে ছিলেন। তিনি কখন গেছেন এটা তারা পরিবারের লোকজন কিছুই বলতে পারেন না। আহত অবস্থায় তাকে কে বা কারা রেখে গেছেন এ ব্যাপারেও তারা কিছুই বলতে পারেন না।
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শইমী ইমতিয়াজ বলেন, আমরা রাজুর দুই পায়ে সুস্পষ্টভাবে গুলির চিহ্ন পেয়েছি। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে আমরা মামলা করবো।
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বলেন, আমরা এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেছি, তারা কেউ কোনো গুলির শব্দ শোনেননি। সেখানে আমাদের টহল টিম ছিল, তারাও কোনো ধরনের গুলির শব্দ শোনেনি। বিএসএফের সঙ্গে কথা বলেছি, তারাও কোনো গুলির ঘটনার কথা বলেনি।
আমার বার্তা/এমই