
রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা মূল্যের ইয়াবাসহ দুইজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০। পাশাপাশি মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলও জব্দ করা হয়েছে। র্যাবের ধারাবাহিক মাদকবিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই অভিযান পরিচালিত হয় বলে জানানো হয়েছে।
র্যাব-১০ সূত্রে জানা যায়, মাদকবিরোধী অভিযান ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাদক কেনাবেচা নিয়ন্ত্রণে সংস্থাটি নিয়মিত কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ২৪ নভেম্বর ২০২৫, বিকেল আনুমানিক ৫টা ৫ মিনিটে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল রামপুরা থানাধীন খিলগাঁও এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এসময় সন্দেহজনক অবস্থায় দুই ব্যক্তিকে আটকের পর তল্লাশি চালিয়ে তাদের কাছে ৪৬০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার হওয়া দুই ব্যক্তির নাম- শেখ এহসানুল কবির রিংকু (৩০) এবং শহিদুল ইসলাম রাকিব (৩২)। র্যাব জানায়, রিংকুর বাড়ি লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জে এবং রাকিবের বাড়ি শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায়। তারা পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী এবং দীর্ঘদিন ধরে দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা মাদকের বড় চক্রের সাথে জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করেছে।
অভিযান শেষে মাদকসহ তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও জব্দ করা হয়, যা নিয়মিত ইয়াবা পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হতো বলে ধারণা করছে র্যাব। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে রামপুরা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে এবং পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। র্যাব জানায়, গ্রেফতার হওয়া রিংকুর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি এবং রাকিবের বিরুদ্ধে পূর্বে একটি মাদক মামলা রয়েছে।
র্যাব-১০ এর কর্মকর্তারা জানান, মাদক শুধু ব্যক্তি বা পরিবার নয়, পুরো সমাজের জন্য হুমকি। এটি তরুণ প্রজন্মকে বিপথে ঠেলে দিচ্ছে এবং অপরাধ প্রবণতা বাড়িয়ে দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকিতে ফেলছে। তাই মাদক নির্মূলে “জিরো টলারেন্স” নীতি অনুসরণ করে র্যাব সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করছে। মাদক, অস্ত্র, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, নিয়মিত অভিযান, সচেতনতা বৃদ্ধি ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলে মাদক নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। সেই লক্ষ্যে র্যাব জনগণের সহযোগিতা কামনা করেছে এবং সন্দেহভাজন কার্যক্রম দেখলে তথ্য দিতে আহ্বান জানিয়েছে।
এই অভিযানের মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো-সক্রিয় নজরদারি, গোয়েন্দা তথ্য ও সমন্বিত উদ্যোগ থাকলে মাদক ব্যবসায়ীদের ধরা সম্ভব। র্যাব-১০ আশাবাদী, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সাধারণ মানুষের যৌথ প্রচেষ্টায় মাদকমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

