ইউএস স্টিল ও জাপানের নিপ্পন স্টিলের মধ্যে অংশীদারিত্ব একটি নতুন পর্যায়ে পৌঁছেছে। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চয়তার পাশাপাশি ‘গোল্ডেন শেয়ার’ সুবিধাও যুক্ত হয়েছে, যা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের মাধ্যমে প্রাপ্ত হয়েছে।
নিউইয়র্ক থেকে এএফপি জানিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে এই অংশীদারিত্ব অনুমোদন করেন, যার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী এক আলোচনার অবসান ঘটে। এই আলোচনা শুরু হয় ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে, যখন ইউএস স্টিল ও নিপ্পন স্টিল ১৪.৯ বিলিয়ন ডলারের একীভূতকরণ পরিকল্পনা ঘোষণা করে।
নিপ্পনের ইউএস স্টিল অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার শেষ সময়ে জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে আটকে দেন। ট্রাম্প শুরুতে নিপ্পনের অধিগ্রহণ পরিকল্পনার বিরোধিতা করেন এবং ইউএস স্টিলকে দেশীয় মালিকানায় রাখার আহ্বান জানান। তবে মে মাসে তিনি ‘অংশীদারিত্ব’ মডেলের পক্ষে অবস্থান নেন।
এক যৌথ বিবৃতিতে ইউএস স্টিল ও নিপ্পন স্টিল জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাদের ঐতিহাসিক অংশীদারিত্বকে অনুমোদন করেছেন। যা যুক্তরাষ্ট্রে ইস্পাত উৎপাদনে অভূতপূর্ব বিনিয়োগ আনার পাশপাশি ১ লক্ষেরও বেশি চাকরি সৃষ্টি ও সংরক্ষণ করবে।
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের পাশাপাশি, কোম্পানিগুলো যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে একটি ন্যাশনাল সিকিউরিটি এগ্রিমেন্ট (এনএসএ) স্বাক্ষর করেছে। যেখানে ২০২৮ সালের মধ্যে প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলারের নতুন বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি রয়েছে।
ট্রাম্পের আদেশে এনএসএ’র চুক্তির বিষয়টি বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়নি। তবে তিনি জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় প্রয়োজনে আরও নির্দেশ জারির ক্ষমতা সংরক্ষণ করেছেন।
এই ঘোষণা আসে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের "কমিটি অন ফরেন ইনভেস্টমেন্ট ইন দ্য ইউনাইটেড স্টেটসের (সিএফআইইউএস) পর্যালোচনার পর। সিএফআইইউএস বিদেশি মালিকানাধীন কোম্পানির দ্বারা মার্কিন কোম্পানি অধিগ্রহণের জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে থাকে।
শনিবার, বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লাটনিক চিরস্থায়ী গোল্ডেন শেয়ারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। যা যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে যেকোনো সিদ্ধান্ত আটকে দেওয়ার অধিকার দেয়।
তিনি শেয়ারটির নির্দিষ্ট আর্থিক মূল্য প্রকাশ না করলেও বলেন, এতে এমন সব শক্তিশালী শর্ত রয়েছে যা সরাসরি আমেরিকা, পেনসিলভানিয়া, ইউএস স্টিলের শ্রমিক এবং মার্কিন নির্মাতাদের রক্ষা ও উপকারে আসবে।
তিনি উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ করেন, ইউএস স্টিলের সদর দপ্তর সরানো, কোম্পানিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে নিয়ে যাওয়া, এর নাম পরিবর্তন বা চাকরি দেশের বাইরে স্থানান্তর করার মতো যেকোনো পদক্ষেপের জন্য সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
আমার বার্তা/এল/এমই