ই-পেপার সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

রোববার শুরু টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন, এ টিকা নিরাপদ

আমার বার্তা অনলাইন:
০৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:১৬
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন নিয়ে সংবাদ সম্মেলন

টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন আগামী রোববার (১২ অক্টোবর) থেকে শুরু হচ্ছে। এক মাসব্যাপী এ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ৯ মাস থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত প্রায় ৫ কোটি শিশু-কিশোরকে এই টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী) অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫’ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ সহকারী এ কথা জানান। কার্যকর ও নিরাপদ হওয়ায় নির্দ্বিধায় সবাইকে টিকা নেওয়া আহ্বান জানান বিশেষ সহকারী।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৪৬ বছর ধরে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) চলছে। বিভিন্ন সংক্রামক রোগজনিত মৃত্যু ও পঙ্গুত্বের হার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে সারাদেশে টিকাদান কর্মসূচি সফলভাবে চলছে। টিকাদান কর্মসূচির ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশ একটি ভালো উদাহরণ হিসেবে সব সময় পরিগণিত হয়। টিকাদান কর্মসূচিতে বাংলাদেশ সর্বশেষ সংযোজন করতে যাচ্ছে টাইফয়েডের বিরুদ্ধে একটি টিকা (টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন)। টাইফয়েডের বিরুদ্ধে বেশ কিছু টিকা আছে। এই টিকা সবচেয়ে বেশি কার্যকর ও নিরাপদ।

আগামী ১২ অক্টোবর থেকে সারাদেশে প্রায় ৫ কোটি শিশু-কিশোরের মধ্যে এই টিকাদান কর্মসূচি শুরু করা হচ্ছে। আগামী একমাস ধরে এই টিকাদান কর্মসূচি চলবে।

এই টিকা ৯ মাস বয়স থেকে ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত সব শিশু-কিশোরকে দেওয়া হবে জানিয়ে বিশেষ সহকারী বলেন, নবম শ্রেণি পর্যন্ত যারা থাকবে তাদের এই টিকা দেওয়া হবে। বিনামূল্যে এই টিকা দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যাচাই করা (প্রি-কোয়ালিফাইড) টিকা। বাংলাদেশ সরকার কখনোই নিরাপত্তার বিষয় নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সাধারণত কর্মসূচিতে কোনো ভ্যাকসিন অন্তর্ভুক্ত করে না। অতএব আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে এ টিকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এটার মান সম্পর্কিত বিষয় নিশ্চিত করা হয়েছে। এরপর এটা আমাদের জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

>> যে কারণে এ ক্যাম্পেইন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, চার বছর আগের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের যে শিশু মৃত্যু তার দুই-তৃতীয়াংশ টাইফয়েডের কারণে হয়েছে। আমরা আশা করি যদি টাইফয়েড প্রতিরোধ করা যায়, এটা শুধু শিশু মৃত্যু রোধই করবে না সামগ্রিকভাবে সব জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিশাল পরিমাণ টাইফয়েডজনিত রোগের যে বোঝা সেটি কমাবে।

তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে টাইফয়েড রোগের চিকিৎসায় সাধারণত অনেকগুলো অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়; যেগুলো পর্যায়ক্রমে তার কার্যকারিতা হারাচ্ছে। এই টিকার মাধ্যমে যদি টাইফয়েড রোগীর সংখ্যা কমে, ফলে এর প্রতিরোধে জীবাণুর উদ্ভব অনেক বেশি ধীর হবে। অ্যান্টিবায়োটিকগুলো তাদের কার্যকারিতা সংরক্ষণ করতে পারবে। অন্যান্য রোগেও ব্যবহারের উপযোগিতা থাকবে তখন।

সায়েদুর রহমান বলেন, এই টিকা ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে টাইফয়েড মুক্ত করা, টাইফয়েড রোগের বোঝা কমানো এবং অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স কমানো, সব মিলিয়ে মানুষের উৎপাদন সক্ষমতা সু-স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এ টিকা মাইল ফলক হবে।

এরই মধ্যে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশের বেশি মানুষ এই টিকা নিতে অনলাইনে নিবন্ধন করেছে। ম্যানুয়ালিও ১৫ শতাংশ মানুষ নিবন্ধন করেছে। আমরা আহ্বান জানাই বাকিরাও যাতে এভাবে রেজিস্ট্রেশনটা সেরে নেন।

>> জন্ম সনদ ছাড়াও নিবন্ধন করা যাবে

এই টিকা নিতে নিবন্ধনের ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক নয় বলেও জানান বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, এটা এড়িয়েও ম্যানুয়ালি রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব।

টাইফয়েডের টিকা নিতে এরই মধ্যে ১ কোটি ৬৮ লাখ অনলাইনে নিবন্ধন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ম্যানুয়ালি মিলিয়ে অর্ধেকের কাছাকাছি নিবন্ধন হয়েছে। স্কুল খুললে আরও দ্রুত নিবন্ধন হবে।

প্রথমে স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকা কেন্দ্রগুলোতে টিকা দেওয়া হবে। পরবর্তীতে ঘরে ঘরে গিয়ে টিকা দেওয়া হবে বলেও জানান সায়েদুর রহমান। তিনি আরও বলেন, এই টিকাদান প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত কোনো ব্যক্তি সার্ভিস চার্জ বা অন্য কোনো নামে কোনো টাকা আদায় করতে পারবে না।

>> পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মোকাবিলায় রয়েছে প্রস্তুতি

সায়েদুর রহমান বলেন, সারা বিশ্বব্যাপী এই টিকা বিরূপ প্রতিক্রিয়া ছাড়াই শিশুরা গ্রহণ করছে। পাকিস্তান, নেপাল ও বিভিন্ন দেশে এই টিকা দেওয়া হচ্ছে। টিসিভি টিকা দেওয়ার পর সামান্য প্রতিক্রিয়া, যেমন- টিকা দেওয়ার স্থানে চামড়া লাল হওয়া, ফুলে যাওয়া, সামান্য ব্যথা, অল্প জ্বর, মাথা ব্যথা, ক্লান্তি ভাব, এবং মাংসপেশিতে ব্যথা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে; যেগুলি এমনিতেই ভালো হয়ে যায়।

তিনি বলেন, টিকাদান পরবর্তী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মোকাবিলায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে একটি কিট সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়াও যদি কোনো ঘটনা ঘটে সেজন্য আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এ সংক্রান্ত কমিটিতে যারা আছেন তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আমরা আশঙ্কা করি না, কোনো বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে।

সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির উপ-পরিচালক মো. শাহরিয়ার সাজ্জাদ জানান, টাইফয়েডের এ টিকা ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি, কিন্তু কারিগরি সহযোগিতা করেছে ইংল্যান্ডের গ্লাক্সো স্মিথক্লাইন। সরকারের যে রুটিন টিকাদান কর্মসূচি, এর ৩০ শতাংশ টিকা সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে আসে। এখন পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে আরও ১০৯টি দেশে সরবরাহ করা হয়।

>> সরকারের কোনো খরচ নেই

এ টিকাদান কর্মসূচি খরচের বিষয়ে জানতে চাইলে ইপিআই উপ-পরিচালক বলেন, এ টিকাদান কর্মসূচিতে সরকারের কোনো খরচ হচ্ছে না। টিকা ও প্রচারণাসহ সব পুরো খরচ দিচ্ছে ‌‘গ্যাভি, দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স’।

তিনি বলেন, এবার সবাইকে দেওয়ার জন্য টিকা আমাদের কাছে মজুত আছে। ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বা নবম শ্রেণি পর্যন্ত সংখ্যা নির্ধারণ করে এই পরিমাণ টিকার মজুত আমাদের কাছে আছে।

স্বাস্থ্য সহকারীদের আন্দোলনের বিষয় সায়েদুর রহমান বলেন, আমরা মনে করি না তারা এতটা ইনসেন্সিবল হবেন। টিকাদান কর্মসূচিকে ঝুঁকিগ্রস্ত করে, ৫ কোটি শিশুকে টাইফয়েড রোগের মুখে ফেলে তারা দাবি আদায় করবেন। এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটবে বলে আমরা মনে করি না। তাদের সঙ্গে যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে সেটা আমরা বিশ্বাস করতে চাই।

পথ শিশুরা যাতে এই টিকাদান কর্মসূচি থেকে বাদ না যায় এজন্য এনজিও ব্যুরোতে মিটিং চলছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

বিশেষ সহকারী আরও বলেন, ভ্যাকসিনটা আবিষ্কারের পর ৬ বছর পার হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়া যায়নি যে, একবার দেওয়ার পর কতদিন পর আবার এই টিকা দিতে হবে, দিলে কত বছরের জন্য প্রটেকশন থাকবে। এখন পর্যন্ত যেটুকু তথ্য-প্রমাণ আছে সেই অনুযায়ী একবার দেওয়ার পর তিন থেকে সাত বছরের মতো একটা সময়কাল প্রোটেক্টেড থাকে বলে ধারণা করি। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আরও তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে বুঝতে পারবো যে চার বা পাঁচ বছর পর এটি আবার দিতে হবে কি না।

আমার বার্তা/এমই

দেশে ডেঙ্গুজ্বরে আরও ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৫১৬ জন

শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত (একদিনে) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দুই জনের মৃত্যু

ডেঙ্গুতে মৃত্যুশূন্য দিনে হাসপাতালে ভর্তি ৪৮৬

শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত (একদিনে) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন

শীতের সাথে সাথে নেত্রকোনায় বাড়ছে শিশু রোগীর সংখ্যা

নেত্রকোনায় শীত বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে জেলা সদর হাসপাতাল

আন্দোলনকারী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কাজে ফেরার নির্দেশ

মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতিতে সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে– এ অভিযোগ তুলে আন্দোলন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নেভাল একাডেমিতে শীতকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত

কয়রায় খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠিত

আমাদেরকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতেই হবে: প্রধান উপদেষ্টা

নির্বাচন-গণভোট সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করলেন সিইসি

যেকোনো মূল্যে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে: তারেক রহমান

চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ায় বরিশালে তোপের মুখে ব্যারিস্টার ফুয়াদ

এনসিপিসহ ৩ দল নিয়ে আত্মপ্রকাশ করলো ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’

বিআইসিএম রিসার্চ সেমিনার-৫০ অনুষ্ঠিত

পেঁয়াজের দামে কারসাজিতে কৃষি কর্মকর্তারা যুক্ত থাকলে ব্যবস্থা

শিক্ষার্থীদের অবরোধ: আলোচনার পরামর্শ পুলিশের, রাজি নয় শিক্ষার্থীরা

পাকিস্তানকে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে বাংলাদেশ

এবার নির্বাচনী দায়িত্বে থাকছেন না বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তারা

দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে আইইউবিএটিতে ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যাল

শুধু পাসের হার বৃদ্ধি যেনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য না হয়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ আটক

‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’ নামে নতুন জোটের ঘোষণা দিলেন নাহিদ

ব্রিসবেনে ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে সিরিজ জয়ের পথে অস্ট্রেলিয়া

গুমের নির্দেশ দিতেন শেখ হাসিনা, বাস্তবায়ন করতেন মেজর তারিক

দেশে ডেঙ্গুজ্বরে আরও ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৫১৬ জন

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অবরোধ করে আন্দোলনে স্বাস্থ্য সহকারীরা