মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরি করছে, এমন অভিযোগ তুলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দেশটির ওপর যে হামলা চালাচ্ছেন, সেটিকে অনেকে তার এক ধরনের রাজনৈতিক কৌশল বা ‘কূটপ্রয়াস’ হিসেবে দেখছেন। ইরানের বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত সরাসরি কোনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তবুও নেতানিয়াহু দাবি করছেন, ইরানকে এখনই থামানো না গেলে তারা খুব শিগগিরই পারমাণবিক বোমা বানিয়ে ফেলতে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের আশঙ্কা তৈরি করাও নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক চালেরই অংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের মতে, এই যুদ্ধ আসলে নেতানিয়াহুর ক্ষমতায় টিকে থাকার এক দীর্ঘমেয়াদি কৌশল বা ধান্দা। তিনি মন্তব্য করেছেন, নেতানিয়াহু বহুদিন ধরেই ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চাচ্ছেন। কারণ, এই যুদ্ধ তাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্ষমতায় টিকে থাকার সুযোগ করে দেয়।
মার্কিন বিশ্লেষণধর্মী অনুষ্ঠান ‘দ্য ডেইলি শো’য় অংশ নিয়ে বিল ক্লিনটন এ মন্তব্য করেন। তিনি এও বলেন, তিনি (নেতানিয়াহু) তো গত ২০ বছরে বেশিরভাগ সময়ই প্রধানমন্ত্রীর পদে ছিলেন। তার বর্তমান আচরণ, নিজেকে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে গড়ে তোলা।
অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সাবেক প্রেসিডেন্ট যুদ্ধ নয় বরং শান্তির আহ্বান জানান। ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে ক্লিনটন বলেন, আমি চাই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই উত্তেজনা প্রশমিত করবেন। বেসামরিক মানুষের ওপর যে লাগাতার হামলা চলছে তিনি সেটি বন্ধের উদ্যোগ নেবেন।
তিনি আরও বলেন, আমার মনে হয়, আমাদের এই সংঘাত প্রশমিত করার চেষ্টা করা উচিৎ। আমি আশা করি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেটাই করবেন।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিশ্বাস করেন না যে ট্রাম্প বা নেতানিয়াহু কেউই পূর্ণমাত্রার একটি আঞ্চলিক যুদ্ধ চান। তিনি বলেন, আমাদের মধ্যপ্রাচ্যের বন্ধুদের বোঝাতে হবে, তাদের পাশে আমরা আছি; প্রয়োজনে তাদের রক্ষা করব। তবে যেসব গোপন যুদ্ধের মূল শিকার হয় নিরীহ মানুষ, যারা রাজনীতি বা সংঘাতে জড়িত নন; সেই পথ কোনো ভালো সমাধান হতে পারে না।
এদিকে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত সরাসরি কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেয়নি। তবে তারা ইসরায়েলকে তেহরান থেকে আসা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে সহায়তা করেছে এবং সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করছে।
আমার বার্তা/এমই