
অজু পবিত্রতার মাধ্যম। শারীরিক পবিত্রতা লাভের জন্য গোসলের পর অজুর স্থান। ‘অজু’ আরবি শব্দ। এর অর্থ পরিচ্ছন্ন, সুন্দর ও স্বচ্ছ। পারিভাষিক অর্থে বিশেষ নিয়মে বিভিন্ন অঙ্গ ধোয়াকে অজু বলা হয়।
অনেকে জানতে চান, লিপজেল, গ্লিসারিন ও লোশন দিয়ে অজু করলে কি অজু শুদ্ধ হবে?
এর উত্তরে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, অজুতে যে অঙ্গগুলো ধোয়া ফরজ, অজু শুদ্ধ হওয়ার জন্য সে অঙ্গগুলোর প্রতিটি অংশে পানি পৌঁছানো আবশ্যক। যদি অজুর অঙ্গে এমন কিছু লেগে থাকে যা চামড়ার ওপর আলাদা আবরণ তৈরি করে এবং চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছতে বাধা দেয়, তাহলে অজু শুদ্ধ হবে না। লিপজেল, লোশন বা গ্লিসারিন ইত্যাদি চামড়ার সঙ্গে মিশে যায় এবং চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছতে বাধা সৃষ্টি করে না। তাই লিপজেল, গ্লিসারিন বা যে কোনো ধরনের লোশন ঠোঁটে লাগানো অবস্থায় অজু করলে অজু শুদ্ধ হবে। ঠোঁটে লিপজেল লাগানো অবস্থায় অজু করার সময় অজু শুদ্ধ হওয়ার জন্য সাধারণভাবে ঠোঁটসহ পুরো চেহারা ধোয়া ও কুলি করাই যথেষ্ট, ভালো করে ধুয়ে লিপজেল দূর করা জরুরি নয়।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, এক সফরে রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের পেছনে রয়ে গিয়েছিলেন। আমরা আসরের নামাজ শুরু করতে দেরি করে ফেলেছিলাম। তিনি যখন আমাদের কাছে পৌঁছলেন, আমরা অজু করছিলাম এবং তাড়াহুড়ার কারণে আমাদের পা মাসেহ করার মতো হালকাভাবে ধুয়ে নিচ্ছিলাম।
তখন রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উচ্চৈঃস্বরে বললেন, পায়ের গোড়ালির জন্য জাহান্নামের শাস্তি রয়েছে। দুবার অথবা তিনবার তিনি এ কথা বললেন। (বুখারি ও মুসলিম)
এ হাদিসে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম তাদেরকে সাবধান করেছেন তারা যেন অজুর অঙ্গগুলো সচেতনতার সঙ্গে ভালোভাবে ধুয়ে নেন, তাহাহুড়োর কারণে কোনো অংশ শুকনো না রেখে দেন।
ওমর (রা.) বলেন, একবার এক ব্যক্তি অজু করে এলে দেখা গেলো তার পায়ের এক নখ পরিমাণ জায়গা শুকনো রয়ে গেছে। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম তাকে বললেন, ফিরে গিয়ে সুন্দরভাবে আবার অজু করুন। ওই ব্যক্তি ফিরে গিয়ে আবার অজু করে তারপর নামাজ আদায় করলো। (মুসলিম)
আমার বার্তা/এল/এমই

