স্বাস্থ্য উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে আরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী (বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক) পুনর্বাসনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ জানুয়ারি) বিকালে বাংলাদেশ সচিবালয়ে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসলে তিনি এই আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পুনর্বাসনে শুরু থেকেই নেতৃত্ব দিচ্ছে। ইতোমধ্যে তারা অনেক রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসন করেছে। আমি যুক্তরাষ্ট্রকে আরও বেশি রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের আহ্বান জানাই।"
চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স জানান, "যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের উন্নয়ন ও পুনর্বাসনে বৃহত্তম দাতা দেশ। ইউএসএইড বাংলাদেশের স্থানীয় এনজিওগুলোর সঙ্গে কাজ করে রোহিঙ্গাদের জীবনমান উন্নয়নে সহযোগিতা করছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১৭ হাজার রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসন করা হয়েছে, যা এখনও চলমান রয়েছে।"
বৈঠকে, দু'দেশের মধ্যে নিরাপত্তা ইস্যু, সন্ত্রাস দমন, রোহিঙ্গা সমস্যা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি, পুলিশ সংস্কার কমিশন, সীমান্ত পরিস্থিতি, সংখ্যালঘু ইস্যু, কৃষি খাতে সহযোগিতা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
উপদেষ্টা চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্সকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্যতম বড় অংশীদার। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে অনেক শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান। সন্ত্রাস দমন ও নিরাপত্তা খাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। তাছাড়া পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে উন্নত প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র প্রদান করে আসছে।" তিনি মানবাধিকার ইস্যুতে পুলিশ এবং মানব পাচার ইস্যুতে বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে আরো বেশি প্রশিক্ষণ প্রদানের অনুরোধ জানান।
চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স বলেন, "আমরা যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ শিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের আগের চেয়ে ৩০% বেশি অনুমতি প্রদান করছি। নিরাপত্তা ও সন্ত্রাস দমন ইস্যুতে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।"
এ সময় সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্সের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, "সীমান্ত পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক রয়েছে। আগামী মাসে ভারতের দিল্লিতে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ে বৈঠক হবে।"
সংখ্যালঘুদের নির্যাতন সংক্রান্ত প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, "বাংলাদেশে কোনো সংখ্যালঘু নির্যাতিত হচ্ছে না। ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচার। সংখ্যালঘু শব্দটা আমরা ব্যবহার করি না। সব নাগরিকের সমান অধিকার রয়েছে।" তিনি বলেন, "৫ আগস্টের পর কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু তা মূলত রাজনৈতিক কারণে, ধর্মীয় কারণে নয়।"
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের রেসিডেন্ট লিগ্যাল অ্যাডভাইজার রাহুল ক্যাল, ল' এনফোর্সমেন্ট অ্যাটাচে মাইকেল ডাবলিউ হিন্টজ, পলিটিক্যাল মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স অফিসার জশ পোপ, অ্যাসিস্ট্যান্ট রিজিয়নাল সিকিউরিটি অফিসার স্টিফেন কোভাকস, এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আমার বার্তা/এমই