দেশজুড়ে সড়ক নিরাপত্তা ও সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে নবমবারের মতো বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ২০২৫।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এ দিবসটি সাড়ম্বরে পালিত হয়।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ছিল– ‘মানসম্মত হেলমেট ও নিরাপদ গতি, কমবে জীবন ও সম্পদের ক্ষতি।’
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি রোধ ও জনগণের সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যেই ২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর দিবসটি পালিত হচ্ছে। সমীক্ষায় দেখা যায়, ২০১৪ থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ৬৭ হাজার ৮৯০টি দুর্ঘটনায় ১ লাখ ১৬ হাজার ৭২৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন আরও অনেক। দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে চালকদের অদক্ষতা, বেপরোয়া গতি এবং পথচারী ও যাত্রীদের অসচেতনতা।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ১০টায় হাতিরঝিল থেকে সড়ক ভবন পর্যন্ত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। শোভাযাত্রা শেষে বেলা ১১টায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অডিটরিয়ামে আলোচনা সভা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী।
আলোচনা সভায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা, এনজিও, সুশীল সমাজ, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
দিবস উপলক্ষে রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে সড়ক ভবন, জাহাঙ্গীর গেইট থেকে ফার্মগেট, মহাখালী থেকে কাকলী এবং তেজগাঁও সাতরাস্তা পর্যন্ত সড়কের দ্বীপগুলো ব্যানার ও আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ বাস টার্মিনালে জনসচেতনতামূলক লিফলেট, পোস্টার ও স্টিকার বিতরণ করা হয়।
এছাড়া, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে প্রচার এবং বিটিআরসির মাধ্যমে মোবাইল ফোনে এসএমএস প্রচারণা চালানো হয়।
অনুষ্ঠানে বিআরটিএ কর্তৃক নির্বাচিত ১৬ জন দক্ষ চালককে ‘সেরা চালক’ সনদপত্র দেওয়া হয়। দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় মোটরসাইকেল চালকদের মধ্যে ২৮টি মানসম্মত হেলমেট বিতরণ করা হয়। জেলা পর্যায়ে ১০ হাজার হেলমেট বিতরণ কর্মসূচি চলছে।
দিবসের পরবর্তী এক মাসে ঢাকায় ১০টি ও জেলা পর্যায়ে ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সড়ক নিরাপত্তা সচেতনতা কর্মসূচি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পেশাজীবী চালকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার এক সপ্তাহব্যাপী ক্যাম্প আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
দিবসের সার্বিক সমন্বয়ে ছিল সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। বাস্তবায়নে সহায়তা করেছে বিআরটিএ, সওজ, ডিএমপি, বিআরটিসি, ডিটিসিএ, ব্র্যাক, আহছানিয়া মিশন ও নিরাপদ সড়ক চাইসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।
আমার বার্তা/এমই