
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোটের ঘোষণা সরকার থেকে এলেও এ নিয়ে অধ্যাদেশ (আইন) হওয়ার পর করণীয় বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) ইসির ধারাবাহিক নির্বাচনি সংলাপের চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় পর্বের সমাপনী বক্তব্যে গণভোটের বিষয়ে রাজনীতিবিদরা বারবার জানতে চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিত তুলে ধরে তিনি এ কথা জানান।
সিইসির সভাপতিত্বে সংলাপে অন্য চার নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিএনপিসহ ছয়টি দলের সঙ্গে এ পর্বে সংলাপ করে ইসি। এ নিয়ে চার দিনে ৪৮টি দলের সঙ্গে মতবিনিময় করা হল।
সংলাপের বিকালের পর্বে সমাপনী বক্তব্যে সিইসি বলেন, ‘ওই (গণভোট অধ্যাদেশ) আইনটা হলে তখন আমার একটা দায়বদ্ধতা আসবে এ ব্যাপারে বক্তব্য দেওয়ার। আমি তো এখনো এ ব্যাপারে বক্তব্য দিতে পারি না। কিন্তু রাজনীতিবিদরা অনেক জিজ্ঞাসা করছেন- কীভাবে করবেন। কীভাবে এগুলোর জবাব দেবে, কতটা বাক্স করবেন। এগুলোর সব চিন্তা, এক্সারসাইজ শুরু করব আমরা ওই আইনটা হওয়ার পরে।’
সহাস্যে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘কিছু মনে করবেন না, রাজনীতিবিদদের টাইম মেনটেইন করানো মুশকিল। আপনাদের কাজই তো বক্তব্য দেওয়া।’
৭৩ বছর বয়সি সিইসি সৌভাগ্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘বয়স হওয়ার পর থেকে এ দেশের রাজনীতিবিদদের দেখে আসছি। ছাত্রাবস্থায় মান্না ভাইকে পেয়েছিলাম নেতা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে, স্যারের (মঈন খান) সঙ্গে তো চাকরিই করেছি। রাজনীতিবিদদের সঙ্গে ডিল করতে করতে এবং এ দেশের ইলেকশন দেখতে দেখতে, পাকিস্তান আমল থেকে দেখে আসছি বেসিক ডেমোক্রেসি থেকে সব কিছু।’
সিইসি বলেন, ‘ইলেকশন নিয়ে আমাদের কম অভিজ্ঞতা হয়নি। যথেষ্ট অভিজ্ঞতা হয়েছে। শুধু আমাদের উচিত হবে এদেশের আর্থ সামাজিক, রাজনৈতিক, সামাজিক বাস্তবতাটা মেনে নিয়েই চিন্তাভাবনা করা।’
তিনি বলেন, ‘আমি আর খোলাসা করে বলতে চাই না। এগুলোর হিটওয়েব আমি ফিল করি এখানে বসে। রাজনৈতিক বাস্তবতার হিটওয়েবটা আমাকে ফিল করতে হয়। কারণ, এটা খুব মসৃণ বাস্তবতা নয় এবং সামাজিক বাস্তবতাও সেরকম। এগুলো বিবেচনায় নিয়েই আমাদেরকে আগাতে হচ্ছে।’
রাজনীতিবিদদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘কোনো নির্বাচন কমিশনের পক্ষে, এমনকি আপনাদেরও যদি এখানে বসিয়ে দিই, এগুলোকে ইগনোর করে যাওয়া সম্ভব নয়। বাস্তবতা যেটা আছে সেটা বিবেচনায় নিয়ে স্মার্টলি ইউ হ্যাভ টু ট্রাই টু ওভার কাম দ্য চ্যালেঞ্জেস। একদম ইগনোর করে যাওয়া সম্ভব না বাস্তবতাটা।’
তিনি জানান, ‘সবদিক থেকে বাস্তবতা আছে। সামাজিক বাস্তবতা। সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে আমরা সেই স্লো অ্যান্ড স্টেডি ওয়েতে, কম কথায় কাজ বেশি, কথা কম কাজ বেশি সেইভাবে এগিয়ে যাচ্ছি। এ পযন্ত ইনশাআল্লাহ সাকসেসফুলি আগাতে পেরেছি।’
সিইসি বলেন, ‘গণভোটের কথা এসেছে। রেফারেন্ডামটা-কীভাবে ভোট করব। আগে আইনটা তো হতে হবে। রেফারেন্ডামের একটা ল’- ওখানে বলা আছে, ঘোষণার মধ্যে, অর্ডারের মধ্যে একটা আইন হবে। রেফারেন্ডাম যেটা ইলেকশন কমিশনকে অথরাইজড করবে। প্রেসক্রাইব করে দেবে-কী বিষয়ে গণভোট হবে, কীভাবে হবে ইত্যাদি।’
এদিন দুপুর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি– বিজেপি, গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি), বাসদ মার্কসবাদীর সঙ্গে সংলাপ করে নির্বাচন কমিশন।
আমার বার্তা/এমই

