ই-পেপার শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২

রাষ্ট্র ও সমাজ সংস্কার করার আগে নিজেকে সংস্কার করুন

সাদিয়া সুলতানা রিমি
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৪৭
আপডেট  : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৫০

রাষ্ট্র, সমাজ ও ব্যক্তি—এই তিনটি পরস্পর জড়িত উপাদান আমাদের জীবনকে পরিচালিত করে। সমাজ গঠিত হয় ব্যক্তির সমষ্টিতে, আর রাষ্ট্র গঠিত হয় সমাজের ভিত্তিতে। তাই যদি আমরা সমাজ ও রাষ্ট্রে পরিবর্তন আনতে চাই, তাহলে প্রথমেই আমাদের নিজেদের মধ্যে পরিবর্তন আনতে হবে। কারণ ব্যক্তি যখন সঠিক পথে চলে, তখন সমাজ সুশৃঙ্খল হয়, আর সমাজ যখন সুশৃঙ্খল হয়, তখন রাষ্ট্র শক্তিশালী হয়। তাই সমাজ ও রাষ্ট্র সংস্কারের আগে নিজেকে সংস্কার করা অপরিহার্য।

নিজেকে সংস্কারের গুরুত্ব

নিজেকে পরিবর্তন করা বা উন্নত করা মানে হলো নিজের চিন্তা, নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও আচরণকে ইতিবাচকভাবে গড়ে তোলা। যদি আমরা নিজেদের চরিত্র গঠনে ব্যর্থ হই, তবে সমাজে কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে না।

১. নৈতিকতা ও মূল্যবোধের উন্নয়ন

নৈতিকতা মানুষের চরিত্র গঠনের ভিত্তি। একজন নীতিহীন ব্যক্তি সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। যদি আমরা সততা, ন্যায়পরায়ণতা ও মানবিক গুণাবলী অর্জন করি, তাহলে সমাজে শান্তি ও সুবিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।

২. আত্মউন্নয়ন ও জ্ঞানের বিকাশ

নিজেকে সংস্কার করতে হলে শিক্ষা ও জ্ঞানের বিকাশ জরুরি। সুশিক্ষিত ব্যক্তি কখনোই অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। তাই সমাজ ও রাষ্ট্রকে পরিবর্তন করতে হলে নিজেদের শিক্ষিত ও সচেতন করা প্রয়োজন।

৩. দায়িত্বশীলতা ও সচেতনতা

আমরা যদি নিজেদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন না হই, তবে রাষ্ট্র বা সমাজে পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। একজন সৎ ও দায়িত্ববান নাগরিকই সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।

সমাজ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা ও ব্যক্তির ভূমিকা

সমাজ হচ্ছে মানুষের মিলিত রূপ। যদি সমাজের সদস্যরা সঠিক পথে চলে, তবে সমাজও সঠিকভাবে পরিচালিত হবে। সমাজ সংস্কারের জন্য ব্যক্তির দায়িত্ব হলো—

১. অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া

নিজের মধ্যে নৈতিকতা ও সততা প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো জরুরি।

২. সামাজিক দায়িত্ব পালন করা

সমাজের উন্নতির জন্য দরিদ্রদের সহায়তা করা, দুর্নীতি ও অপরাধের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করা, শিক্ষা বিস্তারে ভূমিকা রাখা ইত্যাদি দায়িত্ব ব্যক্তির ওপর বর্তায়।

৩. সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ সংরক্ষণ

একটি সুসংগঠিত সমাজ গঠনের জন্য নৈতিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ ধরে রাখা প্রয়োজন। ব্যক্তি যদি তার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষা করে চলে, তাহলে সমাজও সমৃদ্ধ হবে।

রাষ্ট্র সংস্কার ও ব্যক্তির ভূমিকা

রাষ্ট্র পরিচালিত হয় সমাজের মানুষদের দ্বারা। যদি সমাজে দুর্নীতি, অবিচার ও অনৈতিকতা বাসা বাঁধে, তাহলে রাষ্ট্রও অস্থির হয়ে পড়ে। তাই রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ব্যক্তি ও সমাজকে আগে পরিবর্তন করতে হবে।

১. সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব গঠন

রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যদি সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিরা নির্বাচিত হয়, তাহলে রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে। কিন্তু এই নেতৃত্ব সমাজ থেকেই উঠে আসে। তাই আগে নিজেদের সৎ ও যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

২. আইন ও শৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া

রাষ্ট্রের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তাই প্রত্যেক নাগরিককে অবশ্যই আইন মেনে চলতে হবে এবং অন্যদেরও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

৩. দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরোধিতা করা

দুর্নীতি রাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে বড় বাধা। একজন ব্যক্তি যদি নিজের অবস্থান থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে, তবে রাষ্ট্রও দুর্নীতিমুক্ত হতে পারে।

নিজেকে সংস্কারের উপায়

নিজেকে পরিবর্তন করা সহজ নয়, তবে অসম্ভবও নয়। নিচে কিছু উপায় দেওয়া হলো, যা ব্যক্তি হিসেবে আমাদের উন্নত করতে পারে—

১. আত্মবিশ্লেষণ করা

প্রতিদিন নিজের কাজ ও আচরণ পর্যালোচনা করা উচিত। এতে ভুলগুলো চিহ্নিত করে সংশোধন করা সহজ হয়।

২. ধৈর্য ও সংযম অনুশীলন করা

অনেক সময় আমাদের মধ্যে তাড়াহুড়ো ও অসংযমী মনোভাব থাকে, যা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। তাই ধৈর্য ও সংযমের চর্চা করা জরুরি।

৩. সদাচার ও সততার চর্চা করা

সততা ও ন্যায়ের পথে চলার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এতে ব্যক্তি নিজেও সম্মানিত হবে এবং সমাজও উপকৃত হবে।

৪. জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি করা

একজন শিক্ষিত ও দক্ষ ব্যক্তি সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য সম্পদস্বরূপ। তাই নিজেদের জ্ঞান ও দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

রাষ্ট্র ও সমাজ সংস্কারের জন্য প্রথমেই আমাদের নিজেদের পরিবর্তন করতে হবে। যদি আমরা নিজেদের উন্নত করতে পারি, তাহলে সমাজ ও রাষ্ট্রও স্বয়ংক্রিয়ভাবে উন্নত হবে। তাই পরিবর্তন শুরু হোক নিজেকে দিয়ে, কারণ ব্যক্তিই সমাজের ভিত্তি এবং সমাজই রাষ্ট্রের মূল চালিকা শক্তি। ব্যক্তির আত্মশুদ্ধি ও নৈতিক উন্নয়নই একটি উন্নত রাষ্ট্র ও সমাজের নিশ্চয়তা দিতে পারে।

লেখক : শিক্ষার্থী, গণিত বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা ।

আমার বার্তা/জেএইচ

বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের ঝুঁকি ও সুযোগ

নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষ করে সৌর ও বায়ুশক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে।

জুড়ীর সাহিত্য সাংবাদিকতা : প্রাচীনকাল থেকে বিজ্ঞান যুগ

পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে নেমে আাসা জুড়ী নদীকে কেন্দ্র করে জুড়ী জনপদ গঠিত হয়েছে।

রোহিঙ্গা-রাখাইন সহবস্থান নিশ্চিতে আরাকান আর্মিকে উদ্যোগী হতে হবে

বর্তমানে বাংলাদেশ- মিয়ানমার সীমান্ত আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে এবং রাখাইন রাজ্যে তাদের আধিপত্য সুদৃঢ় করতে আরাকান

বাংলাদেশে পরিবেশ দূষণের প্রধান কারণ বায়ুদূষণ

বাংলাদেশে পরিবেশ দূষণের প্রধান কারণ হচ্ছে বায়ুদূষণ, শব্দ দূষণ ও নদী দুষণ ।বায়ু দুষণের-জন্য আমাদের-রাজধানী
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এক বছর পর মনে পড়ল— শহীদ পরিবারের প্রশ্ন

আপনারা আগামী লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হোন: জামায়াত আমির

মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স ও এয়ারবাসের ‘ঐতিহাসিক’ চুক্তি ঘোষণা

বিগত ১১ মাসে ৫ হাজার নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি

আমবাজারকে ঘিরে যেসব ব্যাংক খোলা আজ

১৪ ১৮ ২৪ মার্কা যেনতেন নির্বাচন মেনে নেওয়া হবে না: শফিকুর রহমান

টেক্সাসে আকস্মিক বন্যায় ১৩ জনের প্রাণহানি, ২৩ শিশু নিখোঁজ

প্রাথমিকের ৩১ লাখ শিক্ষার্থীর ‘মিড ডে মিল’ পেতে অপেক্ষা বাড়লো

গজারিয়ায় কৃষক দল শাখাকে গতিশীল করতে সাংগঠনিক মত বিনিময় সভা

মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার ৩ জন দেশে ফি‌রেছেন: আসিফ নজরুল

গাজায় ইসরাইলি হামলায় আরও ১৩৮ ফিলিস্তিনির মৃত্যু

০৫ জুলাই ঘটে যাওয়া নানান ঘটনা

ইনস্টাগ্রামে অপরিচিতদের পাঠানো বার্তা বন্ধ করবেন যেভাবে

রাজধানীতে চলছে শান্তিবাড়ির জামদানি প্রদর্শনী

চীনে ৩ লাখ বছরের পুরোনো কাঠের সরঞ্জাম আবিষ্কৃত হয়েছে

দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাচ্ছে বাগেরহাটের ৭শ’ অসহায় মানুষ

বর্তমান অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন কল্পনাও করা যায় না: জামায়াত আমির

শরীয়তপুরে পুনর্বাসনের অনিশ্চয়তায় রয়েছে পদ্মা তীরের আড়াই শতাধিক পরিবার

রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি পালনের সময় পুলিশের বাঁধা

পুলিশের বিশেষ অভিযানে সারা দেশে গ্রেপ্তার ১৪৮৭ জন