ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, আওয়ামী লীগের বিচারের আগে কোনভাবে তাদের পুনর্বাসনের কোন ষড়যন্ত্র করলে শহীদের কাফেলা, শহীদের তামান্না নিয়ে যে লক্ষ লক্ষ যুবকরা আছে তারা কেউ মেনে নিবে না।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রশিবিরের সদস্য সম্মেলন ২০২৪ এর বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলন, আমরা এখনো সংকটের মধ্যে আছি। আওয়ামী লীগ মানে আওয়ামী লীগ না, আওয়ামী লীগ মানে উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদ। আওয়ামী লীগ মানে বিজেপি উগ্র হিন্দুত্ববাদ।
অতীতে আমরা দেখেছি, বিচারের বাণী নিভৃতে কাদে উল্লেখ করে বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, কিন্তু আমরা আর চাই না। আমরা বিচার চাই কিন্তু দেখছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় যারা শেখ হাসিনা কে পালিয়ে যেতে দিয়েছে, এই কিলার, গুম, খুন হত্যার মাস্টারমাইন্ড কে পালিয়ে যেতে দিয়েছে তারাই এখন সরকারে। ৬২৬ জন ক্যান্টনমেন্টে পালিয়েছিল, তাদের নিরাপদে পালিয়ে যেতে দেয়া হয়েছে তারা এই সরকারের ভিতরে আছে।
ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘৃণা স্তম্ভ তৈরি করা হয়েছিলো সে ঘৃণা স্তম্ভ মুছে দেয়া হচ্ছে। কারা করছে এইগুলো, তারাই করছে যারা শহীদদের বিচারকে বাধাগ্রস্ত করছে। কিলার মাস্টারমাইন্ড যারা ছিলেন তাদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় বদলি করা হচ্ছে। শেখ হাসিনার আমলের ঘনিষ্ঠ মাস্টারমাইন্ডরা এখনো প্রশাসনে আছে। তাদের কয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে? অথচ নির্বাচন কমিশন বলছে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না, তাদের নির্বাচনে আসতে বাধা নেই।
তিনি বলেন, মিথ্যার পরাজয় হয়েছে। আমরা শেখ হাসিনার দাম্ভিকতা দেখেছি। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বক্তব্য দিয়ে তাকে আহ্বান করেছিলাম যে, ফেরাউন-নমরুদের পতন হয়েছে। আপনি জুলুম করছেন, অত্যাচার করছেন, লুটপাট করছেন, মানুষের অধিকার কেড়ে নিচ্ছেন। আপনারও পতন হবে, আপনি সাবধান হয়ে যান। কিন্তু তিনি সাবধান হননি। ফলশ্রুতিতে তাকে বাংলাদেশ থেকে ছাত্র জনতার প্রতিবাদ এবং রক্ত ও জীবনের প্রতিবাদের মুখে পালাতে হয়েছে। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা এখন চোখে সরিষা ফুল দেখছে। তারা এখন কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছে না।
ছাত্র অধিকার পরিষদের সাথে ছাত্রশিবিরের সম্পর্ক খুবই গভীর উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এক সময় ছাত্রলীগ বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজগুলোতে শিক্ষার্থীদের ছাত্রশিবির ট্যাগ দিয়ে পিটিয়েছে। এমনকি ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের পিটিয়ে তারা পুলিশের কাছে দিয়ে আসতো। তখন প্রতিবাদের ভাষা আমরা জাগিয়ে রেখেছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে সংকটকালীন সময়ে আমরা বক্তব্য দিয়েছি যে, একজন শিক্ষার্থী কোন দল করবে সেটি তার বিষয়। এছাড়া ছাত্রলীগ ডাকসুতে একটি আইন করতে চেয়েছিল। তারা চেয়েছে ক্যাম্পাসে ইসলামী ভাবধারার কোন সংগঠন চলবে না। আমাদেরকে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল যেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের রাজনীতি না চলে। কিন্তু আমরা তাতে সায় দেইনি। বিশ্ববিদ্যালয় যদি বাম ও সেক্যুলারিজমের চর্চা হতে পারে তাহলে কেন ইসলামী আন্দোলন বা ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা চর্চা হতে পারবেনা? জাতীয় নির্বাচনের আগে বুয়েটের ২৪ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেজন্য আমরা তখন কর্মসূচি পালন করেছিলাম। তার অপরাধে আমাকে গ্রেফতার করে অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছে। রিমান্ডে আমাকে বলা হয়েছে, ‘তারা শিবির করত তুই জানিস না’? উত্তরে আমি বলেছিলাম, সবার আগে পরিচয় হচ্ছে আমরা সবাই শিক্ষার্থী।
আমার বার্তা/জেএইচ