* চলছে বদলি, আর্থিক সুবিধা আদায় এবং রাজনৈতিক রং লাগানোর পাঁয়তারা
রাজনৈতিক পটপরিবর্তন তথা ছাত্র-জনতার অভুত্থানের পর অন্যান্য সংস্থার মতো রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে অনেকেই দ্রুত লেবাস পাল্টে নিয়েছেন। এ এয়ারলাইন্সের নিম্ন পদ থেকে শুরু করে ঊর্ধ্বতন পদের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ তালিকায় রয়েছেন। তারা শুধুমাত্র লেবাস পাল্টেই ক্ষান্ত হননি। এবার ভাল পজিশন বা চেয়ার দখলে নিতে ভেতরে দেখিয়ে যাচ্ছেন বিপক্ষ এবং সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জুজুর ভয়। আর এর মাধ্যমে চলছে বদলি, আর্থিক সুবিধা আদায় এবং রাজনৈতিক রং লাগানোর পাঁয়তারা।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান, তাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে, সাবেক সরকারের দালাল তালিকায় ফেলা হবে। যোগ্যতা থাকার পরও যেন উপযুক্ত পদে না রাখা হয়। বর্তমানে অসহায় হয়ে পড়া এই কর্মকর্তারা নিজেদের দায়িত্বে মনোযোগ দিতে পারছেন না। ফলে ব্যাহত হচ্ছে বাংলাদেশ বিমানের এই জনগুরুত্বপূর্ণ সেবা খাত। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ক্রু জানান, তারা একটা অস্থির অবস্থায় রয়েছেন। কখন কার গায়ে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের দালাল তকমা লাগিয়ে সায়েস্তা করা হয়, তা বলা কঠিন। ফলে আপাতত ছুটি নিয়ে বাসায় বসে আছেন তিনি।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অভ্যন্তরে অনেক কর্মকর্তা রয়েছেন যাদের কোনো রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড নেই। তবে ভালো পদে কর্মরত ছিলেন অনেকেই এখনও বর্তমান। বর্তমানে ৫ আগস্টের পূর্বে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরোধিতাকারী কিছু রং পরিবর্তন করা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভোল পাল্টে নিয়েছেন। সেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকেই প্রতিপক্ষ করছেন নিরপেক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। রাজনৈতিক সুবিধা নিয়ে বা আওয়ামী লীগের কোনো নেতার আশীর্বাদ নিয়ে যারা দায়িত্বে বসেননি, তাদের বিরুদ্ধে প্রোপাগাণ্ডা ছড়িয়ে বিতর্কিত করতে নেমেছে একটি চক্র। অনেকে আবার আরও একধাপ এগিয়ে কিছু কথিত সংবাদকর্মীদের দিয়ে কাল্পনিক তথ্য সামনে এনে চাপ প্রয়োগ করাচ্ছেন। তার পেছনে রয়েছে বড় অংকের দাবি-দাওয়া। কেউ সেই দাবি পূরণ করতে ব্যর্থ হলেই দুদকের ভয় এবং চলছে সংবাদ প্রকাশের হুমকি। তাদের শাসানো হচ্ছে যদি দাবি পূরণ না করা হয়, তাহলে সংবাদ প্রকাশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতাদের নজরে আনা হবে, শায়েস্তা করতে। অরাজনৈতিক কর্মকর্তা-কর্মচারী হলেও শুধুমাত্র দক্ষিণবঙ্গে বাড়ি হওয়ার কারণে পতিত সরকারের দালাল তকমা লাগিয়ে করা হচ্ছে হেনস্তা। বিগত সরকারের নিকটজনদের আশীর্বাদপুষ্ট বলে চলছে চাপ প্রয়োগ। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের দালাল ট্যাগ লাগিয়ে চলছে প্রচার প্রচারণা।
বাংলাদেশ বিমানের জিএম (পিআর) বুশরা ইসলামের কাছে এ বিষয়ের সত্যতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের অভ্যন্তরে কিছু ঝামেলা হচ্ছে। তা স্বীকার করলেও, অনৈতিক মোটা অংকের অর্থ দাবি করার বিষয়ে তিনি জানেন না বলে জানিয়েছেন।
আমার বার্তা/এমই