দীর্ঘদিন পর ঢাকায় এসে ১০ বছর আগের স্মৃতিই ফিরিয়ে আনলো সিঙ্গাপুর। ২০১৫ সালে এই স্টেডিয়ামে প্রীতি ম্যাচে বাংলাদেশকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল পূর্ব এশিয়ার দেশটি। এবারও ঘরে ফিরছে একই ব্যবধানের জয় নিয়ে। মঙ্গলবার এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ এই জয়ে সিঙ্গাপুর উঠলো গ্রুপের শীর্ষ আসনে।
সিঙ্গাপুর প্রথমার্ধে এগিয়েছিল ১-০ গোলে। এক পর্যায়ে ব্যবধান ২-০ করে অতিথি দলটি। ৬৮ মিনিটে ব্যবধান কমায় হামজা-শামিতদের দল। বাংলাদেশের গোলটি করেছেন রাকিবুল ইসলাম।
ঘরের মাঠের তিন ম্যাচে চোখ রেখেছিলেন কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরো। শিলংয়ে ভারেতর বিপক্ষে ড্র করার পর বাংলাদেশের স্বপ্ন তৈরি হয়েছিল ৪৫ বছর পর আবার এশিয়ান কাপে খেলার। সেই স্বপ্ন অনেকটাই শেষ হলো সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এই হারে।
এ ম্যাচ ঘিরে উৎসব তৈরি হয়েছিল ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে। গ্যালারিভর্তি দর্শক সমর্থন জুগিয়েছিল বাংলাদেশ দলকে। তবে ফুটবল ঘিরে উৎসবের যে আগুন ছিল তাতে পানি ঠেলে দিয়েছে সিঙ্গাপুর। এ নিয়ে ঢাকায় এসে পরপর দুই ম্যাচে বাংলাদেশকে হারালো সিঙ্গাপুরের ফুটবলাররা।
রক্ষনাত্মক কৌশলে যাওয়ার খেসারত দিলো বাংলাদেশ। প্রথমার্ধেই পিছিয়ে পড়লো গোল খেয়ে। বিরতির ঠিক আগে সিঙ্গাপুর গোল করে লিড নেয় গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে। ৪৫ মিনিটে গোল করেন সংইয়ং।
এ ম্যাচে প্রথম সুযোগও এসেছিল অতিথি দলটির সামনে। ৯ মিনিটে বাম দিক থেকে হারিস স্টুয়ার্টের লম্বা থ্রো থেকে সুযোগ তৈরি হয়েছিল সিঙ্গাপুরের। অরক্ষিত অবস্থায় থাকা উইয়ং সং ঠিকঠাক বলে পা লাগাতে পারেননি। বল চলে যায় বাইরে।
১৬ মিনিটে গোলের সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের সামনে। ডান দিক থেকে শাকিল আহাদ তপুর ক্রসে বল পড়েছিল ছোট বক্সে রাকিবের সামনে। সবাইকে হতাশ করেছেন রাকিব, তিনি বল-পায়ে সংযোগ ঘটাতে না পারলে প্রথম পাওয়া সুযোগ হারায় বাংলাদেশ।
৩০ মিনিটে বাংলাদেশকে নিশ্চিত গোল খাওয়া থেকে বাঁচান গোলরক্ষক মিতুল মারমা। ইকশান ফান্দি একা পেয়েছিলেন গোলরক্ষককে। মিতুল বাম হাতে কোনো মতে বল ক্লিয়ার করেন।
৪৫ মিনিটে গ্যালারি স্তব্ধ করে এগিয়ে যায় সিঙ্গাপুর। ডান দিক থেকে আসা থ্রোয়ের বল মিতুল মারমা একটু এগিয়ে গিয়ে পাঞ্চ করেছিলেন। তবে তিনি তড়িৎ পোস্টে ফিরতে পারেননি। বল আবার গোলমুখে এলে সংইয়ং প্লেসিং করেন পোস্টে। হামজা বল পায়ে লাগালেও ঠেকাতে পারেননি।
৪৮ মিনিটে বাম দিক থেকে রাকিবের ভালো ক্রস ছিল। বক্সে বল পড়ে বদলি ইমনের সামনে। তিনি বলে পা লাগাতে পারেননি। ৫৮ মিনিটে হামি শাহিনের শট মিতুল ফিস্ট করলে বল পেয়ে যান ইকশান ফান্দি। মো. রিদয় ছিলেন বলের কাছেই। তাকে ঘোল খাইয়ে কোনাকুনি শটে বল জালে পাঠন ফন্দি। সিঙ্গাপুর এগিয়ে যায় ২-০ গোলে।
৬৮ মিনিটে হামজার বাড়িয়ে দেওয়া বলে গড়ানো শট নেন রাকিব হোসেন। বল গড়িয়ে গড়িয়ে সিঙ্গাপুরের গোলরক্ষকের পায়ের ফাঁকগলে চলে যায় জালে। বাংলাদেশ ব্যবধান কমিয়ে ২-১ করে।
২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ক্যাবরেরা আক্রমণভাবে শক্তি বাড়িয়েছিল। তাতে আক্রমণে গতি বেড়েছিল, গোলও একটি এসেছে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ব্যবধান কমানোর পর বাংলাদেশ সিঙ্গাপুরের রক্ষণে বারবার হানা দিয়েছে। তবে গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে না পারায় হেরেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে। শেষ মুহূর্তে কর্নার থেকে হেড নিয়েছিলেন শাহরিয়ার ইমন। বল ফিরে আসে ক্রসবারে লেগে। ভাগ্যও বিড়ম্বনা করে বাংলাদেশের সাথে।
ম্যাচটি ড্র করলেও বাংলাদেশের জন্য সুযোগ থাকতো। গ্রুপের অন্য ম্যাচে হংকংয়ের কাছে ভারত হেরে যাওয়ায় এখন সবার ওপরে সিঙ্গাপুর।
আমার বার্তা/এমই