গুম, খুন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।
তারা বলেছে, এই অপরাধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে। গুম কমিশনের তদন্ত স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে পরিচালনা করতে হবে যাতে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো ন্যায়বিচার পায়।
আজ শনিবার ডাকসু পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ডাকসুর সহসভাপতি (ভিপি) আবু সাদিক কায়েম, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এস এম ফরহাদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) মহিউদ্দিন খান।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অন্ধকার সময় ছিল বিগত শাসনামল, যখন রাষ্ট্রীয় আশ্রয়ে গুম, খুন, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। গুম কমিশনের প্রতিবেদনে ইতিমধ্যে ১ হাজার ৮০০-এরও বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে, যার শিকার হয়েছেন সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা।
ডাকসুর বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অসংখ্য শিক্ষার্থী রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারণে আটক, নির্যাতন ও গুমের শিকার হয়েছেন। তাদের অনেকের কোনো খোঁজ এখনও মেলেনি।
এতে আরও বলা হয়, গুম কমিশনের প্রতিবেদনে আরও উদ্বেগজনকভাবে উঠে এসেছে যে গুম-খুন ও মানবতাবিরোধী অপরাধে একটি পার্শ্ববর্তী দেশের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্পৃক্ততা ছিল। এই বিষয়টি বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি এক গভীর হুমকি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং ডিজিএফআইয়ের সাবেক প্রধানসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। এই পদক্ষেপ গুম ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের দীর্ঘ দিনের বেদনা-বিক্ষোভে কিছুটা আশার আলো জাগিয়েছে। কিন্তু এটি যথেষ্ট নয়।
ডাকসুর বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারণে অসংখ্য নাগরিককে জোরপূর্বক গুম করে ফেলা, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো এবং তাদের ‘জঙ্গি’ হিসেবে প্রচার করা ছিল রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের একটি পরিকল্পিত কৌশল।
ডাকসু নেতারা বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, গুম-খুন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের নির্দেশদাতা শেখ হাসিনা ও তার ফ্যাসিবাদী প্রশাসনের সব সদস্যের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেসব কর্মকর্তা এই অপরাধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।
আমার বার্তা/এল/এমই