পটুয়াখালীর আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ‘ফায়ার অন কাফি’স হাউস’ নামে একটি মেসেঞ্জার গ্রুপ খুলে পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ।
সোমবার (১০ মার্চ) বিকেল ৩টায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বরগুনার আমতলী উপজেলার সেকান্দাখালী গ্রামের মো. নসা হাওলাদারের ছেলে মো. শাহাদাত হাওলাদার (২২) ও পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পূর্ব টিয়াখালী গ্রামের মো. হিরন মোল্লার ছেলে মো. মাহফুজ মোল্লা (২১)।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে নুরুজ্জামান কাফির পরিবার ঘুমিয়ে থাকার সময় পরিকল্পিতভাবে তাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তবে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত বেরিয়ে এসে প্রাণে রক্ষা পান। স্থানীয়দের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনার পরদিন নুরুজ্জামান কাফি কলাপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বরিশাল ও পটুয়াখালীতে অভিযান চালিয়ে শাহাদাত ও মাহফুজকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে ঘটনার কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, গ্রেপ্তারকৃত দুইজন নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মী। নুরুজ্জামান কাফির তৈরি করা ভিডিও কনটেন্ট দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে তার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। তারা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঘটনার দিন বরিশাল থেকে এসে ডিজেল কিনে কাফির বাড়িতে আগুন লাগায়। মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে এবং ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কন্টেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফি বলেন, আমার পরিবারকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হয়েছে, এটা কল্পনাও করতে পারছি না। আল্লাহর রহমতে আমরা প্রাণে বেঁচে গেছি, তবে এখনো আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। আমি প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞ যে তারা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু আমি চাই, যারা এর পেছনে জড়িত, তারা সবাই আইনের আওতায় আসুক এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাক।
আমার বার্তা/এমই